নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: দেনার দায়ে এক যুবকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল তমলুকে। শুক্রবার সকালে তমলুকের শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাকটিয়া এলাকার এমন ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক থানার কা…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: দেনার দায়ে এক যুবকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল তমলুকে। শুক্রবার সকালে তমলুকের শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাকটিয়া এলাকার এমন ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক থানার কাঁকটিয়া গ্রামের যুবক গোপাল বর্মন(৩০)। মাস চারেক আগে স্থানীয় ওই যুবক ডুমরা গ্রামে গ্রাম কমিটির থেকে একটি নাসা খালে মাছ ধরার জন্য লিজ নেয়। সেইমতো গ্রাম কমিটির সঙ্গে প্রায় এগারো লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার চুক্তি হয়। এরপর চুক্তি মতো গোপাল বর্মন ১০ লক্ষ টাকা দিয়েও দেয়। কিন্তু বকেয়া টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্প্রতি ওই যুবকের উপর চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে গ্রাম কমিটির বিরুদ্ধে। জানিয়ে অবশেষে ওই ডুমরা গ্রামে সালিশি সভাও বসে।
এমন পরিস্থিতিতে এদিন সকালে ওই লিজ নেওয়া নাসা খালের পাশেই গোপালের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকা জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠায়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বকেয়া মাত্র দেড় লক্ষ টাকা আদায়ের বিষয়ে সালিশি সভার নামে প্রচন্ডভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল গোপালের ওপর। আর এতেই মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে ওই যুবক। যদিওবা গ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই মৃত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে তমলুক থানায় কোনো রকমের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মৃত যুবকের স্ত্রী জানিয়েছেন, গ্রামের কাছ থেকে লিজে খাল নিয়ে মাছ না ধরতে পেরে কোনো লাভ হয়নি। তাই ক্ষতি পুষিয়ে বকেয়া টাকা আর দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও গ্রামবাসীরা জোর করে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। বহুবার অনুনয়-বিনয় করে ও নিষ্কৃতি পাইনি স্বামী। তাই বাধ্য হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
ভাই প্রসেনজিৎ বর্মন বলেন, লকডাউনের বাজারে চড়া সুদে টাকা নিয়ে মাছ ধরার ব্যবসায় নেমেছিল দাদা। কিন্তু এবছর খালে জোয়ার না থাকায় মাছ ধরা দেয়নি। যেটুকু আবার মাছ ধরা পড়েছিল তাও ঠিক মত দাম জোটেনি। ফলে দুই তরফের সাঁড়াশি আক্রমণের ফলে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তমলুক থানার ওসি জলেশ্বর তেওয়ারি জানিয়েছেন, একটি অস্বাভাবিক মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযোগ পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।