Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বাঙালি সরস্বতী পুজো, বর্তমান প্রজন্মের কাছে ভ্যালেন্টাইনস ডে

অরুন কুমার সাউ, তমলুক: সরস্বতী পুজো মানে বাঙালির কাছে নতুন রূপে ভ্যালেন্টাইনস ডে। বিদ্যার দেবী আর বাঙালির আন্তর্জাতিক প্রেম দিবস মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যদিও বর্তমান প্রজন্মের কাছে এখন সরস্বতী পুজোর দিনটা প্রেম দিবস হিসেবেই পা…

 


অরুন কুমার সাউ, তমলুক: সরস্বতী পুজো মানে বাঙালির কাছে নতুন রূপে ভ্যালেন্টাইনস ডে। 

বিদ্যার দেবী আর বাঙালির আন্তর্জাতিক প্রেম দিবস মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যদিও বর্তমান প্রজন্মের কাছে এখন সরস্বতী পুজোর দিনটা প্রেম দিবস হিসেবেই পালিত হয়। দুডানায় ভর করে উড়ে যাওয়া টিনেজার দল সরস্বতী পূজার দিন প্রেমের গন্ধ মেখে নেয়।

 হোয়াটসঅ্যাপে যেমন খিচুড়ির ঘ্রাণ পাওয়া যায় তেমনি পাওয়া যায় প্রেমের গন্ধ। আদিকাল থেকে সেই আনাচে-কানাচে প্রেম করার দিনটা বর্তমান প্রজন্ম অনেকটা ভুলতে চলেছে। আড়াল থেকে দেখা কিংবা একটু ইশারা করার দিন অনেকটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। তাদের কাছে সরস্বতী পূজার দিনে প্রথম একসাথে মিলানোর দিন হিসেবে পালিত হয়।

বসন্ত পঞ্চমী আমাদের নতুন প্রজন্মকে কেবল চার  দেওয়ালে পড়া মুখস্থ করায় না, শেখায় প্রেমিক হতে। বর্তমান টিনেজার অবশ্যই আগের ছেলেমানুষ নয়। তারাই এখন সমাজ কাঁপানো জেনারেশন। নতুন জেনারেশন মেয়েদের স্কুলে ঢোকার চ্যালেঞ্জ নিতে জানে।আজ থেকে কয়েক বছর আগে ছেলেরা যে চ্যালেঞ্জ নিত না এমনটা নয়। 

তখনকার একটা সাইকেল আজকের রয়েল এনফিল্ডের সমান। তবে তখন ভয় ছিল অনেক। সাইকেলের চাকা মেয়েদের স্কুলের অনেকটা দূরে গিয়ে থেমে যেত। এখনকার জেনারেশনের কাছে সে ভয় আর নেই। এখনকার জেনারেশন পরিযায়ী পাখির মত। সরস্বতী পূজোর দিন অন্তত চার- পাঁচটা মেয়েদের স্কুলে তো ঢুকবেই। বড়দি কিংবা হেড স্যর, আজ কিন্তু আপনারা কিছুই দেখেন নি!  মায়ের সবচেয়ে প্রিয় শাড়ি আজ যে  মেয়েটির দখলে সেই শাড়ির রঙটাই মনে ধরবে কত ছেলের।

বয়ঃসন্ধিরও তো কিছু ধর্ম থাকবে! এটাও এমন একটা ধর্ম। এ এক অন্তর টান। বয়ঃসন্ধির হরমোন তাকে সায় দেয়। মেয়েদের স্কুলে ঢোকার জন্য  সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি একটা বাহনা। মা-বাবার ঘেরাটোপের বাইরে এসে একটি ছেলে ক্ষণে ক্ষণে নিস্পলক তাকিয়ে থাকতে পারে মেয়েটির দিকে। সামান্য কালিমা গায়ে মেখেও এগিয়ে যায়। কেবল ছেলেদের দোষ  নয়, মেয়েরাও হাতছানি দেয়। তবে এর জন্য সাহসের প্রয়োজন। যাদের সাহস নেই তারা সর্বদাই ঘাড় উঁচু করে দেখে দেখে ‘ঘাড় উঁচু জিরাফ' হয়ে রইল। সব  সময় বাসন্তিক প্রেম মিষ্ট হবে তা নয়।দুর্ভাগ্যের কবলে পড়ে কখনো কখনো বসন্ত পঞ্চমীর প্রেম চিনির মতো মিষ্টি না হয়ে নিমপাতা হয়ে যায় ।

পরীক্ষার ভালো ফলের জন্য মা সরস্বতীর কাছে প্রার্থনার পাশাপাশি আগামী বছরও যাতে মেয়েদের স্কুলে গিয়ে অঞ্জলি দিতে পারে সে প্রার্থনাটাও জানিয়ে নেয়। মা সরস্বতীও বড্ড দরাজ আজ। তিনি কিছুই দেখেন না।সন্তানসম ছেলে মেয়েদের ক্ষমা করে দেন।