পূর্ব মেদিনীপুর ,তমলুক : পূজোর শেষ দিন বিজয়া দশমী। কেবল দেবী দুর্গাকে বিদায় নয়, যেন এক বছরের আনন্দময় উৎসবেরও বিদায়বেলার দিন। প্রতি বছর বাঙালির পঞ্জিকায় এই কয়েকটি দিন থাকে সবচেয়ে প্রতীক্ষিত। ক্যালেন্ডার হাতে পেলেই বাঙালি প…
পূর্ব মেদিনীপুর ,তমলুক : পূজোর শেষ দিন বিজয়া দশমী। কেবল দেবী দুর্গাকে বিদায় নয়, যেন এক বছরের আনন্দময় উৎসবেরও বিদায়বেলার দিন। প্রতি বছর বাঙালির পঞ্জিকায় এই কয়েকটি দিন থাকে সবচেয়ে প্রতীক্ষিত। ক্যালেন্ডার হাতে পেলেই বাঙালি প্রথমে খোঁজে—পুজো কবে? আর সেই পুজোর কয়েকটা দিন ঘিরে বছরের যত আনন্দ আর প্রত্যাশা। কিন্তু এই আনন্দময় দিনগুলো কেটে যায় চোখের পলকে।এ বছর আবহাওয়া খারাপ থাকার সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সেভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় পূজোর আবেগে কোনও ঘাটতি ছিল না। শেষ দিনে সকালের আচার অনুষ্ঠান ঘিরে তাই ছিল গভীর আবেগ আর আনন্দের মিশেল। দশমীর দিন সকালে নিয়মমতো দেবী দুর্গার পূজা, দেবীর কপালে সিঁদুর ছোঁয়ানো, আরতি, প্রসাদ বিতরণ—সবই চলল। এরপরই শুরু হলো বিজয়ার মূল আচার—সিঁদুর খেলা। লোকবিশ্বাস, সিঁদুর খেলার মাধ্যমে মহিলারা সৌভাগ্য কামনা করেন, দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন আর পরিবারের সুখ-শান্তি বজায় থাকে। তাই দেবীকে বিদায় জানানোর আগে মহিলারা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে, কপালে ছুঁইয়ে, মিষ্টিমুখ করিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। লাল সিঁদুরের আভায় যেন ফুটে ওঠে ভালোবাসা আর আশীর্বাদের রঙ।
তমলুকের ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাবে দেখা গেল এই আবেগঘন দৃশ্য। ক্লাব প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই মহিলাদের ভিড়। শাড়ির আঁচলে লাল সিঁদুর, হাতে থালা ভর্তি ফুল ও মিষ্টি। দেবীকে বিদায় জানাতে কেউ অশ্রুসিক্ত চোখে প্রার্থনা করলেন—“মাগো, আসছে বছর আবার এসো।” আবার কেউ হাসিমুখে একে অপরকে আলিঙ্গন করলেন, সিঁদুর পরালেন। লাল রঙে রাঙা মুখে আনন্দ-দুঃখের মিশেল ফুটে উঠল। এমনই এক আবহে তমলুকের ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে যেন তৈরি হলো এক অপূর্ব রঙিন দৃশ্য। ডুবে থাকা মনও সিঁদুরের উজ্জ্বলতায় যেন আলো পেয়ে গেল। পুজো শেষের আক্ষেপ থাকলেও, বিজয়া দশমীর সকালে এই আচার যেন মানুষকে নতুন আনন্দে ভরিয়ে তুলল। এক বছরের অপেক্ষা আবার শুরু হল, কিন্তু মনেপ্রাণে সবারই প্রার্থনা—মা দুর্গা আবার নতুন বছরে ফিরে আসুন, আরও বড় করে, আরও আনন্দে।