তরুন চট্টোপাধ্যায় জীবনের অনেক গুলি দিন তো কাটিয়ে এলাম।আর আমার কাছে কেন জানিনা দুর্গা পুজো এলেই মনে হয় যেন নতূন বছর।জানুয়ারি, বৈশাখ নতূন বছর নয়।ঐ যে বলি এ বছর পুজো, সামনে বছর পুজো।ছেলে বেলা কেটেছিল দারিদ্র্য কে সঙ্গী করে ।যত ভেবেছি…
তরুন চট্টোপাধ্যায়
জীবনের অনেক গুলি দিন তো কাটিয়ে এলাম।আর আমার কাছে কেন জানিনা দুর্গা পুজো এলেই মনে হয় যেন নতূন বছর।জানুয়ারি, বৈশাখ নতূন বছর নয়।ঐ যে বলি এ বছর পুজো, সামনে বছর পুজো।
ছেলে বেলা কেটেছিল দারিদ্র্য কে সঙ্গী করে
।যত ভেবেছি লড়াই করবো।তা বোধহয় করতে পারিনি।একেবারে ইস্কুল জীবনে দেখেছি বামপন্থী দের লড়াই করতে।তারপর দেখলাম নকশাল দের লড়াই ।বোঝার বয়স তখন হয়নি।লিখে ফেলেছিলাম , দক্ষিনেশ্বরের গঙ্গায় তিন তরুনের লাশ, চেকে খায় তিন কাক।তারপর সেই নকশাল ও মিলিয়ে গেল।না আমি ইতিহাসের মধ্যে ঢুকছি না।বামপন্থী দের শাসন দেখলাম ।এতোদিন যে সব নেতাদের শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে ছিলাম তাঁদের দেখলাম রাষ্ট ক্ষমতার চরম শিখরে।শুধু দেখাটাই বললাম ।অল্প পরিসরে এর বেশি লেখা গেল না।এখন আবার দেখছি বাংলার অগ্নি কন্যার রাজত্ব ।দেখেই যাচ্ছি ।আমার লড়াই করা হলো না।যে টুকু সবটাই ব্যাঙ্কের ম্যানেজারি আর খবরের কাগজের পাতা।এখন আবার ওয়েব ম্যাগাজিনের লেখালিখি ।
কিন্তু কি আর করলাম এই জীবনে।অথচ কত কিছুই তো করার ছিল।মতি নন্দীর কোনি বলেছিল তোকে একবার জলে পাই।
মৃদুল দাসগুপ্তের সেই ফুটপাতের ছেলেটি বলেছিলো আজ নয় কাল তোকে দেখে নেব।
আরো কতো দেখাদেখির মধ্যে বলি অনেক তো দেখেই এলাম।কিছুই কি হলো না আমার ।
আসলে আমার জন্য এ লেখা আমি লিখছি না।লিখতে গিয়ে ছায়ার মতো এসে পড়ছে।সেই ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ আর কি।
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতে খেলতে কবে যেন বুড়ো হলো ক্যালেন্ডারের পাতা।সিড়ি ভাঙা সরলের উওর টি আজও অনাবিস্কৃত।
হয়তো উওর আসবে না কোনদিন ।আসেও না।কারো কারো অঙ্ক মেলে , কারো মেলে না।
নদীর এক পাড় ভাঙলে আর এক পাড় গড়ে ওঠে।জীবন বোধহয় তাই নয়।ভাঙন আর গঠন নিয়ে তো জীবন চলে না।আরো অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে।বোধহয় ।
বয়স টি অবশ্যই একটি জরুরি বিষয় ।কে কতদিন আছি।আছি মানে সচল আছি।আর যত দিন আছি সেই ভাঙা আর গড়ার খেলা।
স্মৃতি নয়, স্বপ্ন নয়, নয় কোন আশা
লড়াই টি বেঁচে থাক, লড়াকুর ভাষা।
পুজোতো হচ্ছে বন্ধ হয়নি পুজো
ঢাঁকি আসেনিকো তাতে কিবা যায় আসে
আমরা করেছি পুজোর বাজার যত
ঘুরে ঘুরে সকাল বিকাল ফুটপাতে।
করোনা সে আবার কি বেনো রোগ
এমন বলছে জ্বর আসেনিকো কোন কালে
গা গরম হলে মাথায় ঢেলেছি জল
ভিতরে ভিতরে ঠান্ডা হয়েছি তাতে।
জুতোর দোকানে উপচে দেখেছি ভিড়
পুজোর সময় নতূন জুতোর আশায়
শাড়ি শালোয়ার এক কথাতেই দামি
পুজো কি আসবে বার বার অবিরত।
অফিসে গিয়েছে খাতায় নামটি কাটা
এক নিমিষেই নোটিশ পেয়েছি হাতে
তবু পরিবার জানে নাকো কোন কথা
টিফিন নিয়ে তো রোজ যাই বাসে চড়ে।
মাইনেতো নেই কাবুলিওলাতো আছে
সুদ কিছু টাকা মাসে মাসে দিয়ে আসি
জমিয়ে ছিলাম বাড়তি তো কানাকড়ি
এক বছরের সুদ টা তো হয়ে যাবে।
ঠাকুর দেখিনি আছে হাই কোর্ট রায়
মানা নেই যেতে হোটেলে খাবার খেতে
বৌ সেজে গুজে পুজোর শাড়িতে রানী
আমি আছি চেয়ে হাসি হাসি মুখ করে।
করোনা কদিন চলে যাবে এই বার ঠিকই
জুটিয়ে নেব তো কোন না কোন কাজ
এসব কথা তো ঘরেতে বলতে মানা
ট্রাই পড়ে তাই কান্না লুকিয়ে চোখে।
পাশের বাড়ির মার্সিডিজ চলে রোজই
আমার গাড়িটি সারাই হচ্ছে আজও
কি করে বলি বিক্রি করেছি ওটি
তেল জোটেনিকো চাকরি যাবার পরে।
চলছে জীবন আমিও চলেছি পথে
জিডিপি নেমেছে তারা খসবার মতো
যদি খসে পড়ি সব দায় যাবে চলে
যতদিন আছি লুকানো থাক না এতো।
মহা অষ্টমীর প্রীতি ও শুভেচ্ছা 🙏💐