Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ইতিহাস ও পরম্পরায় তমলুক রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সেবাশ্রম এর কালীপুজো

তমলুক শহরে দুর্গাপূজার ন্যায় কালীপুজো বেশ জাগজমক ভাবে পালিত হয় বিভিন্ন বারোয়ারী পূজোর সাথে সাথে ঘরোয়া পূজারও প্রচলন আছে অনেক পুরনো পুজোর নাম পাওয়া যায়। যা শতবর্ষ প্রাচীন এরকমই এক পুজো তমলুক শহরের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সেবাশ্রম…


তমলুক শহরে দুর্গাপূজার ন্যায় কালীপুজো বেশ জাগজমক ভাবে পালিত হয় বিভিন্ন বারোয়ারী পূজোর সাথে সাথে ঘরোয়া পূজারও প্রচলন আছে অনেক পুরনো পুজোর নাম পাওয়া যায়। যা শতবর্ষ প্রাচীন এরকমই এক পুজো তমলুক শহরের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সেবাশ্রমের কালীপুজো এই পূজো প্রায় শতবর্ষের দূর করায় চিরাচরিত কালীপুজোর থেকে একটু অন্যভাবে মাকে এখানে আরাধনা করা হয়।

রামকৃষ্ণ মিশনে তন্ত্র মতে ষোড়শো উপাচারে মাতৃ দেবীর আরাধনা করা হয় দক্ষিণেশ্বরে  ভবতারিনী মায়ের আদলে মূর্তি তৈরি করা হয়। এখানে মাতৃ পুজোতে কোন বলি দেওয়া বিধি নেই। প্রথমে তমলুকে ৫১ সতী পিঠের অন্যতম জাগ্রত মা বর্গভীমা চরণে পূজো নিবেদন করে অনুমতি নিয়ে তবেই পুজো আরম্ভ হয়।  সূর্য উদয়ের আগেই দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়। সারারাত ধরে চলে কালি নাম সংকীর্তন ।নাট মন্দিরে মাকে সুন্দরভাবে সাজানো হয় । পূর্বে প্রতিমা শিল্পী ছিলেন বুধেন ভট্টাচার্য ,পরবর্তীকালে প্রতিমা নির্মাণ করেন কৃষ্ণ সামন্ত, রাধাবল্লভপুরের বিশ্বনাথ মাঝি প্রমুখেরা।


 মন্দিরে মায়ের পুজোর জন্য আসতেন জয়রামবাটি থেকে বংশী মহারাজ। তার উপরে সারদা মঠ থেকে আসতেন অমিতাভ মহারাজ, এছাড়া সীতারাম মহারাজ এবং পরে পাঁচু গোপাল মহারাজ প্রমুখ  পূজ্যপাদ স্বামীজিরা দেবীর পূজা করেছেন।

 বেলুড় মঠের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহারাজ স্বামী বিশুদ্ধা নন্দ জি মহারাজের মন্ত্র শিষ্য মন্দিরের প্রবীণ কর্মী অসীম পথ শ্রী বুদ্ধদেব পন্ডা স্মৃতিচারণে বলেন বেলুড় মঠের অনুমতিক্রমে ১৯৪৬ সালে তমলুক রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমে শুরু হয় দেবী কালী মায়ের আরাধনা। এই পুজোর জন্য উদ্যোগ নেন তমলুক রামকৃষ্ণ মিশনের অন্যতম সন্ন্যাসী পূজ্যপাত হেম মহারাজ। তখন মিশনের অধ্যক্ষ ছিলেন পরম পূজ্যপাত শ্রীমৎ স্বামী অন্নদানন্দ মহারাজ, সুযোগ ছিলেন নিশ্চিন্ত বসান নিবাসী শ্রীমদ স্বামী বিশুদ্ধা নন্দ মহারাজের কৃপাধন্য শ্রীযুক্ত বুদ্ধদেব পন্ডা মহাশয়। স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন প্রথমদিকে পটের মূর্তিতে পুজো করা হলেও ১৯৭৭ সালের ৯ই নভেম্বর প্রথম মূর্তি করে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তখন মিশনের অধ্যক্ষ ছিলেন শ্রীমৎ  স্বামী বিশুদ্ধা নন্দ জি মহারাজ।


 দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে ভবতারিণী মায়ের মূর্তির আদলে প্রতিমা নির্মাণ করতেন তমলুকের প্রখ্যাত মৃৎ শিল্পী শ্রী বুদেন ভট্টাচার্য । প্রথম মূর্তিপূজক ছিলেন কাকুরগাছি রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ সংখ্যা নন্দ জি মহারাজ এবং তন্ত্র ধারক ছিলেন স্বামী শক্তি ধরা নন্দ  জি মহারাজ যিনি জীবেষ মহারাজ নামে খ্যাত। মিশনের অন্যতম কর্মী সুকোমল  পট্টনায়ক জানালেন, মায়ের পুজোয় এখানে বলি প্রথা না থাকলেও মাকে ভোগে বিউলির ডালের খিচুড়ি নিবেদন করা হয়। এছাড়া দেবীকে কারণ বারীর পরিবর্তে নারকেলের জল এবং মাছ ভোগে দেওয়া হয়। মহাদেবের জন্য পৃথক নিরামিষ ভোগের ব্যবস্থা থাকে। আর মায়ের জন্য থাকে আমিষ ভোগ। পুজো উপলক্ষে হাজার হাজার দর্শনার্থী মন্দিরে সমবেত হন।


পুজো শেষে উপস্থিত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মায়ের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। বর্তমানে অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী শ্রুতি সারা নন্দ জী মহারাজ ও অন্যান্য সাধু ব্রহ্মচারী এবং কর্মীদের উদ্যোগে সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় দেবীর আরাধনা।