শিরোনাম : ফিরবো আবার মাটির টানে,,কলমে : পারমিতা মহান্ত
প্রথম বৃষ্টিতে মাটির সোঁদা গন্ধেভেসে বেড়াবো একদিন!তোমার নিকানো উঠোনে ফেলে যাবআলতা পায়ের ছাপ!তুলসীতলার প্রদীপের নীচের গাঢ় অন্ধকারেরয়ে যাব অগোচরে!
সেদিনও ভোরের সূর্যের দিকে চেয়ে …
শিরোনাম : ফিরবো আবার মাটির টানে,,
কলমে : পারমিতা মহান্ত
প্রথম বৃষ্টিতে মাটির সোঁদা গন্ধে
ভেসে বেড়াবো একদিন!
তোমার নিকানো উঠোনে ফেলে যাব
আলতা পায়ের ছাপ!
তুলসীতলার প্রদীপের নীচের গাঢ় অন্ধকারে
রয়ে যাব অগোচরে!
সেদিনও ভোরের সূর্যের দিকে চেয়ে সূর্যমুখী
থাকবে ফোটার অপেক্ষায়!
রাতজাগা সন্ধ্যামালতী চাইবে বিশ্রাম,
ঘুমিয়ে নেবে এক ফাঁকে!
একঝাঁক কাক এসে মহানন্দে খেয়ে যাবে
ছড়ানো চাল,মুড়ি।
চতুর বক ঐ জলার ধারে থাকবে একপায়ে
দাঁড়িয়ে,সজাগ দৃষ্টি নিয়ে!
মাছরাঙা ঝুপ করে বাড়ির পাশের ডোবা থেকে
তুলে নেবে মাছ!
নিঝুম দুপুরে কাঠঠোকরার অক্লান্ত পরিশ্রমের
ঠক্ ঠক্ ঠক্!
তুমি তোমার খোলা বারান্দায় কবিতার খাতা হাতে
খুঁজবে আমায়!
সংসারের হাজার একটা কাজ গুছিয়ে আসতে দেরি
হতো প্রতিবারই!
আমার জন্যই কবিতা লেখো তুমি,বলতে ভালোবেসে!
তোমার আগেই পৌঁছে যাব একদিন ঐ খোলা বারান্দায়,
নিঝুম দুপুরে,আবেগী সন্ধ্যায়,নিবিড় অন্ধকারে ঠিক
যেমন তুমি চাও!
ফিরবো আবার একদিন নতুন এক ভোরে এই
মাটির টানে!!
******************
শিরোনামঃ দ্রৌপদী
কলমে : পারমিতা মহান্ত
২৫/১১/২০
আমার স্পর্ধা ক্ষমা করবেন হে মহাকবি;
আমি আপনারই রচিত নারী দ্রৌপদী।
যজ্ঞ_কুণ্ড থেকে জন্ম আমার,আমি বীরাঙ্গনা,
জন্মেই আমি যৌবনবতী,পরমা সুন্দরী।
আমাকে পাওয়ার অভিলাষ করে রথী_ মহারথী,
গর্বিত আমি, অহংকার হৃদয়ে আমার,আমি দ্রৌপদী।
হে মহাকবি ব্যাসদেব, অনবদ্য লেখনী আপনার,
যুগে যুগে খ্যাত এ মহাকাব্য _"মহাভারত"।
আমার চরিত্রে কেনো এত লাঞ্ছনা? নারী বলে?
নারী জন্ম কি শুধু পতি লাভের তরে?
পূর্ব_জন্ম রচিলেন নালায়নী রূপে, সেথায়ও বঞ্চনা।
বার বার দিয়েছি সতীত্ব, পতিভক্তির পরীক্ষা।
সীতার মতো অগ্নি_পরীক্ষায় যাইনি আমি,
অগ্নি হতে উৎপত্তি আমার,আমি দ্রৌপদী।
সর্ব গুণের অধিকারী হোক পতি মোর_
এতো সহস্র নারীর বাসনা,হে দেবাদিদেব_
সর্ব গুন সম্পন্ন একমাত্র পতি চেয়ে ছিলাম!
পঞ্চ_পতি নয়,তুমি অন্তর্যামী হয়ে বুঝলেনা প্রভু!
আমি রাজকন্যা,আমি মহারানী,তবে ভরা সভায়_
পাশা খেলায় হেরে যাওয়া পতি মোর আমায় রাখলো
পণ, কেমন করে হয় হে মহাকবি?কেনো নিরুত্তর?
হে কৃষ্ণ, করুণার সিন্ধু তুমি, সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হতে দাওনি।
এতো তোমার মহিমা, যুগে যুগে পূজিত তুমি প্রাণ সখা,
কিন্তু আমার হৃদয় যে বিবস্ত্র হলো,অপমানে,লজ্জায়
ক্ষত _বিক্ষত আমি রাজকন্যা,আমি মহারানী।
আজ বুঝেছি হে মহাকবি,নারীর আর্তনাদই জয় করে_
পাঠকের মন।তাইতো ভরা রাজ সভায় বস্ত্র হরণ ।
যে দ্রৌপদী কে রচিলে হে মহাকবি,তার সেই আর্তনাদ_
আজও শোনা যায়,আজও সে দিনের রাজ সভার
নীরবতা নেমে আসে সমাজে। বিবস্ত্র নারী ভূলুণ্ঠিত।
ঘরে ঘরে পূজিত হে কৃষ্ণ করুণাসিন্ধু,আজ কোথায়?
মহাকবি ভেবেছেন পাঠকের কথা,কিন্তু তুমি তো দেবতা!
পরীক্ষা কেবল নারী দেবে প্রভু!? নর কেনো নয়!?
*********