Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-সপ্তাহের-সেরা-সম্মাননা

(সাপ্তাহিক সেরা লেখনী প্রতিযোগিতা পর্ব ২০)# বিষয়– " বন্ধুত্বের অবমাননা"# তারিখ -- ২২/০৮/২০২০@ ✒️ শ্রাবনী পন্ডিত ✒️

@ কেন বাড়লে বয়স  ছোট্ট বেলার বন্ধু হারিয়ে যায় # কেন *বন্ধু* রা করে *বন্ধুত্বের* অবমাননা# @বাড়িয়ে দ…

 

(সাপ্তাহিক সেরা লেখনী প্রতিযোগিতা পর্ব ২০)

# বিষয়– " বন্ধুত্বের অবমাননা"

# তারিখ -- ২২/০৮/২০২০

@ ✒️ শ্রাবনী পন্ডিত ✒️



@ কেন বাড়লে বয়স  ছোট্ট বেলার বন্ধু হারিয়ে যায় # কেন *বন্ধু* রা করে *বন্ধুত্বের* অবমাননা# @বাড়িয়ে দাও তোমার হাত,,, আমি অনেকটা পথ তোমার সাথে হাঁটতে চাই,,,,,🤝🤝



" *বন্ধু* আর *বন্ধুত্ব*" -- এই দুটো শব্দ খুব ছোট হলেও গভীরতা অনেক বেশি। আচ্ছা, আমরা যাকে বা যাদের খুব ভালোবাসি, তাদের সবটুকু নিয়েই কি ভালোবাসি? যেমন ভাল-খারাপ, রাগ, অভিমান, দোষ-ত্রুটি, পছন্দ-অপছন্দের সবটুকুকেই কি আমরা ভালোবাসতে পারি? আমার মনে হয় না! (আমার মতামত সবার সাথে নাও মিলতে পারে)

     আমরা জ্ঞান হবার পর পরিবারের সবাইকে চেনার, জানার পর আরও একধাপ এগিয়ে যাদের সাথে পরিচিত হই,  তাদের আমরা সহজভাবেই *বন্ধু* বলে চিনি, জানি, মানিও। সেই বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব যত দিন, মাস, বছর ঘোরে -- ততই গাঢ় হয়, একে অপরের পরিপূরক হিসেবে রয়ে যেতে চাই ..., কিন্তু বাধ সাধে বয়স, মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যক্তিগত ভালো লাগা-খারাপ লাগার মূল্য যখন আমরা খুব গভীর ভাবে অনুধাবন করতে পারি, সঠিক বিচার বুদ্ধি বিবেচনাকে কাজে লাগিয়ে সঠিককে জানার বোঝার চেষ্টা করি,  ঠিক তখনি হয় যত গন্ডগোল। আর সে যদি হয় স্পষ্টবক্তা; নীতিবোধ, আদর্শকে সঙ্গী করে চলতে চায় তাহলে তার সেরকম ভাবে বন্ধুই থাকবে না,,কমতে শুরু করবেবন্ধুর সংখ্যা।  সব বন্ধুরাই ধীরে ধীরে মুখ ফেরাবে, পিছনে সমালোচনার ঝড় বইয়ে দেবে কারণ তুমি স্পষ্ট বক্তা,আর পাঁচ জনের থেকে একটু আলাদা মাপের তাই তুমি হবে একা, নিঃসঙ্গ -- বিচ্ছিন্ন জগতের একজন মানুষ যাকে তার বন্ধুরা এক লহমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে তাদের তালে তাল মেলাতে পারনি বলে।

      

জল যেমন জলেই সম্পৃক্ত হয় খুব সহজেই, কারণ তাদের ধর্ম একই -- তাই ঠিক তেমনই দুটো সুন্দর মনের মানুষই খুব ভালো বন্ধু হতে পারে বলে আমার ধারনা। মনের সাথে রুচি, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা -- এগুলো অনেকটা সাহায্য করে একটা সুস্থ সুন্দর সতেজ বন্ধুত্বকে সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করে জীবন সায়াহ্ন কালেও একে অপরকে তরুলতার মতো দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখতে। কিন্তু এমন *সুন্দর বন্ধুত্বের* আজ বড় আকাল দেখা যায়।


 বর্তমান পরিস্থিতি, পরিবেশ, সামাজিক প্রতিপত্তি মানুষের মনের সবুজকে গ্রাস করে নিয়েছে। তার পরিবর্তে নিরস রুক্ষ কঠিন একটা মনের সৃষ্টি করে সহায়তা করেছে! যার প্রমাণ আমরা প্রায়শই দেখতে পাই। আমরা যখনই যতবার বন্ধুর হাত ত্রাতা মনে করে, বিশ্বাস আর ভরসায় ধরতে যাই, তখনই সেই হাত কোন না কোন ভাবে ঘাতকের রুপ ধারণ করে কিছু না কিছু অঘটন ঘটিয়েই ছাড়ে।  দুটো *উদাহরণ* দিই আমার বক্তব্য সঠিক ভাবে তুলে ধরার জন্য।

# ধরুন, আপনি আমার বন্ধু। খুব বিশ্বাস করি আপনাকে। তো কোন এক বিষয়ে আপনাকে কিছু মনের কথা বললাম এই বিশ্বাসে যে আপনি সেকথা আপনার মনেই চেপে রাখবেন, কোনদিন আর কারুকে বলবেন না। কিন্তু আপনি কি করলেন! আপনি আমার বিশ্বাসের কোন মর্যাদা না দিয়ে সেসব কথা রঙ চড়িয়ে ফলাও বলে দিলেন অন্য কারুর কাছে। সে আবার আরো রঙ চড়িয়ে আরেক জনকে ...  এবং এইভাবে আমার সেই একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়টি সার্বজনীন হয়ে আমাকে বহুজনের কাছে পরিহাসের পাত্র করে তুললো। আপনি হয়তো নিখাদ মজা পেলেন! কিন্তু আমি?

     তেমনি আরেক রকম বন্ধুও আছে, যারা মুখে বলে যে খুব বিশ্বাস করে, কিন্তু আসলে সে কারুকেই বিশ্বাস করে না। আজ এসে "আপনাকে কিছু কথা বলে বলবে",, তোমাকে বিশ্বাস করে বললাম, কারুকে বলো না কিন্তু!" তার পরক্ষণেই নিজেই অন্য আরেক জনের কাছে গিয়ে আবার একই গল্প একই ভাবে পরিবেশন করবে। এমন অভিজ্ঞতা যখন হয়, যখন হয়েছে আমার, নিজেকে বড় হীন, বড় তুচ্ছ বলে মনে হয়েছে।

     

       কিন্তু ব্যাতিক্রমও আছে নিশ্চয়ই -- বিশ্বাস করে ধরা কোন কোন হাত কখনই বিশ্বাস ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়না। বরং আরো কঠোরভাবে দৃঢ়তার সাথে সকল কঠিন পরিস্থিতি থেকে ত্রাতার কাজ করে যায় নিঃস্বার্থ ভাবে, নিস্তব্ধে।

     

বন্ধুর বিশ্বাস-ভালবাসা, আশা-ভরসার মর্যাদা যে বা যারা দিতে পারে না, তাদের আর যাই বলা যাকনা কেন, *বন্ধু* বলা যায় না ... অন্তত আমি তো বলতে পারি না। তাদের বন্ধু না বলে *পরিচিত* বলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে নিজের মনে অন্তত কষ্ট বা আঘাতটা কম পাওয়া যায়। তাই তো আমি  একটা কবিতা লিখেছিলাম -----

  "আমার ইচ্ছে ছিল আঙ্গুল ছোঁব

নখ চুঁয়ে বিষের ধারা,,,,,।"

     যে হাতটাকে বিশ্বাস ভালোবাসার, আশা-ভরসার একটা সাহারা ভেবে আঁকড়ে ধরতে যাবে তুমি, ঠিক তখনই সেই হাতটাই সব স্বপ্নকে একলহমায় ধূলিসাৎ করে বন্ধুত্বের অবমাননা করতে পিছপা হয় না। তাই বন্ধু করবার আগে একটু ভেবে চিন্তে করাই ভালো।

     সবশেষে বলি, বন্ধু ছাড়া মানুষ থাকতে পারে না। বন্ধু ভেবে যদি কেউ কখনো একটুও ভরসার হাতটা ধরতে চায়, তাহলে দ্বিধা না করে বাড়িয়ে দেবেন আপনাদের মূলাবান হাতটা। ভালো বন্ধু হওয়া আর ভালো বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।।