পাক্ষিক অণুগল্প প্রতিযোগিতা ( পর্ব -২)
এই হাত ধরে ************মায়ের হাতটা মুঠিতে নিয়ে আজকাল ঘুমোয় ঈশিতা। ডাক্তার জবাব দিয়েছেন। গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট।ছমাস অনেক যুদ্ধের পর বাবা সেরে উঠলেও, মায়ের শরীরের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং আরো অব…
পাক্ষিক অণুগল্প প্রতিযোগিতা ( পর্ব -২)
এই হাত ধরে
************
মায়ের হাতটা মুঠিতে নিয়ে আজকাল ঘুমোয় ঈশিতা। ডাক্তার জবাব দিয়েছেন। গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট।ছমাস অনেক যুদ্ধের পর বাবা সেরে উঠলেও, মায়ের শরীরের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং আরো অবনতির দিকে এগিয়েছে।
সেদিন ড্রাইভিং সিটে মা। বাবা পেছনের সিটে কাগপত্র নিয়ে মিটিংয়ের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। একই অফিস। Department আলাদা। উল্টোদিক থেকে আসা ব্রেকফেল করা ট্রাকের ধাক্কায় ,গাড়ির সামনের দিক চুরমার হয়ে যায়। অফিসের কাছাকাছিই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিলো, পুলিশের কাছে খবর পেয়ে, সহকর্মীরাই হাসপতালে ভর্তি করেন।
মায়ের হাঁটাচলা বন্ধ সেদিন থেকেই। এখন কথাটুকুও। ভয়মাখা চোখে, ঈশিতার দিকে তাকান। ও হাতটা চেপে ধরলে, মা তবু একটু নিশ্চিন্ত হন।ঘুমোবার চেষ্টা করেন।
ঈশিতা ভাবে, এই হাত ধরে লাফাতে লাফাতে ও স্কুলে যেত । পরীক্ষা থাকলে , মা কপালে আদর করে, হাত ধরে একটু চাপ দিলেই, ঈশিতার সব ভয় চলে যেত। তারপর মিষ্টি হেসে , চোখ দিয়ে ইসারা করতেন ,
"এবারে ক্লাসে যাও"।
আজ ঈশিতা মাকে আশ্বাস দেয়,সেরে উঠবার। কিন্তু মা, ঠিকই বোঝেন, সবটাই মিথ্যে।
ঈশিতা ভাবে, কি অদ্ভুতভাবে চিত্রটা বদলে গেছে। মা যেন শিশু হয়ে গেছেন, আর ও, মা!
ঘুমের মধ্যে আজকাল মা চমকে ওঠেন আর সাথে সাথেই ঈশিতাও উঠে বসে।
আজ মা চমকে ওঠেননি, একভাবে ঘুমোচ্ছেন। ও তাই নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে সারাদিনের ক্লান্তিতে।
ভোরবেলায় ঘুম ভাঙে ঈশিতার ,মা তখনো ঘুমোচ্ছেন ওর হাত ধরে। ওকে জাগতে দেখে, ফুঁপিয়ে ওঠেন বাবা...
দেবযানী
5/9/20
(শব্দ সংখ্যা 200)