Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-সাপ্তাহিক-সেরা-সম্মেলন

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১৪
বিষয়- উন্মুক্ত
বিভাগ- অণুগল্প
শিরোনাম- চর (অণুগল্প)
কলমে - প্রদীপ সেন
তারিখ- ৩০/০৬/২০

দু'দুটো ছেলের পরে যখন তৃতীয়টি অনামিকার পেটে এলো, অজয় অ্যাবোরশন করাতে চেয়েছিল | প্রিভেনটিভ নিতে ভুলে গিয়েছি…


সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১৪
বিষয়- উন্মুক্ত
বিভাগ- অণুগল্প
শিরোনাম- চর (অণুগল্প)
কলমে - প্রদীপ সেন
তারিখ- ৩০/০৬/২০

দু'দুটো ছেলের পরে যখন তৃতীয়টি অনামিকার পেটে এলো, অজয় অ্যাবোরশন করাতে চেয়েছিল | প্রিভেনটিভ নিতে ভুলে গিয়েছিল অনু, মানে অনামিকা | আনওয়ান্টেড প্র্যাগনান্সি | ডাক্তার দেখানো হয়েছিল | গড়িমসি করে করে তিন মাসের পেট নিয়ে আলটিমেটলি যখন গর্ভপাতের জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া হলো, অনু তখন অ্যাবোরশনের ধকল নিতে পারবেনা বলে ডাক্তার সাফ জানিয়ে দিলেন | আনওয়ান্টেড বেবি অযত্নে-অনাদরেই একদিন পৃথিবীর আলো দেখে।
      মেয়ে হয়েছে। অনু মেয়েকে জন্ম দিয়ে মনে মনে খুশি | সে নিজেওতো একজন মেয়ে | মেয়ের নাম রাখা হয়েছে চায়না | নামটা অনামিকার না-পছন্দ হলেও মুখ ফুটে বলতে পারে না। মেয়ের জন্ম দিয়ে সে কোন্ অপরাধ করেছে অনু তা আজও বুঝে উঠতে পারছে না।
             অনাকাঙ্ক্ষিত চায়না আগাছার মতো বেড়ে ওঠে শেকড়ের জোরে। স্বামী, তার বাপ-মা অমূল্য আর রতনকে নিয়েই ব্যস্ত। সময় থেমে থাকে না কারো জন্য। আদরে বা অনাদরে তুমি যেমনটাই থাকো, সময়ের তাতে কোন মাথাব্যথা নেই! সে তার খেলা দেখিয়েই চলে। স্বামী প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক অবসরে এসেছেন। বড়ো ছেলে আর্মিতে চাকরি করে। গুজরাটি মেয়ে বিয়ে করে সে সুরাটে স্থায়ী আস্তানা গেড়েছে। দ্বিতীয় ছেলে শ্বশুরের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সাব্রুমবাসী, ঘরজামাই। ছুটিছাটা পেলে কালেভদ্রে বাবা-মাকে দেখে যায় ঘন্টাদুয়েকের জন্য।
        চায়না উপযুক্ত যত্ন পায়নি । ভালোবাসা যতটুকু পেয়েছে, মায়ের কাছ থেকেই। মায়েরা তো স্নেহ-মমতার জীবন্ত প্রতিমা। বাবা দিদন ওর লেখাপড়ার জন্য টাকা অপচয় করতে নারাজ। দায়সারাভাবে দু'বারের মাধ্যমিক ফেল-করা চায়নাকে এক অটোচালকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে কন্যাদায় থেকে মুক্ত হন।
    বৃদ্ধ বাবা অসুস্থ, বাতের ব্যথায় শয্যাশায়ী। স্বামী সুজন অটো নিয়ে যাবার সময় চায়নাকে বাপের বাড়ি নামিয়ে দিয়ে যায়। রাতে বাড়ী যাবার পথে নিয়ে যায় | ৃমাাঝে মাঝে শ্বশুরের জন্য ফল ও তিনি যা যা খেতে ভালোবাসেন, নিয়ে আসে | বাবাকে তেল মালিশ করে সেঁক দেওয়া, মাকে সাহায্য করা চায়নার রোজকার রুটিন। অসুস্থ বাবা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে অনাদরে বড়ো হয়ে ওঠা মেয়ের দিকে। তার ভাঙা জীবনে ভাগ্যিস চর পড়েছে। আজ সেই চরেই তার ঘর,  তার বেঁচে থাকার স্বপ্নরা শেকড় গেড়েছে।