নিজস্ব সংবাদদাতা,মেদিনীপুর..... মেদিনীপুর শহরে অনুষ্ঠিত হলো প্রগতিশীল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সমিতির দুদিনের রাজ্য সম্মেলন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা খাতে সেভাবে নির্দিষ্ট বাজে বাজেট বরাদ্দ করে না বলে অভিযোগে উঠলো…
নিজস্ব সংবাদদাতা,মেদিনীপুর..... মেদিনীপুর শহরে অনুষ্ঠিত হলো প্রগতিশীল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সমিতির দুদিনের রাজ্য সম্মেলন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা খাতে সেভাবে নির্দিষ্ট বাজে বাজেট বরাদ্দ করে না বলে অভিযোগে উঠলো এই সম্মেলনে।রাজ্যে চারটি বড় বড় সরকারি হোমিওপ্যাথিক কলেজ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট বরাদ্দ না করে ইচ্ছামত বিভিন্ন খাত থেকে টাকা নিয়ে এই কলেজগুলির অস্তিত্ব কোনমতে টিকিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ তুললেন প্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ বারবার দাবি সত্ত্বেও বাজেটে হোমিওপ্যাথির জন্য বরাদ্দ থাকে না।
ফলত কলেজ গুলি সরকারি অশিক্ষক কর্মচরি, শিক্ষক- চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীর অভাবে ধুঁকছে। প্রগতিশীল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সমিতির ১৬তম রাজ্য সম্মেলনে এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা। জনস্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তায় এবং গরিব ,মধ্যবিত্ত সহ সমস অংশের মানুষের জন্য স্বল্প খরচে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার আধুনিকীকরণ ও প্রসার, সুস্বাস্থ্য, উৎপাদনক্ষম উন্নত জীবনের লক্ষ্যে দেশ ও রাজ্যে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজগুলির পরিকাঠামো পুনরুজ্জীবিত করার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে শেষ হয়েছে সম্মেলন।
মেদিনীপুর শহরে সম্মেলন উদ্বোধন করেন অভয়া মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ডাঃ তমোনোশ চৌধুরী তিনি বলেন, এরাজ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য দুই সরকারি পরিকাঠামোই আজ ধ্বংসের মুখে। যেখানে সরকারি কর্মীরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, হাসপাতালের ভিতরেই চিকিৎসককে ধর্ষন করে খুন করা হয়, ব্যবহৃত বাতিল সিরিঞ্জ সহ ক্যাথিটার পাচার হয়ে পুনরায় প্যাকেট হয়ে সরকারি হাসপাতালেই চলে আসে, এমনকি মৃতদেহ পর্যন্ত পাচার হয়, সেখানে এই অরাজকতা ও দুর্বৃত্তায়ন নিয়ে
নীরব থাকা যায় না। কঠিন সময় বিপজ্জনক হলেও এর বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াইয়ে থাকা জরুরি। নইলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
সম্মেলন মঞ্চে হোমিওপ্যাথি বিজ্ঞান ও তার প্রয়োগ বিষয়ে আলোচনা সভা হয়। বক্তব্য রাখেন ডাঃ বিপ্লব দাস। সভাপতিত্ব করেন ডাঃ বিমল গুড়িয়া। প্রতিনিধি অধিবেশনে সম্পাদক্টীয় প্রতিবেদন পেশ করেন রাজ্য সম্পাদক গৌতম নাগ। ছিলেন রাজ্য সভাপতি ডাঃ দেবব্রত চ্যাটার্জী সহ সংগঠনের রাজ্যের জেলাগুলি থেকে ১৭৬ জন প্রতিনিধি। প্রতিবেদনের উপর আলোচনা করেন ২৩ জন প্রতিনিধি।
অন্যান্য আলোচনায় উঠে আসে উপযুক্ত সংখ্যক শিক্ষক ও চিকিৎসক না থাকার জন্য কিভাবে কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থার (এনএইচসি) দ্বারা কলেজের ছাত্র ভর্তির আসন সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তিনটি রাজ্য সরকারি কলেজকে মুচলেকা দিয়ে বর্তমান আসন সংখ্যা বজায় রাখা হয়েছে। সরকারি কলেজগুলিতে সরকারি চিকিৎসক সংখ্যা প্রয়োজনের এক তৃতীয়াংশ রয়েছে, অশিক্ষক কর্মচারী ও স্বাস্থ্যকর্মী পদে কোন নতুন নিয়োগ হচ্ছে না। কিছু কিছু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে যেমন তেমন করে। কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এরাজ্যে মোট ১২টি হোমিওপ্যাথি কলেজের মধ্যে ৪টি। রাজা সরকারি কলেজ, একটি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে স্বশাসিত কলেজ এবং বাকি ৭টি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। এই বেসরকারি কলেজগুলির পরিকাঠামোও খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা এর মধ্যে তিনটি বেসরকারি কলেজে ছাত্র ভর্তি' বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ হিসাবে ন্যূনতম প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম শিক্ষক থাকার কথা বলা হয়েছে।। প্রায় কোন কলেজেই ইনডোর হাসপাতাল চলে না।আউটডোরের অবস্থ্যও তথৈবচ।
সম্মেলন থেকে ৫৫ জনের রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে। ২১ জনের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী গঠিত হয়েছে। সভাপতি পদে পুনরায় ডাঃ দেবব্রত চ্যাটার্জি, সম্পাদক পদে ডাঃ গৌতম নাগ এবং কোয়াধ্যক্ষ পদে ডাঃ অরিন্দম মুখার্জি নির্বাচিত হয়েছেন।