নিজস্ব সংবাদদাতা,ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর: তরুণ চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁনের তৎপরতায় শেষমেষ হাসপাতালের বেডেই মাধ্যমিকের প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষা দিলো গুগগুড়িপাল হাইস্কুলের ছাত্রী,অসুস্থ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী চাঁদমণি বাস্কে। মেদি…
নিজস্ব সংবাদদাতা,ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর: তরুণ চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁনের তৎপরতায় শেষমেষ হাসপাতালের বেডেই মাধ্যমিকের প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষা দিলো গুগগুড়িপাল হাইস্কুলের ছাত্রী,অসুস্থ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী চাঁদমণি বাস্কে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপাল হাইস্কুলে হোষ্টেলে থেকে পড়াশোনা করে চাঁদমণি বাস্কে।এবারে সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার সেন্টার পড়েছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া স্কুলে।পরীক্ষার আগে ঝাড়গ্রাম জেলার সিমলি গ্রামে নিজের বাড়িতে গিয়েছিল চাঁদমণি। সেখানে বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়ে চাঁদমণি। পেট খারাপ জনিত সমস্যা নিয়ে বুধবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম ব্লকে অবস্থিত মোহনপুর হাসপাতালে ভর্তি হয় চাঁদমণি। বৃহস্পতিবার সকালের রাউন্ডে রোগী দেখতে এসে কর্তব্যরত তরুণ চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁন জানতে পারেন চাঁদমণি এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং সে যেডাবেই হোক পরীক্ষায় পরীক্ষায় বসতে চায়।
চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁন তৎক্ষণাৎ ফোনে যোগাযোগ করেন তাঁর মাধ্যমিক স্কুল চুয়াডাঙ্গা হাইস্কুলের ছাত্রদরদী শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়া'র সাথে। সুদীপবাবু তাঁর ছাত্রকে পরামর্শ দেন রোগীর কন্ডিশন অনুযায়ী যদি সম্ভব হয় রোগীকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা পরীক্ষাকেন্দ্র চাঁদড়া হাইস্কুলের নিকটবর্তী দেপাড়া হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। পাশাপাশি সুদীপ বাবু সকালেই চাঁদমণির অসুস্থতা এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার বিষয়টি গুড়গুড়ি পাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম ভৌমিক ও সহ শিক্ষক পল্লব সরকারকে জানিয়ে দেন। খবর পেয়ে উদ্যোগী হন গৌতম বাবু ও পল্লব বাবু।প্রধান শিক্ষক লিখিত ভাবে চাঁদড়া হাইস্কুল পরীক্ষাকেন্দ্রের সেন্টারের ইনচার্জকে জানান। পাশাপাশি জানানো হয় বিএমওএইচকে। ইতিমধ্যে নিজের ডিউটি আওয়ার শেষ হবার পরেও আরও ঘন্টা খানেক হাসপাতালে থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী চাঁদমণিকে দেপাড়া হাসপাতালে পৌঁছানোর সবরকম ব্যবস্থা করে হাসপাতাল ছাড়েন দায়িত্বশীল চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁন। চাঁদমণিকে নিয়ে দুপুরের মধ্যে দেপাড়া হাসপাতালে পৌঁছে যান পরিবার পরিজনেরা।চাঁদমণিকে দেপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি সুদীপ বাবু চাঁদমণির বিষয়টি জেলা প্রশাসনের হেল্প লাইনেও ফোন করে অবগত করেন। শুক্রবার হাসপাতালের বেডেই বাংলা পরীক্ষা দিলো চাঁদমণি। শুক্রবার মেদিনীপুর থেকে ঝাড়গ্রামে জেলায় ডিউটি যাওয়া আসার পথে দেপাড়া হাসপাতালে ঢুকে চাঁদমণির স্বাস্থ্য ও পরীক্ষা বিষয়ে খোঁজ নেন চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁন। পরীক্ষার আগে চাঁদমণি দুর্বলতা অনুভব করায় চাঁদমণির জন্য 'রাইটার' এর ব্যবস্থা করতেও উদ্যোগী হয়েছিলেন গুড়গুড়িপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম ভৌমিক , শিক্ষক পল্লব সরকার,গৌরশংকর সাহুরা। শুক্রবার পরীক্ষা শেষে চাঁদমণি জানায় তার পরীক্ষা মোটের উপর ভালো হয়েছে। চিকিৎসক ডাঃ আশাদুল আলি খাঁন সহ এবিষয়ের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। শিক্ষক সুদীপ বাবু তাঁর ছাত্রের কর্তব্যবোধকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান তিনি তাঁর ছাত্রের জন্য গর্বিত।