তরুন চট্টোপাধ্যায় । কলকাতাএকুশের বঙ্গ বিধানসভার ভোটকে বিজেপি যে পাখির চোখ করেছে তা আর তো বলার অপেক্ষা রাখে না।চৌতিরিশ বছরের বাম সরকারকে 2011 সালে তৃনমূলের মমতা বন্দোপাধ্যায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে সরিয়ে দিতে সমর্থ হন। 2021 সালে তৃনম…
তরুন চট্টোপাধ্যায় । কলকাতা
একুশের বঙ্গ বিধানসভার ভোটকে বিজেপি যে পাখির চোখ করেছে তা আর তো বলার অপেক্ষা রাখে না।চৌতিরিশ বছরের বাম সরকারকে 2011 সালে তৃনমূলের মমতা বন্দোপাধ্যায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে সরিয়ে দিতে সমর্থ হন। 2021 সালে তৃনমূল সরকার দশ বছর অতিক্রান্ত করবে। আর সেই তৃনমূলকেই সরাতে এখন আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে বিজেপি দল। দিল্লির সমস্ত তাবড় নেতাদের চোখ এখন বঙ্গ বিজয়ে । তাতে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ ও পিছিয়ে নেই। এখন অবশ্য পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে বঙ্গে যে কিছু হবে না তা বুঝেছে বিজেপি দল। তাই এখন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে ধরেই এগিয়ে যেতে চাইছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী নিজেই।
সম্প্রতি মন কি বাত অনুষ্ঠানে আত্ম নির্ভর ভারত নির্মানে বার বার তিনি কবিগুরুর উপমা টেনে বাংলার সেন্টিমেন্ট কে কাজে লাগাতে চাইছেন।কারন রবীন্দ্রনাথ যে বাংলার ।বিভিন্ন বিষয়েই রবীন্দ্রনাথের ভাবনা কে টেনে আনছেন।এমনকি আত্ম নির্ভর ভারত গড়তে খেলনা শিল্পের প্রসঙ্গে ও সেই রবীন্দ্রনাথের কথা বলেন।
যদিও বিরোধী কংগ্রেস নেতা রাহূল গান্ধী তীব্র বিরোধিতা করে বলেন সব ছেড়ে এখন প্রধানমন্ত্রী
র বলা উচিত ছিল স্টুডেন্টস কি বাত।না তা তিনি বলছেন না।করোনা সংক্রমণ বাড়ছে প্রতিদিন ।আর এই আবহে ছাত্র ছাত্রী কে নেট ,জে ই ই পরীক্ষা দিতে পাঠানো হচ্ছে ।
কবিগুরুর চরন ধরিতে মরিয়া এখন তিনি।তাই মোদী বললেন খেলনা শুধু মন ভোলানো জিনিস নয় শিশুদের কাছে।অসম্পূর্ণ খেলনা কে সম্পূর্ণ করাটাই পছন্দ করেন শিশু।আর একথা বলেছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ।বার বার মন কি বাত অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গে কথা বলা প্রসঙ্গ টিকে নানা আঙ্গিকে দেখছেন বিরোধী শিবির।তৃনমূল নেতা সৌগত রায় বললেন এ কেমন প্রধানমন্ত্রী ।করোনা সংকট,পরীক্ষার্থী দের অসুবিধা, অর্থ নৈতিক সংকট নিয়ে কোন কথা নেই ওনার মুখে।এসব থেকে মন ভোলাতেই বার বার খেলনা নিয়ে আত্ম নির্ভরতার বানী।
শুধু বিরোধী নয়, ইতিহাসবিদ রজত কান্তি রায় ও সুগত বসু রাও প্রধানমন্ত্রীকে ছেড়ে কথা বললেন না।মুসলমানদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে বৈষম্যমূলক আইন প্রনেতার মুখে রবীন্দ্রনাথ আসে না।রবীন্দ্রনাথের আদর্শ ও দেশ ভাবনার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর কোন মিল নেই।
নরেন্দ্র মোদী কিন্তু অনড়।খেলনা শিল্প গড়ে ভারতকে আত্ম নির্ভরতার পথে পৌঁছে দিতে।
কর্নাটকের চন্নাপটনা,অন্ধ্রের কোন্ডাপল্লি ,তামিলনাড়ুর তাজ্ঞোর ,আসামের ধুবুরি ,উওরপ্রদেশের বারানসী তে তো খেলনা শিল্প আগেও ছিল।কিন্তু তবুও ভারতের বাজারে রমরমিয়ে চলেছে চীনের খেলনা।বিশ্বের খেলনা বাজারে সাত লক্ষ্য কোটি টাকার ব্যবসা হলেও ভারতের জায়গা ছিল খুবই নগন্য।
বিরোধীদের অভিমত গত বছর বিট্রিশের খেলনা সংস্হা হ্যামলে কিনে নেন মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গোষ্ঠী ।প্রধানমন্ত্রী কি চাইছেন তাঁদের হাতকেই শক্ত করতে।
লকডাউনের সময় নরেন্দ্র মোদীর সাদা দাড়ি আরো বেড়ে যাওয়া কে কটাক্ষ করে বিরোধী দের অভিযোগ তিনি বোধহয় রবীন্দ্রনাথের ছায়া দেখছেন।তাই কথায় কথায় রবীন্দ্রনাথ কে টেনেছেন।রাম মন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মোদীর ধুতি পাঞ্জাবি ও বাদ যায় নি বিরোধীদের কটাক্ষ থেকে।এমনকি সাষ্টাঙ্গে প্রনাম ।সব কিছুর মধ্যেই ভোটের ছায়া দেখেছেন বিরোধী পক্ষের মানুষ জন।
আর এখন একুশের বঙ্গ ভোটকে কেন্দ্র করে সেই সব কথাই বার বার উঠে আসছে।রবীন্দ্রনাথ কে ধরেই আত্ম নির্ভর খেলনা শিল্প কে সামনে আনছেন মোদী ।
ভোট বৈতরনী পার হতে কে যে কখন কোন কথা বলবেন তা আগে থেকে বোঝা শক্ত ।তবে মোদীজীর মুখে বার বার রবীন্দ্রনাথ আসায় সকলেই ভাবছেন এতো একুশের ভোট।বাংলা দখলের নয়া কৌশল।