দিন বদলের পদাবলী প্রদীপ সেন আগরতলা, ১২/০৮/২০
পাগল কবিটা বলেছিল"চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায় "।সেদিন সদানন্দকে দেখা মাত্রইদুখু মিঞার কথাগুলো মনে পড়ল।বাড়ি বাড়ি তরিতরকারি ফেরি করতো সে। মাঝে মাঝেই আক্ষেপ করে বলত…
দিন বদলের পদাবলী
প্রদীপ সেন
আগরতলা, ১২/০৮/২০
পাগল কবিটা বলেছিল
"চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায় "।
সেদিন সদানন্দকে দেখা মাত্রই
দুখু মিঞার কথাগুলো মনে পড়ল।
বাড়ি বাড়ি তরিতরকারি ফেরি করতো সে।
মাঝে মাঝেই আক্ষেপ করে বলতো-
সদা দুঃখী আমি, নামের কী বাহার - সদানন্দ!
সেই সদানন্দ। দিন ফিরেছে তার
ছেলে আনন্দ আজ আর বেকার নয়
দেশের কাজে নেমেছে সে।
এলাকায় ডাকসাইটে কাউকে বলতে
ডানে বামে সামনে পেছনে-থাকা সব শালিকের এক রা-
আনন্দ, সদানন্দবাবুর ছেলে আনন্দ।
কয়েক বছর আগেও অনেকে সদানন্দকে সদা বলতো।
আজ তারাই তাকে বাড়তি তোয়াজ করে
আনন্দবাবুর বাবা বলে কথা!
কেজো আনন্দ আজ অনেক কিছুরই নিয়ন্ত্রক
তার দেশের কাজের ব্যাপ্তি অনেক দূর।
তারই পুরস্কারস্বরূপ
আলপথে খালপথে, চুঁয়ানো পথে লক্ষ্মী আসে ঘরে।
সেদিন সদানন্দের এক সময়ের বন্ধু
ফেরিওয়ালা অমূল্য গান্ধীমূর্তির ছায়ায় বসে
বাসী রুটি চিবোচ্ছিল বাতাসা যোগে।
মূর্তির মাথায়-বসা দাঁড়কাকটা রুটির আশায়
একটানা কেঁদে না জানি ক্রোধে হাঁকছিল কা-কা
অমূল্য এক টুকরো রুটি ছিঁড়ে ছুড়ে মারে।
কাকটা কৃতার্থ চিত্তে রুটি নিয়ে মূর্তির উপর দিয়ে উড়ে
কোথায় যেন নিরাপদ স্থানে চলে গেল।
অমূল্য দেখে সদানন্দ মস্ত এক বোয়াল মাছ নিয়ে
এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে বাড়ি যাচ্ছে।
অমূল্য দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে!
তার ছেলে রতন আনন্দেরই বয়েসি, পানের দোকান তার
অমূল্য ভাবে, তার ছেলেও যদি দেশের কাজে নামতো
তার ঘরেও বোয়াল ইলিশ ভেটকি ঢুকতো।
অমূল্য বোঝেনা ঘরে ঘরে অনটন যেখানে
সেখানে দেশের কাজে নেমেছে যারা, চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়ে তাদেরই তো দিন আজ
মহা রহস্যটা অনেকের মতো অ-মূল্যকে ভাবায়।
আশ্চর্য! মূর্তিটা সবকিছু চুপচাপ দেখে যাচ্ছে।
কত ফারাক সেদিনের আর এদিনের দেশের কাজে!