ভোরাই : আত্মপক্ষের সেলফি
পাশাপাশি বৃক্ষসারির আকার নিয়ে আকাশের কোন মাথাব্যথা নেই । তবুও দেখুন গাছ এঁকেছি ; গাছ লাগিয়েছি । কৃষ্ণের হাতে বাঁশি দিয়ে সেই বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে বাজাতে চেষ্টা করেছি । বাজাতে পারিনি ; চাঁদ উঠলে সেই গাছ…
ভোরাই : আত্মপক্ষের সেলফি
পাশাপাশি বৃক্ষসারির আকার নিয়ে আকাশের কোন মাথাব্যথা নেই । তবুও দেখুন গাছ এঁকেছি ; গাছ লাগিয়েছি । কৃষ্ণের হাতে বাঁশি দিয়ে সেই বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে বাজাতে চেষ্টা করেছি । বাজাতে পারিনি ; চাঁদ উঠলে সেই গাছের আড়ালে বাদুড়ের উড়ে যাওয়া দেখেছি নির্জনতার ভয় নিয়ে ।
এই নির্জনতাই অধিকার করে আছে সমস্ত অনু , সমস্ত পরমানু । অধিকার তার রক্তনালি , অধিকার তার কোশ - কোশান্তর । আমি তার অচেনা সময় । কৃষ্ণপক্ষের পূর্ণতায় ভাসতে থাকে ঋতু-মাস-দিন । তাদের মাঝে সব ভাব আবর্তিত । আমাদের দিন কাটে কনফিউশানে । তাদেরই যোগফলে যে বক্ররেখা , তাতে ফুটে ওঠে বাসনা কামনা ; সম্পূর্ণ শতাংশের মোজাইক ইমেজ । ভিন্ন স্বতন্ত্র কিন্তু অর্কেস্ট্রায় অন্তঃশীল । অনিয়মিত আকৃতি নিয়ে নিজের মতো ধ্যানী , জ্বলবে বলে জেগে থাকে সারা আহ্নিককাল ।
সেই আকারের মধ্যে আমি খুঁজতে থাকি আমার অলিন্দ , আমার নিলয় । এর মাঝে যদি বাতাস বইতে শুরু করে তবে সেই আকারের কিনারায় কতকগুলো রং খেলা করে । রামধনুর মধ্যে নেই সে রং - সে এক অষ্টম রং -
আকাশের সাথে বৃক্ষরাও কথা বলে নীরবতার সেই রঙে ।
আমার ভেজা কাকের অপেক্ষা বড় ভালো লাগে । তাই বলে কাক আমার একার - তা বলব কেন ? সকলের মতো আমিও পড়েছি দার্শনিক কাকের তৃষ্ণা মেটানোর সাথে নুড়ি ও কলসির সম্পর্ক - তার সাথে খাঁখাঁ গ্রীষ্মকাল ; তীক্ষ তরঙ্গের স্পন্দমান শরীর । এই তো প্রতীতি - পথে পথে ধুলোর মতো এই তো পৃথিবীর অফুরন্ত ভাণ্ডার !
কী আশ্চর্য ! পদ্মকে ভুলে যাচ্ছি কেন ?
শ্মশান পুকুর যে এককালে পদ্মপুকুর ছিল সে কথা ভোলার কথা নয় কখনোই । ঠাকুর্দাকে দাহ করে তাকিয়ে ছিলাম ফুটন্ত পদ্মের দিকে - পোড়া ধূপের শব্দের হাত ধরে আত্মস্বর ভেসে যাচ্ছিল পরম স্বরূপে ।
তবে তো শুরু হল শুয়োঁপোকার সম্ভাবনাময় দিন । জেনে রাখা ভালো - এসবই আত্মপক্ষের পক্ষে সেজে ওঠে বিউটি লাগানো এক একটি সেলফি ।
যেমন হওয়া উচিত - যেকোন সময় আমি ফুরিয়ে যেতে পারি । আর কিছু পুরোনো প্রদীপ তুমি , যেমন করে চলে যাও চলে যেতে পারো - রাতের গায়ে তোমার গন্ধ লেগে থাক ।
পাখিরা গান গাইতে গাইতে স্নিগ্ধ হয়ে উঠছে , শুরু করে দিয়েছে পিরিতি মায়া - আহা বসুন্ধরা !
আমি কি তর্পণকে ভয় পাবো এবার ?
ভয় পাবো নদীকে - মাটিকে ; আমার পিতামহ প্রপিতামহকে ?
তুমি জগৎপ্রভা - তোমাকে প্রণাম হে । তুমি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ - তোমাকে প্রণাম । তোমার হাত শক্তিময় - তোমাকে প্রণাম। তুমি নীলগ্রীবা ভালোবাসা - তোমাকেও প্রণাম ।
লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
মহালয়া
১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২০, রাত ৩টা ৪০ মিনিট ।