Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

প্রয়াত প্রবীণ সিপিআইএম নেতৃত্ব হরেকৃষ্ণ সামন্তর দেহ দান করা হল মেদিনীপুর মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর...অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা তথা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি প্রয়াত হরেকৃষ্ণ সামন্তর দেহ রবিবার দুপুরে দান করা হলো মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।প্র…



নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর...

অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা তথা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি প্রয়াত হরেকৃষ্ণ সামন্তর দেহ রবিবার দুপুরে দান করা হলো মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা তথা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি হরেকৃষ্ণ সামন্ত শনিবার রাত্রি ৯ টা নাগাদ  পূর্ব মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্তক্ষরণের কারণে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁকে এই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তাঁর মৃত্যু-সংবাদে সবং তথা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বামপন্থী রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।


শোক প্রকাশ করেন সিপিআইএমের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু করে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারাও। রবিবার সকালে মোহাড় এলাকার হরেকৃষ্ণ বাবুর বসতবাড়ি থেকে সিপিআইএম নেতা গোপাল প্রামানিকের নেতৃত্বে দলের প্রাক্তন রাজ্য নেতার মরদেহ সবং তেমাথানী পার্টি অফিস,সবং কলেজ হয়ে সকাল ৯ টা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের মীরবাজারে অবস্থিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিআইএমের কার্যালয়ে পৌঁছায়।সেখানে সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ, পাঁচ প্রবীণ নেতৃত্ব দীপক সরকার তরুণ রায়, ডহরেশ্বর  সেন অমলেশ বসু তারাশঙ্কর বিশ্বাস, পুলিন বিহারী বাস্কে তাপস সিনহা ,গীতা হাঁসদা বিজয় পাল ,সমর মুখার্জি গোপাল প্রামাণিক, কমল পলমল, সৌগত পণ্ডা কীর্তি দে বক্সী,সবুজ ঘোড়াই, রীতা জানা, চন্দন গুছাইত, চিত্ত পাল, জয়দীপ খাটুয়া, চিন্ময় কর আব্বাস আলি ,নাসিমা বিবি ,প্রসেনজিৎ মুদি, জগন্নাথ খান কুন্দন গোপ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ হরেকৃষ্ণ বাবুর মরদেহে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান। বিভিন্ন বাম গনসংগঠনে পক্ষে শ্রদ্ধা জানান পিনাকী মজুমদার, গঙ্গাধর বর্মন ,অশোক ঘোষ রুবি রায় দিলীপ চক্রবর্তী রনিত বেরা প্রমুখ।

 


 জেলা পরিষদের শাসক দলের নেতা মহম্মদ রফিক মেডিকেল কলেজে মাল্য দান করেন। সিপিআইএম জেলা অফিস থেকে অর্ধনমিত পতাকা হাতে নিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল সহযোগে দেহ নিয়ে পৌঁছন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি হরেকৃষ্ণ সামন্ত-র অঙ্গীকার অনুযায়ী তাঁর দেহ তুলে দেওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের হাতে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছিলেন সবংয়ের বাসিন্দা, প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি হরেকৃষ্ণ সামন্ত। তবে, শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল-ই ছীল। শনিবার ভোর রাতে হঠাৎই তীব্র অসুস্থতা বোধ করেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় অশীতিপর এই সিপিআইএম নেতা।

সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পথে শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় কোলাঘাটের আগেই মেছোগ্রাম মোড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসায় সাড়া দিলেও, শনিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর, রাত্রি ৮টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জেলার কৃষক আন্দোলনের অন্যতম বর্ষীয়ান এই বাম নেতা!

উল্লেখ্য কলেজ জীবনে অর্থনীতি নিয়ে পড়ার সময়ই বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার 'সবংয়ের ভূমিপুত্র' হরেকৃষ্ণ সামন্ত। পেশায় 'শিক্ষক' হরেকৃষ্ণ সবং জুড়ে শিক্ষকমশাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি জেলার কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব হয়ে ওঠেন। সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত। অবিভক্ত মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সাল অবধি।

তবে, কৃষক আন্দোলনই ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। স্বশাসিত মেদিনীপুর পরিকল্পনা পরিষদ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন প্রবীণ এই সিপিআইএম নেতা। তাঁর প্রয়াণে জেলার বাম আন্দোলনের একটা যুগ শেষ হল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।