বিশ্ব স্বাস্থ্য দিনে দুকলম
-----------------------------------
অলক জানা
কোভিদ-১৯ তাণ্ডব মুহূর্তে হাজির হল ৭এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। ভালোই হলো "স্বাস্থ্যই সম্পদ" আর একবার ঘটাকরে আমরা মনে করলাম। কেবল এই মনে করার সীমা…
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিনে দুকলম
-----------------------------------
অলক জানা
কোভিদ-১৯ তাণ্ডব মুহূর্তে হাজির হল ৭এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। ভালোই হলো "স্বাস্থ্যই সম্পদ" আর একবার ঘটাকরে আমরা মনে করলাম। কেবল এই মনে করার সীমায় আটকে থাকলে একদিন রুগ্নতার অভিশাপে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিবিধ বিশ্বসংস্থার লাগাম ছাড়া চাহিদা পূরণের জন্য যেভাবে মাটি ও মানুষের ওপর অস্বাস্থ্যকর দূষণ প্রয়োগ চলছে তাতে সেই নিয়ন্ত্রণহীন ধ্বংস লীলার সময় আর বুঝি দূরে নেই।
৭ এপ্রিল দিনটি সম্পর্কে যেটুকু জানা যায় --- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) উদ্যোগে ১৯৫০ সালে প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে পালিত হয়েছিল। মূলত স্বাস্থ্য পরিষেবা সকলের মৌলিক অধিকার। তো সেই সুযোগ সুবিধে বিশ্বের প্রতিটি সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এই সংস্থার মুখ্য উদ্দেশ্য। কিন্তু সেই পরিষেবা কতকানি প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেছে তা নিয়ে একটি বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দেয়। কারণ দেশ রাষ্ট্র এমন এক অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হাঁটছে যেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা গৌণ হয়ে গেছে। ফলে মোট জনসংখ্যার একটা বড়ো অংশ বিভিন্ন ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে। সুতরাং বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস কিংবা অন্য কিছু পালনীয় দিন যাই আসুক না কেন পারস্পরিক সচেতনতা না এলে গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো কেবল পুঁথিতেই আটকে থাকবে,আর চনমনে আনুষ্ঠানিকতার লম্বা পোস্টারে দেয়াল রাঙানো ছাড়া আর কী বা প্রাপ্তি ?
বিশ্বসংস্থার ঘোষিত দিনগুলোকে ঘটাকরে কেবল পালন করলে হয় না। এর সুদূরপ্রসারী ফলাফল পেতে গেলে প্রতিমুহূর্তে আমাদের সচেতনতার সঙ্গে বেশকিছু কর্তব্য পালন করতেই হবে। সেই সঙ্গে সরকারি সহযোগিতা থাকাও সঙ্গত বৈকি।
করোনার সংক্রমণের এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য সচেতনতা পালন এভাবেও করা যেতে পারে -----
১. একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নির্বাচন করে তাকে অভ্যাসে নিয়ে আসতে হবে।
২. নিয়মিত ব্যায়াম ও প্রাণায়ামের সময়সূচী নির্ধারণ।
৩. অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার বর্জন করা উচিত।
৪.বয়স অনুযায়ী ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
৫. দিনরাত্রির সূচি মেনে সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ।
৬. প্রক্রিয়া ও প্যাকেটবন্দি খাবার এড়ানোই ভালো।
৭. ঋতুভিত্তিক ফল খাওয়ার অভ্যাস রাখতে হবে।
৮. সর্বোপরি নিয়মিত পরিশ্রমের তাগিদই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার মহৌষধ।
এই মুহূর্তে সারা পৃথিবী করোনাভাইরাসে প্রায় দিশেহারা। মৃত্যু মিছিল আটকানো যাবে তেমন স্বাস্থ্যকর পরিকাঠামোর আজ বড়ো আকাল। তো ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বিশ্বের কাছে একটাই প্রার্থনা পারস্পরিক হিংসা স্বার্থপরতা ও মাৎস্যন্যায়ের মতো ভাইরাসমুক্ত না হলে, আমাদের বাঁচাতে কিংবা অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কেবল বিশেষ একটি দিন যথেষ্ট নয়।
-------------
অলক জানা
জন্ম:০১-০১-১৯৮২
মূলত কবি। গৃহশিক্ষক। রয়েছে বেশ কিছু কবিতার বই। ঠিকানা- সবং, পশ্চিম মেদিনীপুর -৭২১১৫৫.