অরুণ কুমার সাউ,মহিষাদল : এক ঐতিহাসিক সেতু, যা সাক্ষী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মহাত্মা গান্ধীর পদচারণার, তা নতুন করে সেজে উঠেছে। ১৮৯৭ সালে এই সেতুর নিচ দিয়ে পার হয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঠিক তেমনই, ১৯৪৫ সালে এই সেতুর নিচ দ…
অরুণ কুমার সাউ,মহিষাদল : এক ঐতিহাসিক সেতু, যা সাক্ষী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মহাত্মা গান্ধীর পদচারণার, তা নতুন করে সেজে উঠেছে। ১৮৯৭ সালে এই সেতুর নিচ দিয়ে পার হয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঠিক তেমনই, ১৯৪৫ সালে এই সেতুর নিচ দিয়ে মহিষাদল রাজবাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী। এই ঐতিহ্যবাহী সেতুটি পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
১৮৫১ সালে মহিষাদলের রাজা লছমন প্রসাদ গর্গের নির্দেশে এবং দেওয়ান রামনারায়ণ গিরির উদ্যোগে এই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। এটি কেবল একটি কাঠামো নয়, এটি মহিষাদলের সমৃদ্ধ ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করেন। সেতুর পাশেই রয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ি, মহিষাদল রাজ হাই স্কুল, রাজ কলেজ এবং মহাত্মা গান্ধী ইউনিভার্সিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।
দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির চারপাশের পরিবেশ ছিল নোংরা। দেওয়ালে পানের পিক এবং লিথো পোস্টারে ঢাকা পড়েছিল, যা এর ঐতিহাসিক সৌন্দর্যকে ম্লান করে দিয়েছিল। এই দৃশ্য দূষণ রোধ করতে আগেও মহিষাদল বিশ্ব কলা কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে এসেছিল, চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তারা তাঁদের কল্পনার রঙে সেতুটিকে সাজিয়ে তুলেছিল।
এবারও সেই একই উদ্দেশ্যে তারা আবার রং-তুলি হাতে নিয়েছে। বিশ্বকলা কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষক ও শিল্পী বিশ্বনাথ গোস্বামীর অনুপ্রেরণা এবং উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক স্থানকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে চলেছে। তাদের এই মহৎ কাজে সহযোগিতা করছে মহিষাদল বুলেটস ক্লাব।
বিশ্বকলা কেন্দ্রের শিক্ষক বিশ্বনাথ গোস্বামী জানান, অত্যন্ত কষ্টকর হলেও আমার এই কচি কাঁচারা নিজেদের হাতে রং-তুলিতে এই ঐতিহাসিক স্থানটি সাজাচ্ছে। আমি সমস্ত পথচারী এবং জনসাধারণের কাছে অনুরোধ করব, আপনারা যেন অবশ্যই এই সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং এর চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন। তিনি আরও বলেন, -আমাদের এই শিশুদের কাজ দেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আরও অনেকে উদ্বুদ্ধ হবে এবং নিজেদের ঐতিহ্য রক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করবে।এই উদ্যোগে এলাকাবাসীও খুশি।