Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-সম্মাননা

নিবন্ধ
#On #line #class
✍সুজাতা মিথিলা
08.07. 20
করোনা আবহে class i এর বাচ্চা  থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ঘুম থেকে উঠে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত মুঠো ফোনে বন্দি যাপন।  কানে ইয়ার ফোন আর মোবাইল স্ক্রিনে টানা চোখ। টিউশন স্কুল  খে…


নিবন্ধ
#On #line #class
✍সুজাতা মিথিলা
08.07. 20
করোনা আবহে class i এর বাচ্চা  থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ঘুম থেকে উঠে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত মুঠো ফোনে বন্দি যাপন।  কানে ইয়ার ফোন আর মোবাইল স্ক্রিনে টানা চোখ। টিউশন স্কুল  খেলাধূলার জগৎ  সব  এক জায়গায় বসে মুঠো ফোনে।
  দশম একাদশ দ্বাদশ বা কলেজ পড়ুয়ারা হয়তো এই প্রযুক্তি নির্ভর পড়াশুনোয় উপকৃত হবে তবে আমি একজন পিছিয়ে থাকা মা ও সংবেদনশীল শিক্ষিকা হিসেবে এই ব্যবস্থাপনা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত  ছেলে মেয়েদের ক্ষেত্রে কতটা শুভ-- এ নিয়ে   সত্যিই  এক অদ্ভুত দোদুল্যমানতায় ভুগছি।  আমি রীতিমত শঙ্কিত।  একটা শিশু বা কিশোর দু তিন ঘণ্টা  মুঠো ফোনে চোখ রাখলে বা হেড ফোন ব্যবহার  করলে তার ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে তার শ্রবণ শক্তি কমে যেতে পারে এবং অবশ্যই  তার দৃষ্টি শক্তি  ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।   এছাড়া  আধকপালী বা মাইগ্রেনের সমস্যা  দেখা দিতে পারে। অসহ্য মাথা যন্ত্রণা  হওয়াটা অস্বাভাবিক  কিছু না। এছাড়া  মারণ ব্যধি ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে বা স্মৃতি শক্তি  হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া এই ব্যবস্থার প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ  স্হুলতার মতো রোগের  কবলে পড়ে অনায়াসে  নষ্ট  হতে চলেছে শৈশব বা কৈশোর।
     এতো গেল শিশু বা কিশোর কিশোরীদের  শারীরিক  ভাবে ক্ষতির সম্ভাবনার দিক।
  অন্যদিকে  এই লক ডাউনে যখন চরম আর্থিক মন্দার আঁচ প্রতিটি ঘরে এসে লাগছে সেই অবস্থায় বেসরকারি  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো প্রতিটি অভিভাবককে  এক একদিন এক একটা বাচ্চার জন্য  মিনিমাম  দু জিবি নেট বরাদ্দ  করতে বাধ্য  করছে।   প্রশ্ন  হল যে সমস্ত  বাবা মায়ের  একাধিক সন্তান  শিক্ষার্থী  তাদের পরিবারে শিক্ষার্থী পিছু একটা করে অ্যানরয়েড সেট এবং দু জিবি মিনিমাম  নেট উপরন্তু  বিদ্যালয়ের ফিজের ভার তাদের ওপর বরাদ্দ  হচ্ছে।  যা এই বিশ্ব জুড়ে চলা আর্থিক  মন্দার  সময়  ভীষণ রকম পীড়াদায়ক।
     আমি একজন  প্রত্যন্ত  গ্রামের সরকারি বিদ্যালয়ের   শিক্ষিকা হিসেবে  কোন অভিভাবক কে android সেট বা নেট কেনার কথা বলতে বা চাপিয়ে দিতে পারি নি বা পারবও  না। কারণ আমার স্কুল  catchment এর অধিকাংশ  পরিপার দিনমজুর  বা পরিযায়ী শ্রমিকের  তকমা ভুক্ত।
    তবে সরকারি বিদ্যালয়ের  শিক্ষক শিক্ষিকা হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে  প্রতিমুহূর্তে  মর্মবেদনা অনুভব করছি পুরো মাস কোন রকম পাঠদান না করে পারিশ্রমিক ঘরে তুলতে। কিন্তু  নিজের  বিবেক বোধ  থেকে তৈরী এই অতিমারির টিকা বা ওষধ আবিষ্কার  হলে আমার  প্রাণপ্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের জীবনের  নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হলে পূজো বা বড়দিন অবকাশে এমন কি শনিবারে পুরোদিন পাঠদান করে ছাত্র ছাত্রীদের এই অভাবনীয় ক্ষতি পূরণের আন্তরিক তাগিদ  অনুভব করছি।
    কোন রকম অর্থ নৈতিক  আরোপের মাধ্যমে  শৈশব কৈশোর কাড়া সর্বনাসা on line class এ পাঠদান কে সমর্থন  করতে পারলাম  না।
  বরং  প্রতি স্কুলে  অঙ্ক বা ইংরেজি  বা বিজ্ঞানের মতো শক্ত বিষয় গুলোর জন্য  প্রতি class  এর section  অনুসারে  নির্দিষ্ট  সময়  subject টিচারের help line নম্বর  দিয়ে  রাখলে ছাত্র ছাত্রীরা বাড়িতে  পড়তে গিয়ে হোঁচট খেলে ওই নম্বরে  subject  teacher এর পরামর্শ নিয়ে  self- study র মাধ্যমে বেশ কিছুটা এগোতে পারবে।এ ক্ষেত্রে খুব  অসুবিধায় what's  appএর সাহায্য  নেওয়া  যেতে পারে।
  তাতে সার্বিকভাবে  সর্ব স্তরের   ছাত্র ছাত্রীরা এই সংকটে এগোতে  পাড়বে বলেই আমার  ব্যক্তিগত ধারণা।
 খুবই ভয় হচ্ছে , এই মুঠো ফোন আগামী  প্রজন্মকে  অত্যাবশ্যক জিনিস  হিসেবে ভাবার অধিকার দিয়ে  আমরা বড়রা সজ্ঞানে blue whale এর মতো মারণ game এ addicted করে দিচ্ছি  না তো ?!
বা বড় বড়  সাইবার  ক্রাইমের  রাডারের  আওতাভুক্ত করতে যাচ্ছি  না তো আমরা পড়াশোনা নিয়ে অতিশয়  উদ্বিগ্ন  বাবা মায়েরা বা শিক্ষক  শিক্ষিকারা ?!

এর উত্তর মহাকাল দেবে। জানি না ততদিনে চরম  সর্বনাশের কিনারায়  আগামী প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছি কিনা নিজেদের অজান্তেই !?

যাইহোক  একজন সংবেদনশীল মা ও শিক্ষিকা হিসেবে আমার খোলামনের উদ্বেগ আশঙ্কা  প্রকাশ করলাম মাত্র।  ঠিক ভুলের নির্ণায়ক একমাত্র  মহাকাল।  অগত্যা উৎকন্ঠা ও অনন্ত  প্রতীক্ষায় একমাত্র  পথ আমার মতো সাবেক চিন্তাধারার মায়ের পক্ষে।
 কলমে সুজাতা মিথিলা
08.07.20