Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-পত্রিকার-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

তোমাদের পরিবারে এটা আবার প্রথম লেখা ---ভালো লাগা খারাপ লাগা সবটাই জানিও 🙏🙏 
#শিরোনাম--- #দশভুজা দেবযানী  রায় মুখার্জ********************সেই কোন ছোটবেলায় বাবা মারা যাবার পর থেকেই রেশমা মায়ের হাত ধরে বাবুদের বাড়ী কাজে আসে । অ…


 তোমাদের পরিবারে এটা আবার প্রথম লেখা ---

ভালো লাগা খারাপ লাগা সবটাই জানিও 🙏🙏 


#শিরোনাম--- #দশভুজা 

দেবযানী  রায় মুখার্জ

********************

সেই কোন ছোটবেলায় বাবা মারা যাবার পর থেকেই রেশমা মায়ের হাত ধরে বাবুদের বাড়ী কাজে আসে ।

 অন্ধকার থাকতেই উঠে ঘরের কাজ সেরে মেয়েকে নিয়ে ভোর পাঁচটার ক্যানিং লোকাল ধরে বালিগজ্ঞ। সারাদিন কাজ করে আবার বিকেল পাঁচটার ট্রেনে বাড়ি ফেরা । 

 প্রতিদিনের দিনগত পাপক্ষয়।

রোজকার মতো সেদিনও বাবুর বাড়ী কাজ থেকে ফেরার সময় ট্রেনে আলাপ হলো এক বৃহন্নলার সাথে ।  

কথায় কথায় জানতে পারলো সে রেশমাদের ওদিকেই থাকে । কিন্তু অন্যদের মতো সে ঐকাজে যুক্ত নয়। দিদিটার সাথে কথা বলে বেশ ভালো লাগলো রেশমা আর ওর মায়ের । নামটাও বেশ মিষ্টি জুলি । 

 পরদিন রবিবার । সপ্তাহে ঐ দিনটা বাবুরা ছুটি দেয় ওদেরকে। সেদিন রেশমা ওর মায়ের সাথে গেল জুলির বাড়ি। দেখলো ওদের মতো আরো জনা পঁচিশেক মেয়ে সেলাই এর কাজ করছে । নানারকম সুতো দিয়ে শাড়িতে বিভিন্ন রকম নকশা করছে। । আর পুরো কাজটার তদারকি করছে জুলি । 

 রেশমার মা সাবিনা একসময় বেশ ভালো সেলাই এর কাজ করতো । কিন্তু অভাবের তাড়নায় আর করা হয়ে ওঠেনি । লোকের বাড়ি কাজ করলে দু বেলার খাওয়া টা অন্তত জুটে যায় ।

 জুলির কাছ থেকে সব কিছু ভালো করে জেনে নিয়ে সাবিনা ঠিক করলো আর ও রেশমাকে কাজে নিয়ে যাবে না । ও এখানে থেকে সেলাই এর কাজ শিখবে । 

     দেখতে দেখতে পাঁচটা বছর কেটে গেল । রেশমা এখন পনের বছরের । অসাধারণ তার হাতের কাজ । এদিকে সাবিনা ও মেয়ের হাতের কাজ নিয়ে বাবুদের বাড়িতে দেখাতে তারাও আশ্চর্য হয়ে যায় ।  

সেখান থেকে অল্প অল্প করে অর্ডার নিয়ে সে কাজ করতে থাকে । জুলির প্রতি তার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

 জুলি তৃতীয় লিঙ্গর হলেও সে শিক্ষিত ছিল । ওর কাছে যে মেয়েরা কাজ করতো তাদেরকে সেলাই এর পাশাপাশি লেখাপড়া ও শেখাতো । কারন জুলি অভিজাত পরিবারের মেয়ে ছিল । কিন্তু তার শারীরিক গঠনের কারনে তার পরিবার তাকে অস্বীকার করে । 

 বাড়ী থেকে বেড়িয়ে অনেক ঝড়ঝাপ্টা সামলে সে নিজেকে আজ এই জায়গায় দাঁড় করিয়েছে । 

  ধীরে ধীরে কাজের গতি বেড়েই চললো । বিভিন্ন জায়গায় জুলি ওদের হাতে বানানো কাজের প্রদর্শনী করে । দেখতে দেখতে দেশের বাইরেও ওরা ওদের শিল্পকর্মকে পরিচিত করতে পারলো । 

 আজ জুলির কাছে প্রায় দুশো মেয়ে কাজ করে নিজেদের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলেছে ।  

 এখানে কোন লিঙ্গ ভেদ নেই আছে অসহায় মেয়েগুলোকে স্বনির্ভর করে যাতে অভাবের তাড়নায় সমাজের চোরাস্রোতে তারা হারিয়ে না যায় । অন্নপূর্ণার মতো ও যেমন তাদের অন্ন সংস্থান এর ব্যবস্থা করেছে ঠিক তেমনি দশভুজা হয়ে সব দিক সামলেছে। 

আজ জুলি ,রেশমা সাবিনাদের খুব আনন্দ এর দিন । কলকাতার একটা বিশিষ্ট পূজাকমিটি তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে প্রতিমার আবরণ উন্মোচনের জন্য। 

কোন নির্দিষ্ট লিঙ্গ নয় মা সবার মধ্যেই বিরাজমান-- ।