Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-সাপ্তাহিক-সেরা-সম্মাননা

◆সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা -২৩◆বিভাগ: গল্প (৩৪৫ শব্দ)◆গল্পের নাম : "বুবাইয়ের ঘুড়ি ওড়ানো"✍সুস্মিতা মালাকার ঘোষ       (০৯.০৯.২০২০)
          বুবাইয়ের মনটা এবার  ভীষণ খারাপ। মাস তিনেক আগে হঠাৎই বাবাকে হারিয়েছে সে। বছর-দশেকে…

 


◆সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা -২৩

◆বিভাগ: গল্প (৩৪৫ শব্দ)

◆গল্পের নাম : "বুবাইয়ের ঘুড়ি ওড়ানো"

✍সুস্মিতা মালাকার ঘোষ

       (০৯.০৯.২০২০)


          বুবাইয়ের মনটা এবার  ভীষণ খারাপ। মাস তিনেক আগে হঠাৎই বাবাকে হারিয়েছে সে। বছর-দশেকের বুবাইয়ের বেশ কিছুদিন বুঝতে সময় লেগেছিল যে, সকালবেলায় অফিসে যাবার সময় মিষ্টি হেসে হাত নাড়তে নাড়তে বেরোনো বাবা কেন ফুল-মালায় সেজে বিকেল বেলায় চোখ বুজে বাড়ি ফিরলো। এরপর কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে বিদায় জানানো এবং তার পরের ক্রিয়াকর্ম এসব এখনো স্মৃতিতে উজ্জ্বল তার। পরে শুনেছিলো সে,কানে ফোন নিয়ে রাস্তা পেরোতে গিয়ে একটা লরির ধাক্কায়  বাবা তাদের ছেড়ে চিরকালের মতো চলে গেছে।

    

      বাবা-ই প্রতিবছর বিশ্বকর্মা পুজোর আগে নিজের হাতে ঘুড়ি বানিয়ে দিতো তাকে। রঙ-বেরঙের,খুব কায়দা করে বাবার  বানানো ঘুড়িই এতদিন উড়িয়েছে সে। এবার তো আর তা হবে না, তাই তার খুব মন খারাপ।সে শুনেছে যে তার বাবা এখন আকাশে থাকে। বুবাই তার বাবার জন্য কাঁচা হাতে কাঁপা-কাঁপা অক্ষরে পেন্সিল দিয়ে একটা চিঠি লিখেছে, যাতে সে জানতে চেয়েছে তাকে ছেড়ে  তার বাবা কেমন আছে ওখানে।সে যে তার বাবাকে ছেড়ে একটুও ভালো নেই সেকথাও জানাতে ভোলে নি সে। এখন তার ভাবনা যদি একটা ঘুড়িতে এই চিঠিটা লাগিয়ে বাবার কাছে পাঠানো যেত তবে কি ভালোই না হতো। কিন্তু মাকে সে কী করে বলবে যে তার একটা ঘুড়ি চাই। এমনিতেই বাবা চলে যাবার পর মা তাকে নিয়ে খুব কষ্ট করে সংসার চালায়। পাড়ার বন্ধুরা একে একে এসে তাকে নিজেদের ঘুড়ি দেখিয়ে গেছে। সেও ওগুলো দেখে চুপচাপ  নিজের কষ্ট লুকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। 


       বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সে দেখে যে তার বালিশের পাশে রাখা আছে খুব সুন্দর একটা ঘুড়ি আর তাতে লাগানো রয়েছে সেই চিঠিটা যেটা সে খুব যত্নে লুকিয়ে রেখেছিল অঙ্কের  বইয়ের মধ্যে। খুশিতে লাফিয়ে উঠলো সে। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তার মা নিজের চোখের জল লুকোলো কোনো মতে। ক'দিন ধরেই সে দেখেছিল ছেলের মনমরা মুখটি আর লুকিয়ে লুকিয়ে বাবাকে লেখা চিঠিটাও পড়েছিল সে। তাই ছেলে ঘুমিয়ে পড়ার পর নিজের হাতে ঘুড়ি বানিয়ে তাতে চিঠিটা লাগিয়েছিলো সে। আজ ছেলের চোখে মুখে খুশির ঝলক দেখে একটু হলেও নিজের দুঃখ ভোলার চেষ্টা করল সে।


        বিকেল বেলায় সামনের মাঠে গিয়ে খুব আনন্দের সঙ্গে বুবাই তার ঘুড়িটা আকাশে ওড়ালো এই আশায় যে চিঠিটা নিশ্চয়ই তার বাবার কাছে পৌছবে আর তার মা দূর থেকে ছেলেকে দেখে বিশ্বকর্মার উদ্দেশ্যে প্রণাম জানিয়ে ছেলের মঙ্গল কামনা করলো।