করোন আবহে তমলুকের প্রাচীন দুর্গোৎসবজয়দীপ পন্ডা রামসীতা বারোয়ারি বাজার কমিটির শতবর্ষ ঐতিহ্যবাহী দুর্গোৎসব।বর্তমান করোনা ভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্ত রকম সমস্ত রকম নির্দেশ মেনে এবারে দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ।দুর্গা পুজো কম…
করোন আবহে তমলুকের প্রাচীন দুর্গোৎসব
জয়দীপ পন্ডা
রামসীতা বারোয়ারি বাজার কমিটির শতবর্ষ ঐতিহ্যবাহী দুর্গোৎসব।
বর্তমান করোনা ভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্ত রকম সমস্ত রকম নির্দেশ মেনে এবারে দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ।দুর্গা পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক শ্রী ভবানী মাইতি মহাশয় জানালেন , " আমাদের মন্দিরে দেবীর স্থায়ী মন্ডপ রয়েছে। এবারে একটি মন্দিরের ভেতর দুটো ব্যারিকেড থাকবে । একটি পথ দিয়ে দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রতিমা দর্শনে প্রবেশ করবে। আর অপর পথ দিয়ে প্রস্থান করবেন। প্রবেশ পথে স্যানিটাইজার চ্যানেল থাকবে । শুধু তাই নয় কয়েকজন ভলেন্টিয়ার থাকবেন। তারা সবার থার্মাল চেকিং করবেন। একসঙ্গে পনেরো-কুড়ি জন মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন । সামাজিক দূরত্ব মেনে চিহ্নিত স্থান দিয়ে দর্শনার্থীরা এবারে মণ্ডপে প্রবেশ করবেন। পূজামণ্ডপে শুধুমাত্র পুরোহিত থাকবেন পুষ্পাঞ্জলী সরকারি নির্দেশ মেনে হবে । ঝুড়িতে ফল স্যানিটাইজ করে রাখা থাকবে। পুষ্পাঞ্জলী হয়ে গেলে সেই ফুল পুরোহিত ও মায়ের চরণে নিবেদন করবেন।
উপদেষ্টা নিমাই পাল মহাশয় বলেন, " পর্যাপ্ত পরিমাণে মাক্স থাকবে দর্শনার্থীদের দেওয়ার জন্য। এছাড়া একজন চিকিৎসক রাখার ব্যবস্থা রয়েছে যিনি 24 ঘন্টা উপস্থিত থাকবেন"।
রাজাবাজার আদি সার্বজনীন দুর্গোৎসব
পুজোর অন্যতম কর্ণধার দীপেন্দ্র নারায়ন রায় বলেন ,"সরকারি নির্দেশ আমরা এখনো হাতে পায়নি। তা পেলে আমরা মেনে চলবো । এবারের বাজেট ছিল ছয় লক্ষ টাকা । কিন্তু করোনা আবহে তা কাট-ছাট হয়ে চার লক্ষ হয়েছে। এবারে আমাদের পুজোর উদ্বোধন পশ্চিম বাংলার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি হাত ধরে হয়ে গিয়েছে ভার্চুয়াল উদ্বোধন । এবারে কুমারী পুজো বন্ধ থাকবে তবে আমরা অষ্টমীর ভোগ বিতরণ করব। স্যানিটাইজ করা হবে প্রতিনিয়ত। দর্শনার্থীদের মাক্স বিতরণ করা হবে। এবারে আমরা অন্যান্য ক্লাব দের উৎসব কমিটি হতে স্যানিটাইজার ও মাক্স বিতরণ করেছি।
অল স্টার সার্বজনীন দুর্গোৎসব
এবারের অন্যতম কর্মকর্তা অরিন্দম চক্রবর্তী জানান , "এবারের বাজেট প্রায় তিন লক্ষ টাকা। করোনা আবহে সমস্ত রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এবারে কুমারী পূজা , প্রসাদ বিতরণ বন্ধ থাকবে । এবারে দেবীকে কাটা ফলের বদলে গোটা ফল নিবেদন করা হবে ।দর্শনার্থীদের স্যানিটাইজ হয়ে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া দর্শনার্থীদের মাস্ক বিলি করা হবে। সমস্ত রকম সরকারি বিধি নিষেধ মেনে এবারে পুজো হবে। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিকে নজর দেবো।
ওয়ান হাটেড ক্লাব
সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন দর্শনার্থীরা এবারে মণ্ডপে বাইরে থেকে প্রতিমা দর্শন করবেন । এবারে পুষ্পাঞ্জলী বন্ধ থাকবে। ভোগ বিতরণ কর্মসূচী বন্ধ থাকবে । নবপত্রিকা স্নান ঘট ডোবান এবার ভিড় এড়াতে গঙ্গা জল দিয়ে মণ্ডপেই হবে । মণ্ডপে ব্রাম্ভন থাকবেন 4 জন। এছাড়া থাকবেন 15 জন স্বেচ্ছাসেবক, এরা মন্ডপের স্যানিটাইজেশন এর কাজ করবেন। এবারে কোন বয়স্ক ব্যক্তি মণ্ডপে থাকবেন না। দেবীকে গোটা ফল বাতাসা আলতা সিঁদুর কাপড় স্যানিটাইজার করে দেওয়া হবে। এবারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এবারের বাজেট ও তাই কাট-ছাট 15 লক্ষ টাকা বাজেট ছিল কিন্তু এবার 5 লক্ষ টাকাতে পুজো সারা হবে।
তাম্রলিপ্ত অ্যাথলেটিক ক্লাব
অন্যতম দুর্গোৎসব কর্মকর্তাদেবব্রত জানা বলেন, বাজেট ছিল তিন লক্ষ টাকা কিন্তু তা কমিয়ে দেড় লক্ষ টাকা করা হয়েছে। পুজোতে পুষ্পাঞ্জলী দেওয়া বন্ধ ।হয়েছে কুমারী পূজা বন্ধ। ঘট প্রশেসন ও সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে । এবারে শুধুমাত্র ঠাকুরের ভোগ হবে তবে সাধারণের হবেনা সরকারি নির্দেশ মেনে আমাদের সমস্ত কর্মসূচি নেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত সরকারি নির্দেশ আমাদের কাছে এসে পৌঁছয় নি। পূজা চলাকালীন স্যানিটাইজেশন করা হবে ।ফুল বেলপাতা ফল ও নিবেদন করা হবে । এছাড়া দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত করা হবে পর্যাপ্ত মাক্স বিতরণ করা।
মানিকতলা দুর্গা মন্দির সমাজ কল্যাণ সমিতি
সম্পাদক অপূর্ব রবি বেরা বলেন, বাজেট ছিল চার লক্ষ টাকা। কিন্তু তা তিন লক্ষ টাকা করা হয়েছে। মন্দিরে প্রবেশের আগেই নো এন্ট্রি' বোর্ড থাকবে এবং ব্যারিকেড করে দেওয়া হবে। দর্শনার্থীদের স্যানিটাইজার দেওয়া হবে । এবারে ভোগ পুষ্পাঞ্জলী কুমারী পূজার প্রসাদ বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে দেবীকে এবার গোটা ফল দেওয়া হবে সরকারি গাইডলাইন মেনে সমস্ত অনুষ্ঠান পরিচালিত হবে।
স্টীমারঘাট পল্লী ও ব্রাইট ফিউচার
সম্পাদক বৈদ্যনাথ সিনহা জানালেন, সরকারি নির্দেশ মেনেই আমরা ব্যবস্থা করব। মন্ডপে প্রবেশ করার আগে স্যানিটাইজ এবং মাস্ক দেওয়া হবে। যেহেতু এটা খোলা মন্ডপ নয়, তাই বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে দর্শনার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য। ডিসটেন্স মেইনটেইন করার জন্য রাউন্ড করে দাগ কেটে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এখানে মায়ের অকাল বোধন পুজো হয় এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্য কুমারী পুজো। কুমারী পুজো হবে, কিন্তু কোন প্রশেসন হবে না। অঞ্জলি ও হবে সরকারি বিধি নিষেধ মেনে। অঞ্জলি দেওয়ার ফুল স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা থাকবে। করোনা পরিস্থিতির জন্য অন্যান্য বছরের থেকে এবারের বাজেট ও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।