Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লেখক ও সাংবাদিক দিবাকর কুন্ডুর( প্রভাতরবি) কবিতা গুচ্ছ

স্মৃতির পাতায়

-------- প্রভাতরবি

পুরোনো দিনের স্মৃতি গুলো ভেসে ওঠে,
দশ বছর আগের সেই দিনের মুহূর্ত,
এখন সবাই ব্যস্ত যে যার কাজে,
সবাই বদলে গেছে, সেই বন্ধুত্ব আজ নিরর্থ।

সেইদিনের ওই প্ৰেম নগরের ছোট্ট ঘরের দিনগুলো ছিল ভালো,
কেউ ফিরে আসেনি,…



স্মৃতির পাতায়

-------- প্রভাতরবি

পুরোনো দিনের স্মৃতি গুলো ভেসে ওঠে,
দশ বছর আগের সেই দিনের মুহূর্ত,
এখন সবাই ব্যস্ত যে যার কাজে,
সবাই বদলে গেছে, সেই বন্ধুত্ব আজ নিরর্থ।

সেইদিনের ওই প্ৰেম নগরের ছোট্ট ঘরের দিনগুলো ছিল ভালো,
কেউ ফিরে আসেনি, সবাই যে যার স্বার্থে গেছে ভুলে;
মনে কি পরে পরীক্ষার আগের সেই রাতগুলো?
আজও তোমাদের খুঁজি সেই পাহাড়ি নদীর কুলে।

মনে কি পড়ে আমাদের সবার সেই জন্মদিনের মুহূর্তগুলো?
আমাদের হোস্টেল হোক বা রেস্টুরেন্টের সেই খাওয়া,
সেদিনের সেই পাগলামো বাসে বা রাস্তায়,
হঠাৎ করে সবাই একসাথে ঘুরতে যাওয়া!

মনে পড়ে সেই দিনগুলো, শীতের ঘন কুয়াশার রাত,
আমদের ওই ছোট ছোট গল্প, আর পাহাড়ি নদীর শব্দ,
তখনকার ওই বন্ধুত্বপূর্ণ ভালোবাসার স্পর্শের অনুভুত,
সবকিছু আজও আমার ভালোবাসার স্মৃতিতে আবদ্ধ।

*****************************

পিতৃস্নেহ

------ প্রভাতরবি

বায়না ধরেছিল মেয়ে একজোড়া নতুন জুতো দিতে হবে,
আচ্ছা হবে না হয়! শুনে বাবা বলেছিল,
নিজের ছেঁড়া জুতো বদলাবে ভেবেছিলো,
কিন্তু মেয়ের আবদার, দিতে তো হবে।
বছর খানেক ধরে ওই একটাই ছেঁড়া জুতো দিয়ে চলছিল,
না'হয় আরো কিছু মাস চালিয়ে নেব, বাবা রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছিল।
নিজের থেকে সন্তানের সুখে যে অনেক বেশি আনন্দ।

বাবার আর জুতো কেনা হয়নি, মেয়ে কিছুদিন পরেই বললো,
স্কুল টা বড় দূরে, একটা সাইকেল দরকার 
হেঁটে যেতে বড় কষ্ট।
এদিকে বাবা আজকাল চোখে কম দেখে একটু, তাই চশমা আর ছেঁড়া জুতো বদলাবে ভেবেছিলো,
কিন্তু মেয়ের আবদার, শত কষ্ট হলেও সে রেখেছিল।

আজকাল আর কাজে গেলে দুপুরের খাবার বাবা নিয়ে যায় না,
শুধু বলে সকালে এত খাই যে ক্ষিদে পায় না,
আর সাথে বলে বয়সটাও তো বাড়ছে,
তাই বাবার দুপুরে নতুন সাথী হয়েছে 2 টাকার শুকনো মুড়ি।
মেয়ে বড় হচ্ছে টাকার দরকার হবে বিয়েতে,
মেয়ের আবার আবদার আছে যে চাই তার সোনার চুড়ি।

বাবা তার জুতোটা বদলেছিলো কিন্তু চশমা টা আর বদলানো হয়নি,
চোখ টা বড় ঝাপসা লাগে আজকাল,
কিন্তু মেয়ের ওই বিয়ের কথা ভেবে ভেবে টাকাটা সঞ্চিত ছিল,
এক বাবা তাঁর আত্মত্যাগ জানত তাই সন্তানের খুশিতে নিজেই খুশি ছিল।

বাবা কিন্তু সাইকেল নিজে একবারও চড়েনি,
কিন্তু তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে,
ছেঁড়া জুতো পায়ে, ভাঙা চশমা চোখে, কড়া রোদ্দুরে, শুকনো মুড়িতে, বাবার দিন কেটেছে,
কিন্তু অভিযোগ করেনি কারোর কাছে,
মহান এই আত্মত্যাগ মহান এই পিতা,
যে শুধু সন্তানের খুশিতে খুশি রয়েছে।

****************************
অভিষেক

-------- প্রভাতরবি

খুশির সমাহার জাগে, প্রতি দিনে দিনে,
রবির নৃত্য ধেয়ে আসে, বৈশাখীর শুভ লগনে।
উত্তপ্ততার মাঝেও, শীতলতার পরশ আসে নিশীথে,
চন্দ্রমা যেন চুম্বন করিয়া যায়, নীল বিস্তৃত গগনের বুকে।

অবসানে মগ্ন হইয়া, বসিয়া রহে, প্রতি রাত্রি,
সুমিষ্ঠ বায়ুধারাতে ভরিয়া যায়, সুন্দর এই ধরিত্রী।
ইহা যেন এক বরণ করে লইবার রীতি,
সবার মাঝে রহিবে অভিষেকের স্নিগ্ধ প্রীতি।

জীবনের প্রতি মুহূর্ত চলিতে থাকুক, মিষ্টসুরের ধারাতে বেয়ে,
তোমার হৃদয় প্রতি মুহূর্তে উঠিবে গেয়ে।
ধরিত্রী আজ জাগিয়া উঠিল, নুতন বর্ণে, নুতন গন্ধে,
সেও আজ সাজিয়া উঠিল, ভরিয়া গেল অনন্ত আনন্দে।

বনের পাখি উঠিছে গাহি, 
বিলীন হোক তোমার জীবনের সর্ব দুখ,
তোমার চিত্তমাঝে নবচেতনা বহিতে থাকুক,
আসুক তোমার জীবনে সর্বসুখ।

***********************
চিরশান্তি লাভের পরে

--------  প্রভাতরবি

আমার জীবন-প্রদীপ শিখা,
কোনো একদিন যাবে নিভে,
হয়তো কেউ আকাশের পানে চেয়ে,
নয়ন নইলে বিরহের গান গাবে।

আমি তখন আকাশের কোল হতে,
দেখবো তারে নয়ন মেলে,
তার কাছে আবার আসিব ফিরে,
নেব তারে আপন গলে।

সাঁঝবেলাতে ওই আকাশের মাঝে,
কোনো তারার বেশে উঠবো আমি ভেসে,
সে তখন হয়তো আমায় দেখে,
উঠবে সে আপন মনে হেসে।

শিশিরবিন্দু হয়ে আসতে পারি আমি,
খোলা মাঠের সবুজ ঘাসে,
উঠবো তখন আমি আবার জেগে,
তারই কোমল হাতের স্নিগ্ধ পরশে।

হয়তো কোকিলের কুহুতান হয়ে,
ফিরতে পারি তারই মনের মাঝে,
দেখতে চাই আমি যে তারে,
সে যেন রয় শুধু অনন্ত সুখে।
আরাধনা

            ---------প্রভাতরবি


*************************

পুষ্পবাহারে সাজায়ে তোমারে, চরণস্পর্শ করিতে দিও,
মা আজি তোমার দ্বারে, বসিতে দিও মোরে।
রক্তরাঙা জবার মালা, পরায়ে তোমার গলে,
কিছু সময় বসিতে দিও, তোমারই চরণতলে।
ভজিতে নাহি পারিলাম, নাহি করিতে পারিলাম সাধনা,
তবুও দয়া করিও আমায়, দিও না কভু যাতনা॥

মা মা বলে কত ডাকিয়া উঠি, দাও না মাগো সারা,
তুমি যে কালী, তুমি ভবতারিণী, তুমিই দুর্গা তুমি মা তারা।
তুমি যে মা অন্তর্যামী, তুমি কোমল-হৃদয় জগৎজননী,
দেবী তুমি মা এ সংসারের, দাও মা তোমার ভালোবাসার বাণী।
অপেক্ষায় আজ মোরা সবাই, দেখিবো তোমায় ভুবনমোহিনী রূপে,
দাও খুলিয়া আজি চিত্ত দ্বার, দাও দেখা মা মোদের দীনগৃহ মাঝে॥

**************************

'মা"

মা তোমার ঐ আঁচলখানি মেলে ধরো,
তোমার ঐ গৃহের মাঝে মোদের প্রদীপ কর;
জ্বলব মোরা পূর্ণরূপে করবো তোমায় আলো,
তোমার ক্রোড়ে মা'গো মোদের এগিয়ে নিয়ে চল।।

আপন ভক্তি দেব তোমার চরণে মেলে,
ডাক দিও মোদের আবার যখন যাব চলে;
দু'হাত পেতে নেব যা আছে তোমার কাছে,
শক্তি দিও মা তুমি মোদের এই তুচ্ছ প্রাণেতে।।

মোদের এই ভিক্ষাঝুলি দিয়ো তুমি ভরিয়ে,
ধরে রেখো এই প্রাণ দিয়ো না যেতে হারিয়ে;
আছি গো মোরা, যাব না কোথাও চলে,
কেমন করে যাব মা'গো তোমার প্রসাদ ফেলে?

------------------------------ দিবাকর