Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার সাপ্তাহিক কলম সম্মাননা

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব  ১৩
বিষয় - মন খারাপের বর্ষা
বিভাগ - অণুগল্প
শিরোনাম  -  ক্ষয়
কলমে - প্রদীপ সেন
তারিখ - ১৬/০৬/২০

    শেষ রাত থেকেই আকাশে বিদ্যুৎ চমক আর থেকে থেকে বজ্রপাত। মদন প্রমাদ গুনছে। ব…


অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব  ১৩
বিষয় - মন খারাপের বর্ষা
বিভাগ - অণুগল্প
শিরোনাম  -  ক্ষয়
কলমে - প্রদীপ সেন
তারিখ - ১৬/০৬/২০
 
    শেষ রাত থেকেই আকাশে বিদ্যুৎ চমক আর থেকে থেকে বজ্রপাত। মদন প্রমাদ গুনছে। বাঁশের বেড়ার ফাঁক গলে বিদ্যুৎ চমকানোর আলো ঘরে ঢুকে পড়ছে। কাঠের পুরোনো চৌচির উপর অঘোরে ঘুমোচ্ছে মনের চৌদ্দ বছরের মেয়ে মেঘা আর আট বছরের ছেলে মন্টু। ওদের মা লতা উঠে গেছে। বৃষ্টি হলে চালের ফুটো গলে বৃষ্টির জল পড়ে। লতা অনেকগুলো বাটি, কৌটো, প্লাস্টিকের ছোট-ছোট গামলা হাতের কাছেই তৈরি রাখে বর্ষার দিনগুলোতে। লতা চোখ বুজেই বলে দিতে পারে কোথায় কতটা জল পড়বে। সেই বুঝেই ছোটো, মাঝারি ও বড়ো বড়ো পাত্রগুলো বসিয়ে ভাগ্য ও প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে চলেছে।
  বিদ্যুৎ চমকে ঘরের ভেতরটা ক্ষণে আলোকিত হয়, ক্ষণে অন্ধকারে ডুবে যায়। মনের জীবনে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার। ওর ঘরে ছাউনি দিতে সরকারি টিন বরাদ্দ করিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে দেখিয়ে মদনকে, কখনো লতাকে, বড় নেতা -মন্ত্রীর আগমনে মাঠ ভরতে দুজনকেই মিছিলে হাঁটতে হয়েছে, গলা ফাটিয়ে স্লোগান দিতে হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয় নি। মনে মনে ওদের শালা বলে গাল দেয় মদন, চৌদ্দ গোষ্ঠীর শ্রাদ্ধ করে। প্রকাশ্যে কিছূ বলার সাহস নেই, সুযোগও নেই। মদন রাগে গজগজ করে। বিড়বিড় করে বলে, ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই।
  অচৈতন্যভাবে ঘুমোচ্ছে মেঘা। উরুর উপরে জামা ওঠানো। উদ্দাম বুকের ওঠানামা। একপলক চোখ পড়তেই একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে মদন চোখ ঘুরিয়ে নিল। বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো। মেয়ে বড়ো হয়ে গেছে। বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কীভাবে? দু'বেলা পেট ভরে খাওয়াবার মুরোদ নেই যার সেই বাবা কীকরে মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করবে? পাড়ার বখাটে ছোকড়াগুলো মেঘের দিকে কেমন লালামুখে তাকায়। ওকে সহজলভ্য ভেবে বাইকে লিফ্ট দিতে চায়। মেঘা বাবার ভয়ে মায়ের বকুনির ভয়ে ওদের এড়িয়ে চলে।
       বিড়ি মুখে মদন সাতপাঁচ ভাবতে লাগলো। মনে মনে নিজেকে ধিক্কার জানায় সে। এতদিন পটকার ঠেকে বোতলের তলে কত ঢেলেছে। নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে তার। লতা এসে ওর কাঁধে হাত রেখে বললো, কী ভাবতেছ? রিক্সাডা লইয়া বাইরতে না পারলে আজকা চুলা জ্বলত না? মুষ্টি চাউলে দুইদিন চলবো। মদন কষ্টের হাসি হাসে।

   🌹 শ্রেষ্ঠ গল্পকার 🌹