সৃষ্টি সাহিত্য যাপনকাতান সিল্ককলমে_কেয়াতারিখ_১৩/১২/২০২৩
সুমিতা সুজয়ের তিন বছরের বিবাহিত জীবন। সুমিতা নম্র,ভদ্র,শান্ত মেয়ে। শাশুড়ী মা ওকে নিজের মেয়ের মতোই আগলে রাখে। নাতি নাতনী নিয়ে সময় কাটানোর জন্য সুমিতার কাছে আবদার করে। …
সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
কাতান সিল্ক
কলমে_কেয়া
তারিখ_১৩/১২/২০২৩
সুমিতা সুজয়ের তিন বছরের বিবাহিত জীবন। সুমিতা নম্র,ভদ্র,শান্ত মেয়ে। শাশুড়ী মা ওকে নিজের মেয়ের মতোই আগলে রাখে। নাতি নাতনী নিয়ে সময় কাটানোর জন্য সুমিতার কাছে আবদার করে। সুমিতা সুজয় আবদার মেনে নেয়। এখন সুমিতা মা হতে চলেছে।
আজ বৃহস্পতি বার।শুভঃ লক্ষ্মী পূজা। সুমিতা শাশুড়ী মায়ের সাথে সাথে পূজার কাজে সহযোগিতা করেছিল। হঠাৎ প্রচন্ড পেটে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। সুমিতার অবস্থা খারাপ দেখে শাশুড়ী মা ছেলে সুজয়কে সাথে নিয়ে তড়িঘড়ি নার্সিং হোম এ ভর্তি করান। ডাক্তার এসে পরীক্ষা করে জানান এখনই অপারেশন করতে হবে , না হলে বাচ্চাকে বাঁচানো যাবেনা। যাইহোক অপারেশন শুরু হলো। মা, ছেলে, সুমিতার বাপের বাড়ির লোকজন সকলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন।
এক সময় ডক্টর বাইরে বেরিয়ে এসে জানান সুমিতার ছেলে হয়েছে। এই খবরে বাড়ির সকলে খুব আনন্দিত হয়ে ওঠে। কিন্তু ডক্টর এর সাথে সাথে এটাও জানিয়ে দেন সুমিতার অবস্থা তেমন ভালো নয়। অবজারভেশন এ থাকবে। ২৪ ঘন্টা না পেরোনো পর্যন্ত কিছু বলা যাবেনা।
রাত ঠিক আড়াইটা। নার্স তাড়াতাড়ি সুমিতার বাড়ির লোকজনকে ডেকে পাঠান। সুমিতার প্রচন্ড খিচুনি শুরু হয়েছে। এখনই কিছু জরুরী মেডিসিন এনে দিতে হবে। ডক্টর রা অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও ,মেডিসিন প্রয়োগ করেও কিছু করতে পারলেন না। মিনিট দশেকের মধ্যে সব শেষ হয়ে গেলো।
সুজয় সত্য টাকে যেনো মেনে নিতে পারছিল না। সে যে সুমিতা ছাড়া এক মুহূর্ত কল্পনাও করতে পারেনা। এই দুধের শিশুকে রেখে সুমিতার চলে যাওয়া কে সে কোনো ভাবেই সমর্থন করতে পারেনা।
খুব সকালে সুজয় বাড়িতে যায়। আলমারি খুলে সুমিতার প্রিয় রঙের নতুন কাতান সিল্ক শাড়িটা বের করে। শাড়িটা হাতে নিতেই তার অনেক স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে আসে। অনলাইনে এই শাড়িটা দেখিয়ে সুমিতা বলেছিল দেখো কি সুন্দর শাড়িটা। কিন্তু সে শাড়ির জন্য কোনো আবদার করেনি। সুজয় সুমিতা কে না জানিয়ে শাড়িটা অর্ডার দেয়। ভেবেছিল সুমিতা কে সারপ্রাইজ দেবে। আর সুমিতার প্রাণোচ্ছল হাসিমুখটা অবলোকন করবে।কিন্তু তার আগেই সুমিতা ওকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলো।
সুজয় শাড়িটা ব্যাগ এ নিয়ে নেয়। নার্সিং হোম এ এসে সে সুমিতার দেহের ওপর শাড়িটা সুন্দর করে বিছিয়ে দেয়। সুমিতা কে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আজ যে সে নিজেই সারপ্রাইজড।।