নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: চারিদিকে করোনা আতঙ্কে ত্রাহি ত্রাহি রব। এমন অবস্থায় পরিত্রান পেতে তাই এবার করোনাসুর নাশিনী দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হচ্ছেন ভক্তরা। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাই অভিনব এই দুর্গাপ্রতিমা দেখতে কচিকাঁচাদের ভিড…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: চারিদিকে করোনা আতঙ্কে ত্রাহি ত্রাহি রব। এমন অবস্থায় পরিত্রান পেতে তাই এবার করোনাসুর নাশিনী দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হচ্ছেন ভক্তরা। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাই অভিনব এই দুর্গাপ্রতিমা দেখতে কচিকাঁচাদের ভিড় পড়েছে তমলুকের কুমোরটুলি পাড়ায়।
হাতেগোনা মাঝে আর কয়েকটা দিন। মহালায়া পর্বের ধরে এবারের দুর্গা পুজো কিছুটা বিলম্ব হলেও করোনা পরিস্থিতিতে এই দুর্গাপূজার প্রস্তুতি কিন্তু চলছে ধাপে ধাপে। যার প্রাথমিক পর্যায়ে হিসেবে সর্বত্রই প্রতিমা গড়ার কাজ ও এখন প্রায় শেষের পথেই। সিংহভাগ সাবেকি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করা হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য থিমের পুজো বেশ প্রাধান্য পাচ্ছে। আর তারই দৃষ্টান্ত হিসেবে এবারে মণ্ডপে দেখা যাবে মা দূর্গতি নাশিনী দেবী দুর্গাকে করোনাসুর নাশিনী হিসেবে। তমলুকের হলদিয়া মেছাদা রাজ্য সড়কের পাশেই আসতারা এলাকায় এমনই এক দুর্গা প্রতিমা ঘিরে তৎপরতা তুঙ্গে মৃৎশিল্পীদের। চলছে শেষ পর্যায়ের প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ। হাতের তুলির টানে শেষ প্রলেপ দিতে প্রস্তুত প্রতিমা শিল্পীর কারিগরেরা। প্রায় ১১ফুট উচ্চতা এবং১৫ ফুট চওড়া। থিম করোনাসুর সন্ন্যাসিনী দেবী দুর্গা। সম্পূর্ণ মাটির এবং রঙের ওপর তৈরি এই থিমের এই প্রতিমা। তবে আপাত দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে ফাইবারের কাজ রয়েছে এই দুর্গা প্রতিমাতে। কিন্তু করোনার ঠেলায় এই অভিনব থিমের করোনাসুর নাশিনী দেবী দুর্গা প্রতিমার দাম মাত্র ৪০হাজার টাকা। একেবারে হাতের নাগালে। যেখানে দেবী দুর্গা দুই হাতে ত্রিশূল দিয়ে করানো শুরু করছেন বলে দেখা যাচ্ছে। তবে মা থাকছেন একেবারে সাবেকি গৃহবধু রূপেই। মাথায় ঘোমটা দেওয়া। তাই এক্ষেত্রে করোনা সতর্কতাঃ সচেতনতা হিসেবে দেবী দুর্গার তার নিজে ছেলেমেয়েদের অর্থাৎ লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক ও স্বরস্বতীর হাত ধরেই রয়েছেন।
প্রতিমা শিল্পী অনুপ ঘোড়াই বলেন, পাশের হাওড়া জেলার ফুলেশ্বর এর একটি দুর্গা মন্ডপে করোনা নাশিনী দুর্গা প্রতিমার আরাধনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মূলত, করোনা সচেতনতায় মা দুর্গার এমন রূপ শৈল্পিক কার্যকলাপের ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা আতঙ্কের মাঝে চলতি বছর পূজো পার্বণ প্রস্তুতি নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তবে দীর্ঘ প্রায় সাত মাস লকডাউনের পর বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিকের পথে। এর জেরে তাই তেমনভাবে থিমের পুজোর প্রস্তুতি হিসেবে কাজকর্ম গুছিয়ে উঠতে পারেননি অধিকাংশ পূজা উদ্যোক্তারা। স্বাভাবিকভাবেই ধাক্কা খেয়েছে এবারের থিমের পুজো। ফলে এবছর থিমের পুজোর বরাত একেবারেই নেই বললেই চলে। তাই হাতেগোনা এমন দু-একটি থিমের প্রতিমা দেখতে স্বাভাবিকভাবেই বিরুদ্ধে পড়েছে তমলুকের কুমোরটুলি পাড়ায়।