অনুগল্পবিচার✍️ম্যাহেক
#সন্তান ধারণে অক্ষমতার জন্য দীর্ঘ দিনের ভালবাসা থাকা সত্বেও প্রীতম রঞ্জিনীকে বিয়ে করতে রাজী হয়না।
#এমন চরম সিদ্ধান্তের কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যে রঞ্জিনীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
#বারবার সে আর তার মা প্রীতমের কা…
অনুগল্প
বিচার
✍️ম্যাহেক
#সন্তান ধারণে অক্ষমতার জন্য দীর্ঘ দিনের ভালবাসা থাকা সত্বেও প্রীতম রঞ্জিনীকে বিয়ে করতে রাজী হয়না।
#এমন চরম সিদ্ধান্তের কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যে রঞ্জিনীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
#বারবার সে আর তার মা প্রীতমের কাছে গিয়ে অনেক অনুনয়, বিনয় করে, মা প্রীতমের হাত দুটো ধরে বলে, বাবা এমন আঘাত দিওনা আমার মেয়েকে, ও সহ্য করতে পারবেনা। কোন কথা প্রীতম শুনতে চায়না। বলে আমার মা ডাক্তারের কাছে আপনার মেয়ের ব্যপারে সব শুনেছে, যে রঞ্জিনী কখনও মা হতে পারবেনা, তাই আমি আর মা দুজনে মিলে ওকে আমাদের জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
#দুচোখে অনন্ত শ্রাবণ নিয়ে রঞ্জিনী মায়ের সাথে বাড়ি ফিরে আসে, সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার কাছ থেকে এতবড় ধাক্কা মেনে নিতে পারেনা মেয়েটা, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ওর স্থান হয়, না হাসপাতালে যতদিন ভর্তি ছিল রঞ্জিনী, ততদিন চৈতন্যে/অচৈতন্যে শুধু প্রীতমেরই নাম নিয়ে গেছে আর উল্টোদিকে অমানুষটা একবার মানবতার খাতিরে দেখতে পর্যন্ত আসেনি।
#হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি যাবার পর নিজেকে অনেক বেশী পাল্টে ফেলেছে রিণী, (রঞ্জিনীর ডাক নাম)। পাড়ার দরিদ্র অনাথ বাচ্চাদের সে বিনামূল্যে শিক্ষা দেয়।
#একদিন দমদম মেট্রো স্টেশনে কোন একটা কাজে এসে রাতে দেরী হয়ে যাওয়ায় স্টেশনে একা দাঁড়িয়ে চিন্তা করতে থাকে রিণী, হঠাৎ একটা ছেলে এগিয়ে এসে নিজে যেচেই আলাপ করে রিণীর সাথে। পরিচয় দিয়ে বলে আমার নাম সপ্তক। সেদিন সেই ছেলেটা সসম্মানে রিণীকে বাড়ি পৌছে দেয়।ফোন নাম্বার আদান প্রদান হয়, প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম, আজ সে সপ্তকের স্ত্রী রঞ্জিনী চ্যাটার্জী। এক পুত্র সন্তানের মা, ভরা সংসার।
#এক দুপুরে হঠাৎ মোবাইলে ফোন আসে, ওপাশের গলাটা বড্ড চেনা চেনা, সন্দেহ কাটিয়ে নিজেই পরিচয় দেয় চিনতে পারছ?? আমি প্রীতম। রিণী বলে যা বলার তাড়াতাড়ি বলো, আমার হাতে সময় খুব কম, সব খবর নেবার পরে সে কথায় কথায় জানতে পারে রিণী মেডিকেল সায়েন্সকে মিথ্যে প্রমাণ করে এক সন্তানের মা হয়েছে, খবরটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারেনা প্রীতম, ফোনে বাচ্চার কন্ঠস্বর শোনায় রিণী। আকাশ থেকে পড়ে প্রীতম, কি করে সম্ভব?? তবে কি ডাক্তারের করা টেস্টে কিছু ভুল ছিল??
#হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে প্রীতম জানায় সে আর তার মা অতি পছন্দ করে বড়লোক বাবার একমাত্র রাজকন্যে সীমাকে ঘরের বউ করে এনেছিল অনেক শখে। অনেক কিছু টেস্ট করার পরেও, মন্দির, মসজিদে মাথা ঠেকিয়েও ঈশ্বর তাদের ঝুলি পূর্ণ করেননি, তারা আজ নিঃসন্তান।
#দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে রিণী বলে ঈশ্বর আজও আছেন, তার আঘাতে শব্দ হয় না।
শব্দ সংখ্যা - ৩৬০