নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: লকডাউনের মধ্যেও জেলার দিব্যাঙ্গ জনেদের পুজোর পোশাক উপহার সামগ্রী হিসেবে পাঠাত ভুলে যাননি রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই মন্ত্রীর পাঠানো পুজোর নতুন পোশাক উপহার হিসেবে পেয়ে খুশিতে…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: লকডাউনের মধ্যেও জেলার দিব্যাঙ্গ জনেদের পুজোর পোশাক উপহার সামগ্রী হিসেবে পাঠাত ভুলে যাননি রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই মন্ত্রীর পাঠানো পুজোর নতুন পোশাক উপহার হিসেবে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তমলুকের বিভিন্ন হোমের আবাসিকরা।
সালটা ২০১১। রাজ্যে পালাবদলের পর প্রতিবন্ধীদের জীবনযাত্রা ও বঞ্চনার কাহিনীর নজরে আসে বর্তমান সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের। নজর এড়ায়নি রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী তথা তৎকালীন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর। ফলে প্রতিবন্ধীদের জন্য একাধিক বিষয়ে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এই সময় প্রথম পুজোর আগে এমন পোশাক প্রতিবন্ধীদের তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রীর শুভেন্দু অধিকারী। সেই ধারা বজায় রেখে আজও দূর্গোপূজো ঠিক আগেই জেলার দিব্যাঙ্গ জনের মধ্যে পূজার পোশাক বিতরণ করে থাকেন মাননীয় মন্ত্রী মশাই। সেই পোশাক পরেই মন্ত্রীর দেওয়া বাসে চড় পুজো মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন ও পুজো পরিক্রমা য় অংশ নিয়ে থাকেন এ জেলা তথা বিশেষত নিমতৌড়ি তমলুক উন্নয়ন সমিতির আবাসিক দিব্যাঙ্গজনেরা। খুব স্বাভাবিকভাবেই সকলের মাঝে পুজোর দিন গুলিতে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেরিয়ে এক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করে থাকেন প্রতিবন্ধীরা। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছর করণা আবহের জেরে পুজো নিয়ে তৈরি হয়েছিল ঘোর অনিশ্চয়তা। অবশেষে পুজোর অনুমতি মিলল পুজো নিয়ে কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রীর পাঠানো উপহার সামগ্রী নিয়ে অবশ্য এ বছরও তার কোনো রকম ব্যতিক্রম হলো না। করোনা এবং লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিবন্ধীদের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি নতুন পোশাক পাঠিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাতেই সেই উপহারের প্রায় আড়াই শতাধিক পোশাক তমলুকের নিমতৌড়ি উন্নয়ন সমিতির হোমে এসে পৌঁছেছে। তবে, শুধু যে তমলুকের নিমতৌড়ি হোমের আবাসিকদের জন্য এই উপহার তা কিন্তু নয়। এভাবেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া থেকে শুরু করে কোলাঘাট এবং তমলুকের শিশু রক্ষা সমিতি সহ জেলার বিভিন্ন হোম আবাসিক এবং দিব্যাঙ্গ জনদের এই পোশাক বিতরণের বিষয়ে মন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোন খামতি রাখা হয়নি। এদিকে অবশ্য হোম কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে প্রতিবন্ধীদের মনের বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে উঠতে নানান উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমনের আতঙ্কে এবং স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে পুজো পরিক্রমা নিয়ে বেশ কিছু বিধিনিষেধ নেমে আসায় হোম চত্বরেই আয়োজন করা হয়েছে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠান। তাই এখন পুজোর মণ্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে প্রতিমা সাজসজ্জা প্রায় গোটা হোম জুড়েই চলছে সাজ সাজ রব। চলছে হাতের টানে আলপনার কারুকার্য ভরা নানান রকমারি আঁকি-বুকি। করা হয়েছে হোম ক্যাম্পাসের মধ্যেই পুজো এবং হোম যজ্ঞের ব্যবস্থাও। অর্থাৎ সবমিলিয়ে পুজোর পরিক্রমার আনন্দটা মাটি হলেও পুজোর আনন্দের উচ্ছ্বাস ভরা দিনগুলি তে কোনো রকমের খামতি রাখতে নারাজ হোম কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে করণা আতঙ্কের মাঝে আচমকাই মন্ত্রীর পাঠানো উপহার যেন বাড়তি প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছে আবাসিকদের মধ্যে। পুজোর এই নতুন পোশাক পেয়ে খুশিতে মন নেচে উঠেছে হোমের আবাসিক সরস্বতী, মালেখা, রেখা, মর্জিনা, পূজা গঙ্গা, গৌরী, রুনু, প্রিয়াঙ্কাদের। তাদের কথায়, প্রতিবছরই পুজোর আগে এই দিনটির অপেক্ষায় থাকি আমরা। তাই করণা আতঙ্কের মাঝে হলেও এবারেও যে প্রত্যাশিতভাবে মন্ত্রী মশাইয়ের পাঠানো এই উপহার পাব তা আমরা ভাবতে পারিনি। নিমতৌড়ি উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক যোগের সামন্ত বলেন, এবছর করোনা আবহের জেরে হোম আবাসিকদের মেয়ে পুজো পরিক্রমা যে হবে না। তা নিয়ে বিধি-নিষেধ ইতিমধ্যেই রাজ্য সমাজ কল্যাণ দপ্তর এর পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। তবুও প্রতিবছরের মতো এবছরও রাজ্যের মন্ত্রীর পাঠানো নতুন পোশাক উপহার হিসেবে পেয়ে ওরা অত্যন্ত আপ্লুত।