বর্তমানে এবছর 2025 সালে মন্দিরের মাতৃ আরাধনার পূজারী ছিলেন ব্রহ্মচারী দীপঙ্কর এবং তন্ত্র ধারক ছিলেন অনিমেষ মহারাজ। ইতিহাস ঐতিহ্য ও পরম্পরায় কাঁথির কপালকুণ্ডলা কালী মন্দির। "পথিক, তুমি পথ হারাই আছো? আইসো ।"----সাহিত্য স…
বর্তমানে এবছর 2025 সালে মন্দিরের মাতৃ আরাধনার পূজারী ছিলেন ব্রহ্মচারী দীপঙ্কর এবং তন্ত্র ধারক ছিলেন অনিমেষ মহারাজ।
ইতিহাস ঐতিহ্য ও পরম্পরায় কাঁথির কপালকুণ্ডলা কালী মন্দির।
"পথিক, তুমি পথ হারাই আছো? আইসো ।"----সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত "কপালকুণ্ডলা "উপন্যাসের শুভারম্ভ। নবকুমার সুরেলা নারী কন্ঠে চমকে উঠেছিলেন। কাপালিক পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলা নবকুমারকে কাপালিকের হাত থেকে বাঁচিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন।
সাহিত্যের মানবিক কপালকুণ্ডলার নামে একটি মন্দিরের নাম "কপালকুণ্ডলা"। মন্দিরটি কাঁথি মহকুমার দেশপ্রাণ ব্লকে দরিয়াপুর গ্রামে অবস্থিত। বঙ্কিমচন্দ্রের কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের পটভূমি এই দরিয়াপুর ও পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর গ্রাম। 1860 খ্রিস্টাব্দে কাঁথির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে যোগদান করেন বঙ্কিমচন্দ্র। এখানে তিনি মাত্র নয় মাস ছিলেন। কাঁথির তখন হেড অফিস ছিল নেগুয়া অঞ্চলে। একটি ডাকাতির মামলায় দরিয়াপুর আসেন বঙ্কিমচন্দ্র।। সেই সময় তিনি এই উপন্যাস লিখেন। উপন্যাসের কাপালিক বালিয়াড়ির ওপর তন্ত্রসাধনা করতেন। সাধনায় সিদ্ধি লাভের উদ্দেশ্যে নবকুমারকে বলি দেবার জন্য বেঁধে রাখেন তিনি। কপালকুণ্ডলা বলি দেওয়ার খর্গ দিয়ে নব কুমারের বাঁধন ছিন্ন করে মুক্তি দেন। তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। 1866 খ্রিস্টাব্দে কপালকুণ্ডলা উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার পর দরিয়াপুরের এই প্রাচীন মন্দির কপালকুণ্ডলা মন্দির নামে পরিচিতি পায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন বর্তমানে যে মন্দিরটি কপালকুণ্ডলা মন্দির নামে খ্যাত তা পূর্বে পরিহারী পরিবারের পূজিতা দেবীর ভৈরবী মায়ের মন্দির ছিল। ২০১১ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কপালকুণ্ডলা মন্দিরের সংস্কারের উদ্যোগ নেন। ২০১৩ সালে মন্দিরের সংস্কারের কাজ শেষ হয়। সংস্কারের জন্য মন্দিরের ভেতরে থাকা কালী মূর্তি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সেই সময় থেকে আজও মূর্তিহীন অবস্থায় মন্দির রয়েছে। মন্দিরে রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত অসিতি পথ ভবেশ চন্দ্র জানা বলেন,"জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার জানানো হয়েছে.। কিন্তু কিছুই হয়নি। বহু পর্যটক নিয়মিত মন্দির দেখতে আসেন। মন্দিরের দরজা খুলে দিই। তবে মূর্তিহীন অবস্থায় দেখে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান।"আজও ঐতিহাসিক নিদর্শন স্বরূপ কপালকুণ্ডলা কালীমন্দির দর্শনার্থীদের অমগ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছে।

