Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

অন্য পুজোর গল্প - ভালো নেই আমার দুর্গারা

তরুন চট্টোপাধ্যায় অন্য দুর্গার কথা লিখতে গিয়ে কত দুর্গা ই চলে আসছে চোখের ওপরে।কাকে ছেড়ে কাকে রাখি।বাদ বিচার করে তো আর আমার দুর্গা লেখা যায় না।অন্য পুজো এই শিরোনামে অনেক বন্ধু কেই লিখতে অনুরোধ করেছিলাম ।কেউ কেউ লিখেছেন।কেউ এখনো লি…

 


তরুন চট্টোপাধ্যায়

অন্য দুর্গার কথা লিখতে গিয়ে কত দুর্গা ই চলে আসছে চোখের ওপরে।কাকে ছেড়ে কাকে রাখি।বাদ বিচার করে তো আর আমার দুর্গা লেখা যায় না।অন্য পুজো এই শিরোনামে অনেক বন্ধু কেই লিখতে অনুরোধ করেছিলাম ।কেউ কেউ লিখেছেন।কেউ এখনো লিখছেন।আসল উদ্দেশ্য ছিল এই ফাঁকে আরো দুর্গার সুলুক সন্ধান ।আমরা চারটি দিন তো মন্ডপে মন্ডপে একই দুর্গা দেখে আসছি।অসুর নিধনী দুর্গা মাকে।কোথাও কোথাও থিমের দুর্গা ও চোখে পড়ে।এ বছর অবশ্য মহামারী ।তাই সে ভাবে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে দুর্গা দেখা হয়নি।তবে পথে ঘাটে দেখেছি অনেক দুর্গা কে হাত পাততে।কাউকে কাউকে আনাজ, মাছ বা ফল নিয়ে বসতে।অষ্টমীর রাতে একবার ঢুঁ মেরেছি কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে।উদ্দেশ্য অন্য কিছু নয় আমার দুর্গা রাও আছেন ওখানে ।পুলিশের চোখ পড়েছিল আমার ওপরেও।কিন্তু কোম্পানির দেওয়া সাংবাদিক কার্ড টি গলায় ঝোলানো ছিল বলে কেউ আর কিছু বলেননি।লক ডাউনের এই পরিস্থিতি তে তাঁরা ও ভালো নেই।আসলে প্রাচীন এই পেশা তেও মন্দার হাওয়া ।তবে বৌ বাজারের রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেখা পেয়েছি এনাদের।তবে মন আর মুখ মেপে বুঝেছি সুখে নেই।থাকার কথাও নেই।কাজ হারানোর এই যুগে এঁদের ও তো কাজ গেছে।না হলে তো পুজার বাজারে কাঞ্চন মুদ্রা আসতো।

কাজের মেয়ে দের কাজ বন্ধ হয়েছিল পুজোর আগে থেকেই।লকডাউন এর নোটিস পাওয়ার পর থেকেই কাজ বন্ধ ।বাইরের লোক ঘরে ঢুকলে সঙ্গে ভাইরাস আসার সম্ভাবনা ।তাই।ফলে কাজ হারিয়ে ছিলেন সেই দুর্গা রাও।এছাড়া অনেক দুর্গা ই আসেন ট্রেনে চেপে।সেই ট্রেন ও তো আজও বন্ধ ।এরকম কত ঘটনার চাক্ষুষ হতে হয়েছে প্রতিবেদক কে।

তবে সব থেকে উল্লেখ যোগ্য ঘটনার কথা আজও মনে আছে।সে সময় পুজোর কদিন নেশা ছিল বিভিন্ন জেলাতে ঘুরে বেড়ানোর।আর ঘুরে ঘুরে দুর্গার সন্ধান ।সে বার গেছি পুরুলিয়া ।একসময় পেশাগত কারনে এই জেলাতে কাটিয়েছি অনেকদিন।অযোধ্যা পাহাড়ের নিচে বেশ কিছু চেনা মানুষের সঙ্গে গল্প করছি।

মাথায় কাঠের বোঝা নিয়ে নামছেন একদল আদিবাসী রমনী।সন্ধ্যা নামছে তখন।আমার সেই দুর্গা দের মাথায় ভর্তি জ্বালানি কাঠ।

নীচে দাঁড়িয়ে দরদাম করছে কিছু মানুষ সেই কাঠের।আর সে দামের কথা মনে আসতে কেমন যেন মন খারাপ হয়ে গেল।

রমনীদের কেটে আনা সব কাঠ বিক্রি হলো দশ টাকায় ।যা তাঁরা সংগ্রহ করেছিলেন ভোর থেকে।

না দুর্গা রা ভালো নেই।

দলিত রমনীদের ধর্ষিত হবার খবর আমাকে ও লিখতে হয়।দু চারদিন চর্চা ও চলে।মিছিল মিটিং ।কোথাও বা মোমবাতি মিছিল।

দেশ জুড়ে দুর্গা রা এভাবেই লাঞ্ছিত হবার ঘটনা তো এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা।

এর পরেও কি করে বলি, আমার দুর্গা ভালো আছে।