Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি- সাহিত্য-পত্রিকার-অ্যাডমিন-সম্মাননা

#আমার_মেয়েবেলাকত‌ই আনন্দের ছিলো সেই দিন গুলো, যদি আবার ফিরে পেতাম। আমার সেই মেয়েবেলা, ছোট থেকে বড় হ‌ওয়ার প্রতিটা ধাপ। মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়া,মায়ের হাতে নানান ধরণের রান্না। বাবার সাথে ঘুরতে যাওয়া, ফুচকা খাওয়া, আর যত্ত আব্দার।…

 


#আমার_মেয়েবেলা

কত‌ই আনন্দের ছিলো সেই দিন গুলো, যদি আবার ফিরে পেতাম। 

আমার সেই মেয়েবেলা, ছোট থেকে বড় হ‌ওয়ার প্রতিটা ধাপ। 

মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়া,মায়ের হাতে নানান ধরণের রান্না। 

বাবার সাথে ঘুরতে যাওয়া, ফুচকা খাওয়া, আর যত্ত আব্দার। 

আর ছিলো ছোট ভাই বোনের সাথে খুনসুটি। 

ভালো মোটেও ছিলাম না আমি, একটুতেই রাগ আর চোখ দিয়ে টপটপ জলের ধারা। 

মা বলতো ছিঁচকাঁদুনে, ঠাম্মা বলতো বাপের আদরিনী। 


পাড়ায় ছিলাম আমরা সাত মূর্তি, অসমবয়সী বন্ধু সবাই। 

কেউ বড় তো কেউ ছোট, মনের মিল ছিল অফুরন্ত। 

খেলেছি কত কি না, শেষ হোতো না আমাদের খেলা। 

কুমীর ডাঙা, লুকোচুরি, ছু কিৎকিৎ,কত মজাই না ছিল সেই দিনগুলো। 


দোলের আগে ন্যাড়া পোড়া, ঝুলনের সময় ঝুলন সাজানো, 

আর ছিলো পুতুলের বিয়ে, ভোজ থেকে মেয়ে বিদায় সবকিছু। 

খোলা আকাশের নীচে কতদিন গল্প করে কাটিয়ে দিয়েছি সারা বিকাল, 

শেষ‌ই হোতো না সে গল্প, সারাদিনের জমানো রোজনামচা। 


কোথায় হারিয়ে গেলো সেই দিনগুলো, আর তো ফিরে ও আসবে না। 

আমরা এখন সবাই বড়, যে যার সংসারে ব্যস্ত গৃহিনী।

তবে মনের টান এখন ও আছে, প্রাণের বন্ধু কিনা আমরা, 

যখন‌ই একসাথে হ‌ই, ফিরে যাই সেই ছোট বেলায়। 

এ ওর কোলে শুয়ে, চুল টেনে দেওয়া, পাত থেকে খাবার খেয়ে নেওয়া। 

এক‌ই আছে আমাদের মনগুলো, শুধু হারিয়ে গেছে আমাদের মেয়েবেলা...।। 


✍️

পিউ হালদার আশ 

১৮/০৯/২০২০

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++

#আঘাত

যতবার তুমি আমায় আঘাত দেবে ততবার আমি নিজেকে ভেঙ্গে গড়ে তুলবো। 

যতবার তুমি আমায় দূরে সরিয়ে দেবে ততবার নতুন করে তোমার ভালোবাসা অনুভব করবো। 

যতবার ভেবেছি ভুলে যাবো পারিনি ভুলে যেতে, কারণ বড্ড ভালোবাসি যে তোমাকে। 

পারি না কথা না বলে থাকতে,কিন্তু বলতে বলতে হয়তো মাত্রা টা ছাড়িয়ে গিয়েছিলাম। 

নিজের অধিকারের পরিসর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। 

বোঝা উচিৎ ছিলো, আমি তো তোমার আপন কেউ ন‌ই,, পরিচিতা মাত্র। 

বাধা গন্ডির মধ্যেই থাকা আমার উচিৎ ছিল, বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে অনধিকার চর্চা করে ফেলেছিলাম। 

বারবার তোমাকে নানাভাবে বিরক্ত করেছি,, সহ্য ও করেছো। 

কিন্তু বোঝা উচিৎ ছিল সব সহ্যের ও একটা সীমা থাকে। 

সেটা তো কোনোদিন ভেবে দেখিনি?? 

তুমি তো ভালো,, ভীষণ ভালো তাই মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে গেছো, প্রশ্রয় ও দিয়েছো 

তার সুযোগ নিয়েছি আমি, হয়তো বা কখন ও আঘাত ও করেছি। 

কিন্তু সবকিছুর ই শেষ আছে, থাকতেই হবে। 

আজ তুমি বুঝিয়ে দিয়েছো আমার অধিকারের মাত্রা কতটা, 

খুব দরকার ছিলো এই আঘাতের, বাড়তে বাড়তে কোথায় যে পৌঁছে গেছিলাম সে নিজেই জানি না। 


এত কাছের তো ছিলাম না কোনোদিন ও, মনে পড়ে যাচ্ছে প্রথম আলাপ, প্রথম কথা

তারপর একটু একটু করে বন্ধুত্বের দিকে এগিয়ে যাওয়া। 

সবটাই ছিল তাসের ঘর, ভাঙত‌ই একদিন না একদিন। 


সুখের সাগরে ভাসতে ভাসতে কূল হারিয়ে ফেলেছিলাম,, সবটাই যেনো স্বপ্ন। 

স্বপ্নের মাঝে তাসের ঘর বানিয়েছিলাম। 

স্বপ্নের সঙ্গে ভেঙ্গে গেলো আমার সাধের সাজানো তাসের ঘর,, যার নাম ভালোবাসা। 

আজ আমার ভালোবাসা ও তাসের ঘরের সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। 

এবার নিজেকে গুটিয়ে নেবার পালা, নিজের বৃত্তের মধ্যে আবদ্ধ করে সম্পূর্ণ অন্য জগতে পাড়ি দেবার পালা। 

যেখানে থাকবে না আমার প্রিয়, থাকবে না আমার ভালোবাসা, থাকবে না আমার তাসের ঘর। 

আর থাকবে না তোমার দেওয়া আঘাতের পর আঘাত। 

আজ আমি নিঃস্ব রিক্ত আঘাতে আঘাতে জর্জরিত এক অন্য মানুষ। 

বাঁধন ছাড়া, মুক্ত বিহঙ্গ, আবার আমি ডানা মেলে উড়ে যাবো দূর আকাশের পানে। 

দূর হতে দূরে, বহুদূরে, থাকবে না তোমার কাছে আমার কোনো চিহ্ন। 

ভালো থেকো, সুখে থেকো,, আজ তুমি ও মুক্ত,ভয় নেই আর ফিরবো না।। 


✍️

পিউ হালদার আশ 

১৮/০৯/২০২০

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++

#অভিমান 

বুকে জমে থাকা যত অভিমান গুলো ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায়, 

কখন ও আটকাতে পারি আবার কখন ও পারি না ।

অভিমানী মেঘ গুলো জমতে জমতে বুকের মধ্যে গুমোট মেঘলা হয়ে গেছে, 

তোমার দেওয়া রোজকার আঘাতে একটু একটু করে প্রতিদিন শেষ হয়ে যাচ্ছে আমার মন।

আমি হাসতে ভুলে গেছি, আমি কাঁদতে ভুলে গেছি, 

প্রতিটা মুহূর্তে ভুল করে ফেলার ভয়, আমি নাইতে ভুলে গেছি, আমি সব ভুলে গেছি। 

দিনটা শুধুই তোমায় মনে করে করে কাটিয়ে দিতে ইচ্ছা করে, 

কিন্তু না, তাও যে পারি না ,

বড় অভিমানী আমি, তোমার দেওয়া আঘাত গুলো প্রতিদিন আমাকে প্রতিটা মুহূর্তে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে। 

অভিমানী মেঘগুলো জমতে জমতে যখন গুমোট মেঘ করে আসে, 

তখন সেই মেঘ থেকে বৃষ্টি অঝোর ধারায় ঝরতে শুরু করে। 

থামতে চায় না সেই বারি ধারা। 

ভালোবাসার কি এই প্রতিদান? একদিন যখন থাকবো না আর আমি, 

প্রতিটা মুহূর্তে অনুভব করবে তুমি আমার ভালোবাসা, অনুভব করবে আমার অনুপস্থিতি। 

আর চাইলে ও পাবে না আমায়, তোমার সৃষ্টি তে তোমার জীবনে আমি বড়‌ই বেমানান। 

তাই হয়তো কখন ও মনের মিল হবে না, 

একবুক অভিমান নিয়ে আমি সরে যাবো তোমার জীবন থেকে, 

জানি অনেক কষ্ট পাবো আমি ও, প্রতিটা মুহূর্তে হয়তো আমার হৃদয় থেকে এক ফোঁটা করে রক্ত চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়বে! 

দুই গাল বেয়ে গড়িয়ে আসবে অশ্রুধারা। 

তবুও আমি সরে যাবো, একবুক অভিমান নিয়ে সরে যাবো।। 


✍️

পিউ হালদার আশ 

২১/০৯/২০২০

++++++++++++++++++++++++++++++++++

#মা

যেদিন আমায় জন্ম দিলে সেদিন‌ থেকেই তোমার পরিচয় মা। 

কত কষ্ট করে, না খেয়ে না ঘুমিয়ে করলে আমায় মানুষ। সংসারের এই খাটুনি, আমার বায়না,, সবকিছু সয়ে ও তুমি যা করেছো মা। 

কতদিন তুমি খেতে বসেও পারোনি খেতে,অন্ন 

তুলে দিয়েছো অতিথির মুখে, 

পুজোর নতুন শাড়ী তুলে দিয়েছো অন্যের হাতে। 

তোমার পছন্দের সবটুকু বিসর্জন দিয়েছো তোমার ওই সংসারের জন্য। 

বিনিময়ে কি পেলে মা??? লাঞ্ছনা গঞ্জনা কটু কথা। 

অথচ হাসিমুখে সব সয়ে গেছো, কাউকে কোনোদিন ও জানতে দাও নি কিছু। 

শাশুড়ী, ননদ পরিজন করতো নিত্য নতুন অশান্তি। 

কেনো জানো মা??? তুমি যে কন্যা সন্তানের জননী। 

প্রথম সন্তান যে তোমার মেয়ে, সে যে বাড়ির অলক্ষ্মী। 

তার জন্য শুধু দিয়েই যেতে হবে, পাবে না তার থেকে কিছু। 

কেনো মা গো এত অবহেলা এখন ও এই দেশে মেয়েদের??? 

মা দূর্গাও মেয়ে, কালী ও মেয়ে আর সরস্বতী লক্ষ্মী সেও মেয়ে, 

তাহলে আমি কেনো অলক্ষ্মী মা গো?? 

যারা তোমাকে করে দিনরাত অত্যাচার তারা ও মেয়ে??? 

কিন্তু মা গো, সব সয়েও তুমি যা করেছো ভুলবো না তোমার ঋণ, 

তুমি যদি না থাকতে আমার পাশে, তাহলে হতাম না মানুষ কোনোদিন। 

শিখেছি তোমার থেকে কষ্ট সহ্য করা, শিখেছি নিজে না খেয়ে অন্যের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া। 

আজ আমি ও কন্যা সন্তানের মা, কিন্তু তফাৎ কোথায় জানো মা?? 

আমাকে যেমন সবাই বলতো অলক্ষ্মী, আমার মেয়ে এ বাড়ীতে লক্ষ্মী। 

সবার চোখের মণি, ঘর আলো করা আদরিনী। 

আজ বুঝি মাগো তোমার গোপনে চোখের জল ফেলার কারণ, 

বুঝি আমাকে সকলের থেকে আগলে রাখার কারণ। 

আজ আমি যতটুকু হয়েছি সেতো তোমার‌ই ত্যাগের ফল। 

এ ঋণ তো কোনোদিন ও শোধ হবার নয় মা, আজ তুমি সফল। 

সবশেষে বলবো মা গো, তুমি ই আমার সেরা জননী

তোমার কষ্ট ভুলবো না মা গো, থাকবো চিরজীবন ঋণী। 


✍️পিউ

১৫/০৯/২০২০