#ছোটবেলার_পূজায়
#মিষ্টিমৌ
-"মা আমাদের কুলফি কিনে দেবে? সবাই খাচ্ছে ওরা মন্ডপে।দেবে মা?"-"ইশশশ ওসব ভালো না,আমি পরে বানিয়ে দেব।ওসব খেলে শরীর খারাপ হবে।"-"ওরা খেলে ওদের শরীর খারাপ হবে না?"-"হবে তো।এ…
#ছোটবেলার_পূজায়
#মিষ্টিমৌ
-"মা আমাদের কুলফি কিনে দেবে? সবাই খাচ্ছে ওরা মন্ডপে।দেবে মা?"
-"ইশশশ ওসব ভালো না,আমি পরে বানিয়ে দেব।ওসব খেলে শরীর খারাপ হবে।"
-"ওরা খেলে ওদের শরীর খারাপ হবে না?"
-"হবে তো।এখন না পরে হবে।"
*********************************************
এই কথাগুলো মা বলতে বলতে এমন ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল যে কি বলবো,আজও দেখলে মনে ভয় হয়।বাইরের খাবার খাওয়ার আনন্দটা বিয়ের পরেই পেয়েছি।বর বাবাজী কিন্তু সব ব্যাপারেই আমায় ছুট দিয়েছে।ছোট বেলায় নানা বিধি নিষেধ মেনে পূজার সময় চলতে হত।বাঁধা ধরা সময়ের মধ্যে ঘরে ঢুকতে হবে।পাড়ার বাইরে বেরাতে পারবোনা।বাইরের খাবার খাওয়া চলবেনা।এই এমন কত কি?????তবে ঐ বিধিনিষেধ মেনেও যে সুন্দর ভাবে পূজার আনন্দ নিয়েছি,সেসব স্মৃতির পাতা উল্টে যখন দেখি মন প্রফুল্ল হয়ে যায়।
প্যান্ডেলে বাঁশ বাঁধার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আনন্দ শুরু।সাবেকি মন্ডপ,মায়ের মৃন্ময়ী রূপ যেন মন কাড়া।আজও পাড়ার পূজা ঐ একই রকম আছে।ছোট থেকেই আনন্দ করতে ভালোবাসি খুব।সকাল বেলায় বন্ধুদের সঙ্গে গাছের ফুল তুলে এনে পাশের বাড়ির দিদার কাছে নিয়ে গিয়ে সেই ফুলের মালা গাঁথা,এ যেন এক অন্য রকম আনন্দ।আনন্দ আরও দ্বিগুণ হত যখন ঐ মালাই মায়ের গলায় উঠতো।
বড়রা যখন পূজার কাজে ব্যস্ত তখন আমরা ছোট্ট ছেলেমেয়েরা ক্যাপ বন্দুক নিয়ে খেলতাম।একবার মহাষ্টমীর দিন সকালে মায়ের শাড়ি পড়ে পুষ্পাঞ্জলি দিচ্ছি যখন তখন কোথা থেকে এক শুঁয়োপোকা দিল আমায় আল ফুটিয়ে।আমি তখন হাত ঘষে ঘষে লাল করে দিচ্ছি।আমার পাড়ারই একটি ছেলে তক্ষণই ঐ শুঁয়োপোকাকে ক্যাপ বন্দুক দিয়ে মারতে ছুটলো।বন্দুকের দ্বারা যখন সে মরলোনা তখন তাকে পায়ে পিষে মেরে আমায় বলে এসে -"দেখ তোকে যে কষ্ট দিয়েছে তাকে আমি মেরে ফেলেছি।এবার তুই আমার সঙ্গে আবার ভাব করবিতো?"আজও ভাবি ছোট বেলায় আমরা কত নিষ্পাপ মনের ছিলাম।ছোট ছোট আনন্দে খুশিতে ভরে উঠতো মন।
আবারও ফিরে যেতে চাই ঐ ছোট বেলায়।যেখানে মন খুলে আনন্দ করতাম, আজকের জীবনে যে কাজের চাপ ,মানসিক চাপ,মন কষাকষি কিছুই ছিল না।ইচ্ছে করে আবার আগের মত নির্মল আনন্দে ভেসে যেতে।সত্যিই সেই সব দিন ছিল সোনার মত।
**********************************************