তরুন চট্টোপাধ্যায় । আবার দোরগোড়ায় পুজো।বাতাসে শিশির।এর সঙ্গে শিউলির সুভাষ ।এবার করোনা আবহে মহামান্য আদালত ঐতিহাসিক রায় দিলেন।সেই রায়ের সপক্ষে ও বিপক্ষে শুরু হয়ে গেছে নানা বাকবিতণ্ডা ।সেটি অবশ্য এ লেখার বিষয় বস্তু নয়।পুজো এলেই আমার…
তরুন চট্টোপাধ্যায় ।
আবার দোরগোড়ায় পুজো।বাতাসে শিশির।এর সঙ্গে শিউলির সুভাষ ।এবার করোনা আবহে মহামান্য আদালত ঐতিহাসিক রায় দিলেন।সেই রায়ের সপক্ষে ও বিপক্ষে শুরু হয়ে গেছে নানা বাকবিতণ্ডা ।সেটি অবশ্য এ লেখার বিষয় বস্তু নয়।পুজো এলেই আমার মনে আসে অনেক গল্প ।আসবেই তো ।অনেকগুলি পুজোর শরৎ তো ইতিমধ্যেই পার করে এসেছি।কাশফুলকে দেখেছি বাতাসে মাথা দোলাতে।
আমার দাদু সেকালে ছিলেন নামকরা ডাক্তার ।শুনেছি ঠাকুর মার মুখে।বেশিদিন বাঁচেন নি।বাড়িতে নাকি ঘোড়ার গাড়ি ও ছিলো।এখন অবশ্য সে সব গল্প কথা।যা দেখিনি তা নিয়ে লিখতে গেলে কল্পনার আশ্রয় নিতে হয়।তাই আলমারিতে তুলে রেখেছি সেসব।মাঝে মাঝে ঝাড়পোছ করি।
আসল কথায় আসি।দাদু চলে যাবার পর আমাদের পরিবারে অন্ধকার নামে।জমি জিরেত সব চলে যায় অন্যের হাতে।ঠাকুর মার মুখে শুনেছি একটি একটি গয়না অপর কে দিয়ে তাঁদের সঙ্গে কাশি বৃন্দাবন ঘুরে বেড়িয়েছেন ।অল্প বয়সী বিধবা।পুন্য অর্জনের জন্য এটিই নাকি ছিল একমাত্র পথ।
এখন কাঁটা পুকুর নাম আছে ঘটি ডোবে না।তাই বাবা ও কাকাকে সংসার প্রতিপালন করতে গিয়ে কারখানার শ্রমিক হতে হয়।এতে অবশ্য আমার কোন দায় নেই।তখন তো আমি পৃথিবীর আলো দেখিনি।
তবে যখন বুঝতে শিখলাম তখন তো একটু বড় হয়েছি।আর দেখেছি পুজোয় বোনাস না দেবার জন্য কারখানার মালিক গেটে ঠিক পুজোর আগে মস্ত তালা ঝুলিয়ে দিতো।
তাই পূজোয় চাই নতূন জামা নতূন জুতো ।না হতো না আমাদের।প্রথম প্রথম মিথ্যে বলবো না চোখে জল আসতে।সবাই কেমন নতূন জামা জুতো পড়ে বেরিয়ে পড়তো মন্ডপে মন্ডপে ।একটা নতূন গন্ধ ওদের গায়ে ।আমার মা পুরানো তেই সাবান ঘষে দিতেন।দু এক বছর দুঃখ পেলেও পরে একটা জেদ চাপলো।পড়বো না নতূন পুজোর কটি দিন কি এসে যায় ।
তারপর তো সব পেলাম মা দুর্গার আশীর্বাদে ।কিন্তু আজও সেই জেদ টি ধরে রেখেছি বুকে।না পুজোর কদিন নৈব নৈবচ।তাই পরি না আজও ।ইচ্ছে হয় না।চেষ্টা করি নিজের সাধ্যমতো অপর কে দিতে।আমিও পাই।
কিন্তু সকলে তো পুজোয় নতূন পায় না।আমার আর সাধ্য কতো।যেটুকু পারি সেই টুকু চেষ্টা করি।আর এদের সঙ্গে ই ভাগ করে নি আমার ছেলেবেলা।
আমার এই এক দোষ।লিখতে বসে কল্পনার ফানুস ওড়াতে পারি না।তাই বোধহয় কিছু হলো না আমার ।দুঃখ নেই।হয়নি তো কি হয়েছে।তবুও তো আমি সুখী ।
এক জীবনে তো সব পাওয়া যায় না।আমার মনের মতো সব হবে একথা ঠিক নয়।
আবার আসিব ফিরে ।সেদিন না হয় আরও একটু গুছিয়ে নেব আমার চাওয়া পাওয়ার মানচিত্র ।
অল্প কিছু লিখতে শিখেছি।তাই লিখি।সবার তো সব হয়না।
মতামত আপনাদের।