২২/৬/২০
দৈনিক প্রতিযোগিতা
সেরা কলম সম্মাননা
পর্ব-০৬
বিষয় :--অনুগল্প
শিরোনাম:--* মন-জোছনা্ *
কলমে :--- শিবানী গুপ্ত
বিশাল উদগ্রীব হয়ে এদিক - ওদিক তাকাতেই পুকুরঘাটের দিকে চোখ পড়তেই মুখে উজ্জ্বল আভা ফুটে।
দ্রুত এগিয়ে যায়--
…
২২/৬/২০
দৈনিক প্রতিযোগিতা
সেরা কলম সম্মাননা
পর্ব-০৬
বিষয় :--অনুগল্প
শিরোনাম:--* মন-জোছনা্ *
কলমে :--- শিবানী গুপ্ত
বিশাল উদগ্রীব হয়ে এদিক - ওদিক তাকাতেই পুকুরঘাটের দিকে চোখ পড়তেই মুখে উজ্জ্বল আভা ফুটে।
দ্রুত এগিয়ে যায়--
একি রে! তুই এখানে? আর ,আমি সারা তল্লাট খুঁজে বেড়াচ্ছি?
চাঁদনী মুখ ফিরে তাকিয়ে বিশালদাকে দেখে মিষ্টি হাসলো একটু-- ওমা ! লতামাসি বলেনি,আমি পুকুরঘাটে? জল নিতে এসেছিলুম-
বিশাল মাথা নাড়ে,-নাতো! বললে কি আর খুঁজে মরি! চল্ চল্ দারুণ একটা সুখবর আছে --
চাঁদনী উৎসুক হয়,তাই বুঝি? কি সুখবর গো ?
বিশাল একটু গম্ভীর মুখ করে,--সে এখন বলা যাবেনা ,বাড়িতে চল্ ,বেশ জম্পেশ করে চা বানিয়ে খাওয়াবি, তারপরেই বলবোখ'ন-
চাঁদনী ভ্রু কুঁচকে বলে--যা,বাবা,তাই নাকি? তাহলে চলো---
বিশাল চা ও জলখাবারের আয়োজন দেখে বেশ উৎফুল্ল হয়। বাঃ ,আমার চাঁদনী তো বেশ কাজের হয়েছে!
বিশালের মুখে -আচমকা ,-'আমার চাঁদনী' শুনেই বুকে কেমন যেন শিহরণ জাগে চাঁদনীর ,মুখে লজ্জার লালিমা ফুটে।খানিক অভিমানেই
বলে,কেন? আমি কি কাজ জানিনে?
বিশাল একমুখ হাসে-- না,না,তাতো বলিনি, প্রশংসাই তো করেছি বাপু--
চাঁদনী কি ভেবে বলে-ও ,বিশালদা,সুখবরটা কি সেটা তো বলবে?
বিশাল চা খেতে খেতে চাঁদনীর অস্থিরতা দেখে মুচকি হাসে---
বলবো রে বলবো,তা,মাসিমা কোথায়? বাড়ির আর সবাই? কাউকেই তো দেখছি নে!
চাঁদনী ঠোঁট উল্টে বলে,কেউ নেই।সবাই দক্ষিণ পাড়ার সরকার বাড়িতে ইতুপূজায় সামিল হতে গেছে বাড়িতে আমিও লতা মাসি,তা মাসিও এখুনি সেখানেই তো গেলো,সে যাক্ তুমি সুখবরটা আমাকেই বলতে পারো--
বিশাল লাজুক হাসে, জানিস, ওই - সুখবরটা আসলে কিন্তু আমার --মানে ,আমার সিলেকশন হয়ে গেছে - হাতে গোনা ক'টি দিন ,জয়েন করতে হবে শিগগিরই,তাইতো খবরটা--
চাঁদনী খুশিতে লাফিয়ে উঠে,-- বাঃ তাই নাকি? তাহলে তো ভীষন আনন্দের খবর গো ,যাক বাবা,ঠাকুর মাসিমার প্রার্থনা শুনেছেন । মাসিমার এতো বছরের সাধনা,চেষ্টা সার্থক করলে তুমি ।মাসিমা খুব খুশি তাইনা বিশালদা?
বিশাল অপলকে তাকিয়ে দেখে লাল রঙ্গের চুড়িদারে,একপিঠ খোলা চুলে,অনাড়ম্বর পোশাকেও দারুণ লাবণ্যময়ী চাঁদনীকে,মুগ্ধ চোখে পলক পড়েনা।বাঃ অপূর্ব !
বিশালের চোখের ভাষা বুঝতে পেরে চাঁদনী রোমাঞ্চিত হয় ।মৃদু কন্ঠে বলে--,কি হলো বিশালদা?কি দেখছো ?
বিশাল আবিষ্টের মতো বলে ওঠে--তোকে দেখছি ,তোকে সেই ছোট্টবেলা থেকেই তো দেখছি ,তবু যেন দেখার শেষ নেই ,অপার সমুদ্রের মতোই রহস্যময়ী মনে হয় --
চাঁদনী তনুমন বিশালের কথায় কেঁপে ওঠে পুলকে,কি সুন্দর কথাই না বলতে পারে বিশালদা । লজ্জানত মুখে নীচুসুরে বলে,ধেৎ,কি যে সব বলো!
বিশাল এবারে চাঁদনীর একেবারে কাছে সরে এসে দু'হাতের অঞ্জলিতে ওর অনিন্দ্য মুখটা তুলে ধরে আবেগঘন সুরে বলে--আমার চাকরী তো হয়েই গেলো,তাহলে তো এবারে,মাসিমাকে আমাদের কথাটা বলতেই হবে,তোমার আপত্তি নেইতো চাঁদনী?
আজকের এই অপরূপ মূহূর্ত, বিশালের মুখে এই প্রথম তুমি সম্বোধন ,গায়ের স্পর্শ চাঁদনীকে যেন কোন অলৌকিক আবেশের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে,অস্ফূটে শুধু বলে--জানিনে,আমি কিছুই জানিনে গো,আমার চৈতন্যজুড়ে আছো সেই মেয়েবেলা থেকেই ,তাকি তুমি জানো না?
নিরালা পরিবেশ,শুধু দু'টি ব্যাকুল অনুরাগী মন,ভালোবাসার অমিয় সুধা সাগরে অবগাহনে উন্মুখ।
বিশাল মুচকি মুচকি হাসছিলো,
কিযে বলো ,জানবোনা কেন? তুমি যে আমার মন-জোছনা্ , সারাক্ষণ স্নিগ্ধতায় ছেয়ে থাকো আমার মনে।
চাঁদনী ছুটে গিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে বিশালের বুকে মুখ ঘ'ষে,-বিশালদা! আমার ভয় করছে গো--
বিশাল গভীর অনুরাগে চাঁদনীর কোমল দেহলতাকে নিজের বলিষ্ঠ আলিঙ্গনে জড়িয়ে পাগলের মতোই ভালোবাসাতে ভাসিয়ে নিতে নিতেই বলে--কিসের ভয়! আমিতো আছি, আমার ভালোবাসার চাঁদনীকে ঘিরে-,সকল রকম বিপদ থেকে আমার ভালোবাসাকে সুরক্ষিত রাখতে,মন -জোছনায় সারাজীবন প্লাবিত হতেই চাই যে!
শব্দ সংখ্যা:-৫০০