১৯/৯/২০২০মিতালী বৈরাগীহুগলী€€€€€€€€€€€
প্রিয় চন্দননগর বি.এড কলেজ,
কেমন আছো তুমি? লকডাউনে খুব একা লাগছে বলো? এই কয়মাস আগেও, তোমার সুন্দর নক্সা করা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তোমার আদরের আত্মজারা হাসিমুখে নিজস্বী তুলতো। কোনো সাংস্কৃতিক অ…
১৯/৯/২০২০
মিতালী বৈরাগী
হুগলী
€€€€€€€€€€€
প্রিয়
চন্দননগর বি.এড কলেজ,
কেমন আছো তুমি? লকডাউনে খুব একা লাগছে বলো? এই কয়মাস আগেও, তোমার সুন্দর নক্সা করা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তোমার আদরের আত্মজারা হাসিমুখে নিজস্বী তুলতো। কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেই , দল বেঁধে লেগে যেত তোমাকে যত্ন করে সাজাতে, তোমাকে আল্পনার আলাপনে অলঙ্কৃত করতে। ষ্টেশনে ট্রেনের ঘোষণা শুনে যে তার বাড়ি যেত ঠিকই, কিন্তু পরম উৎসাহে অপেক্ষা করত আগামী দিন আবার তোমার রূপ কে দেখার। এইতো লকডাউন শুরুর আগেই প্রাক্তনীরা একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপ খুলে প্রস্তুতি নিচ্ছিল তোমাকে বাৎসরিক অনুষ্ঠানের দিন, সুরে সুর সুরঞ্জিত করার জন্য। তোমার বৃষ্টিস্নাতা রূপ, তোমার বাগানে রঙিন ফুলের আমন্ত্রণ, হোস্টেলের ছাদে শাখামৃগদের বৃষ্টিতে ভিজে দাপাদাপি, টিফিনের সময় সাদা রঙের একটি বিড়ালের প্রায়ই আমাদের ক্লাসরুমে এসে আমাদের গা ঘেঁষে আদর খাওয়ার ধান্দা, তোমার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা ভালবাসা-বন্ধুত্ব-আলোর পথের দিশা...সব কিছুর জন্য খুব মন খারাপ হয় জানো? তুমি তো আমাদের কাছে শুধুই ইঁট কাঠের স্মৃতিসৌধ নও... আমাদের কল্পনায়, তোমার একটা জীবিত অবয়ব আছে, যার সামনে কখনও আমরা মন খুলে কেঁদেছি, কখনও প্রাণভরে হেসেছি, স্যার ম্যাম দের বকুনি খেয়ে শেষ মুহূর্তে প্র্যাকটিকাম রেডি করেছি। তোমার প্রতিটি কোণায় আছে আমাদের মৃতপ্রায় মনকে ভালো করার জিওনকাঠি, মানুষের মত মানুষ হয়ে ওঠার অঙ্গীকার। শুধু শিক্ষাজীবন নয়, তুমি আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিজীবনের অভিযোগ-অনুযোগ-অভিমান এর অবসান ঘটানোর জন্যে দিয়েছ পরম আত্মীয়সম শিক্ষক শিক্ষিকা দের, যাঁরা সবসময় FRIEND PHILOSOPHER &GUIDE রূপে আমাদের পথ দেখিয়েছেন। হাতে ধরে শিখিয়েছেন কিভাবে টিচিং দিতে হয়। পৃথিবীর অসুখ সারলে আবার দেখা হবে তোমার সাথে। ততদিন আমাদের মত, তোমার সব আবেগ কে সামলে রেখো। ভালো থেকো তুমি কলেজ।
ইতি
মিতালী