: জীবনের মায়ারোজী নাথ
সামান্য এই আটপৌরে জীবন কত কি শেখায় -----কখনও মোহনায় অনাবিল খুশির বন্যা বয়ে যায়;আবার কখনও মরিচিকাময় ধূ ধূ মরুভূমি।
জীবনের প্রতিটি চেনা মোড়ে কতই না আলোছায়ারমায়াজাল।
কখনও জীবন আটকে পড়ে চিলেকোঠায় একচিল…
: জীবনের মায়া
রোজী নাথ
সামান্য এই আটপৌরে জীবন কত কি শেখায় -----
কখনও মোহনায় অনাবিল খুশির বন্যা বয়ে যায়;
আবার কখনও মরিচিকাময় ধূ ধূ মরুভূমি।
জীবনের প্রতিটি চেনা মোড়ে কতই না আলোছায়ার
মায়াজাল।
কখনও জীবন আটকে পড়ে চিলেকোঠায় একচিলতে আকাশের নীচে নির্বিকার তারা আর একফালি চাঁদের আলো মেখে।
বারান্দার মরচে ধরা গ্রীলের ফাঁকে আজ আমার জীবন , এ যেন আমার নিঃস্বঙ্গের একা পৃথিবী।
কৈশোর বেলার ভীষন দুরন্ত সেই ডানপিটে জীবন আর যৌবনের দোলনায় দোল খাওয়া রঙিন ভূবন এসব আজ ধূসর রঙের নীচে ছাইচাপা
চশমার ঘষা কাঁচে সবই ঘোলাটে অতীত ।
ফেলে আসা সেই চনমনে রামধনু দিনগুলো এখন নেহাতই জলছবি অ্যলবাম।
এই নির্জনবেলার আঁচলের গাঁটে বাঁধা কবিতাই এখন পরম সুখের সহায়।
সকালের বিরহী বারান্দায় দু-একটি চড়ুই শালিকের দলছুট আনাগোনা নীরব বুকের আনাচেকানাচে প্রাণের স্পন্দন দিয়ে যায়।
যে বিশাল ভরষার কাঁধে মাথা রেখে বেমালুম তন্রাসুখের দূরপাল্লার যাত্রী হতে পারতাম সেও তো আজ অতীতের হারিয়ে যাওয়া আকাশ।
কোলবালিশের পাশ ঘেঁষে জীবনটা যেন আজ হুইলচেয়ারের জাদুঘর।
হাড়ভাঙ্গা পুরোনো সেই বটগাছের কোনো এক সংগ্রামী ডাল বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছে জোগায়।
সযত্নে পোষা প্রিয় কুকুরটাও আদর আর খাবারের নামমাত্র বিনিময়ে আমাকে জড়িয়ে জীবনের মায়া বাড়ায়।
:**********************
একটুই হোক বিদায়ের আগে
রোজী নাথ
ছেলেটি কাছে ছুঁয়ে থাকার কথাই বলেছিল, তবে কেন উড়ো পাখির মতো সুদূর মেখে চলে গেল?
আজ সকল কথারাই শীতের শেষের ঝরাপাতা।
বিবর্ণতায় মলিন চারপাশে পুরোনো প্রতিশ্রুতি প্রতিধ্বনিত হয়।
কোথাও কেউ হাত ধরে নেই , শুধু একটা প্রশ্নেরই আসা-যাওয়া ,' তবে কি সে মিথ্যেবাদী প্রবঞ্চক ছিল?"
হয়তো সে অন্য কোনো মনের গলিতে আলোপথ রচনা করে নিয়েছে।
ভীষন রকম সুখে কিংবা কারো হৃদয়ের বাহির ঘরেই থাকুক না কেনো, সে আমার ভিতর ঘরেরই বিগ্রহ ।
কত বসন্তপথ পেরিয়েও সে আমার ঝরা সন্ধ্যার ধ্রুবতারা; বার বার অনুভবে খুঁজে পাওয়া প্রিয় প্রান্তর।
সকল সুদুরতার সীমানা পেরিয়ে সে আবারও ফিরে আসুক আমার এই শেষ বেলার বালিয়াড়িতে ; আমার চিরবিদায়ের পথে শেষ স্পর্শটা এঁকে দিতে।
**********************
: নদীর কথা
রোজী নাথ
সবুজ ছবির বুকে বুকে চলতি সে এক স্রোত
শতেক মোড়ের নীরবতায় জড়িয়ে থাকা পথ।
চোখের পাতায় মনভুলানো এমন সীমানা
পাহাড়বাঁকে জড়িয়ে রাখা আপন ঠিকানা।
সমুদ্রে যায় বহতা ধারা নিয়ম করা পথে
বিচিত্র সব ভূগোল ছুঁয়েই নিজের গতিতে।
বর্ষা এলেই খরস্রোতার ভাঙনপ্রবণ মন
নদী তখন সব ভাসিয়ে নিষ্ঠুর একজন।
শরীর যে তার প্রশস্থ হয় জলের বহর নিয়ে
অকাতরে সে তখনই এপার-ওপার ভাঙে।
বিচিত্র সব রূপের বাহার চলার পথে পথে
গ্রাম পাহাড়ের সখ্যতা হয় নীরব জলের সাথে।
জল থৈ থৈ ঢেউয়ের বুকে যৌবনও গায় গান
তার গভীরেই বেঁচে থাকে হরেক রকম প্রাণ।
শহর গড়ার প্রাচীন ছড়া এই জলেতেই লেখা
নদী তুমি চিরকালই বুকের অঢেল কথা।