Page Nav

HIDE

Post/Page

June 2, 2025

Weather Location

Breaking News:
latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-পত্রিকার-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

কবিতা : কলম সৈনিক কলমে : স্নিগ্ধা পণ্ডিত তারিখ : 05/10/2020
ওহে কবি তুমিও কি নাম লিখিয়েছো ওই দলেতেই, সবাই ডাকলে, তুমিও ডাকো সবাই কাঁদলে তুমিও কাঁদো এমনই কিছু ব্যাপার না কি? 
সেদিন যখন করোনা এলো বিশ্ব জুড়ে মহামারী, আকাশ বাতাস সর্বত্…

 


কবিতা : কলম সৈনিক 

কলমে : স্নিগ্ধা পণ্ডিত 

তারিখ : 05/10/2020


ওহে কবি তুমিও কি নাম লিখিয়েছো ওই দলেতেই, 

সবাই ডাকলে, তুমিও ডাকো 

সবাই কাঁদলে তুমিও কাঁদো 

এমনই কিছু ব্যাপার না কি? 


সেদিন যখন করোনা এলো 

বিশ্ব জুড়ে মহামারী, 

আকাশ বাতাস সর্বত্র একই কথা 

বাঁচতে গেলে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে, 

পথের মানুষ, শিক্ষিত অশিক্ষিত, 

চাকুরীজীবি, বেকার মানুষ, শিশু, বৃদ্ধ, 

নারী পুরুষ, গরীব ধনী, 

সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া, রেডিও টিভি 

সংবাদপত্র, কেউ বাকি ছিল না, 

সকলেই বার্তা দিচ্ছে একে অপরকে, 

সেদিন তুমি থেমে ছিলে না কবি, 

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কলমে শুধু 

করোনা করোনা করোনা..... 

একটা সময় মনে হল, 

কবিদের নয়, কবির কলম বোধহয় করোনা আক্রান্ত, 

সকলের মত কবিও ভুলে ছিল 

সমাজে আরও অনেক বিষয় আছে 

যেগুলিতে আলোকপাত কলমের দায়িত্ব, 

প্রতিদিনের মত এই করোনা আবহেও 

একটা করে অনাথ ডাস্টবিনে পড়ে, 

প্রতিদিন সেই পাগলী তার অনাহূত শিশু কে 

কোলে নিয়ে ভিক্ষে করে... 

প্রতিদিনের মতই কেউ না কেউ 

একটা টাকা দেবার অছিলায় 

ওই পাগলীর স্তন স্পর্শ করে যায়, 

প্রতিটি রাতে ওই পাগলীর যোনিতেও 

বীর্যের আস্ফালন ফোটায় কোনো এক বীর পুরুষ। 

সেই সব কথা কেউ বলে না, 

না পথ চলতি মানুষ, 

না সোশ্যাল মিডিয়া, 

না সংবাদ মাধ্যম 

না কোনো কবির কলম। 

অথচ এই করোনা আবহের মধ্যেই 

যখন কোনো ফ্লিমস্টার আত্মহত্যা করে, 

বা কোনো নেতা মন্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যায়, 

সকলেই হয়ে ওঠে তৎপর, 

হয়ে ওঠে সচেতন নাগরিক ;

তুমিও কবি সেদিন সবার সাথে

একই আবেগের স্রোতে ভাসিয়ে ছিলে, 

তোমার কলম সেদিন 

নামী ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর রহস্য জানতে চেয়ে 

আন্দোলনের ভাষা লিখেছিলে......। 

অথচ বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ মাতা পিতা 

আজও কাঁদছে তাদের আদরের নির্লজ্জ সন্তানের জন্য, 

আজও অনাথ আশ্রমে অনাথের সংখ্যা বাড়ছে, 

আজও কত ঘরে বধূ নির্যাতন চলছে নিভৃতে, 

কিন্তু তাতে কি? 

এখনো তো কেউ মরেনি বিষ খেয়ে 

কিংবা গলায় দড়ি দিয়ে, 

যেদিন বৃদ্ধাশ্রমের এক পিতা বা মাতা 

যেদিন অনাথ আশ্রমের এক অনাথ 

বিনা চিকিৎসায় বা খাদ্যাভাবে মারা যাবে, 

যেদিন এক কন্যা দায়গ্রস্থ পিতা 

পণের টাকা জোগাড় করতে না পেরে 

ঝুলিয়ে দেবে পিতৃত্বের দায়, 

কোনো রোষির ফাঁসে। 

জানি, সেদিন সকলের সাথে কবি তুমিও 

লিখে ফেলবে প্রতিবাদের এতো কাব্যকথা ;

যেমন আজ লিখছো...... 

প্রতিদিন একটা করে কবিতা ওই ধর্ষিতার জন্য, 

আজ লিখছো, ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কেটে নেবার কথা, 

আজ লিখছো, পুরুষ হিসাবে তুমিও কত লজ্জিত, 

আজ লিখছো, মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদের বিরুদ্ধে, 

কেন কবি, তুমিও সময়ের স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে দাও? 

নাকি তোমারও আছে রাজনীতির চাপ? 

নাকি তুমিও ভয় পাও সত্য নিয়ে লড়াই করতে? 

নাকি তোমার কলমও উঁচু স্তরের কাছে ঋণী? 

তা যদি না হয়, তাহলে আন্দোলন হোক 

বিদ্রোহের মত সক্রিয়, 

কলম কে করে তোলো সৈনিক, 

সমাজের কোনো বিষাক্ত ক্ষত নির্মূল করতে 

শুরু করো আরও এক বিশ্বযুদ্ধ। 

সমাজের পাঁচটা ক্ষত নিয়ে 

এক সাথে পারবে না তুমি লড়াই করতে, 

তাই বারবার সকলের আবেগের সাথে না ভেসে 

একটা ক্ষত নিয়ে লড়াই করো, 

সমাজ কে দেখিয়ে দাও 

একটা কলমও পারে 

বিশ্বযুদ্ধের কলম সৈনিক হতে।।