Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

|| অসম্পূর্ণ গল্প ||
সকাল থেকে অন্তত বার পঞ্চাশেক এসেছে ফোনটা। নম্বরটা খুবই চেনা তবু ধরতে চয়না সীমন্তিনীর। ফোনটা যে বন্ধ করে রাখবে তারও উপায় নেই, অফিস টাইমে ফোন বন্ধ করা নিষেধ। ৩:৪৫, ফোনটা এখনও একই নাগাড়ে বেজে চলেছে! অবশেষে ফোনটা …

 


|| অসম্পূর্ণ গল্প ||


সকাল থেকে অন্তত বার পঞ্চাশেক এসেছে ফোনটা। নম্বরটা খুবই চেনা তবু ধরতে চয়না সীমন্তিনীর। ফোনটা যে বন্ধ করে রাখবে তারও উপায় নেই, অফিস টাইমে ফোন বন্ধ করা নিষেধ। ৩:৪৫, ফোনটা এখনও একই নাগাড়ে বেজে চলেছে! অবশেষে ফোনটা ধরল সীমন্তিণী।

- হ্যালো! কে বলছেন?

- চিনতে পারছো না সীমন্তিণী? 

- না ।

- আমি অমিত। 

- বলুন মিস্টার অমিত দে, কি করতে পারি আপনার জন্য। 

- একবার দেখা করা যাবে? প্লিজ।

গলার কাছে দলাপাকানো কষ্টটাকে এক ঢোকে গিলে নিয়ে শান্ত অথচ দৃঢ়ভাবে সীমন্তিণী বলে – হুমম্ । ৬টার সময়।মিত্রক্যাফে।

ফোনটা রেখেই ওয়াসরুমে দৌড়ায় সীমন্তিণী। না কাঁদতে নয়। চোখের জল ওর আগেই শুকিয়ে গেছে। আজ ৫ বছর পর অমিতের সাথে দেখা করতে যাবে। সব হিসেব নিকেশ মিটিয়ে নিতে হবে না! সেই জন্যই নিজেকে মানসিক ভাবে একটু তৈরি করে নেওয়া দরকার। আর তার জন্য দরকার একাকীত্ব। আর এই আইটি কোম্পানিতে ওয়াসরুম ছাড়া অন্য কোথাও একা থাকা অসম্ভব। 


সন্ধ্যে ৬ টা,

- কখন এলে? 

- এই তো মিনিট পাঁচেক হবে। কেমন আছো সীমন্তিণী?

- যেমন দেখছো। দিব্যি আছি। 

- বিয়ে করোনি কেন?

- এখনো এ সমাজে লগ্নভ্রষ্টা মেয়েদের কেউ বিয়ে করেনা। তাছাড়া এই বিয়ে, বিশ্বাস, ভালোবাসা এই শব্দগুলোর আমার কাছে আর কোনো অস্তিত্ব নেই।

- আমায় ক্ষমা করা যায় না?

- তুমি কোনো ভুল করেছিলে নাকি, যে ক্ষমা চাইছো?

-  করেছিলাম। ওরকম একটা কেরিয়ারের সুযোগ আমি হাতছাড়া করতে পারিনি। ওটা আমার স্বপ্ন ছিল। পাচঁবছর বিদেশে থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। কিন্তু হারিয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশী। 

- কেরিয়ারের জন্য বিয়ের দিন কাউকে না জানিয়ে চলে গেলে তুমি! আমায় অন্তত বলতে পারতে একবার। আমি কি না বলতাম। 

- ভয় পেয়েছিলাম।

- হুমম্ 

- আমরা আর একবার শুরু করতে পারিনা না? 

- না। এইসব আর নতুন করে আমার পক্ষে সম্ভব নয়। উঠি আজ।

- আমি যদি অপেক্ষা করি?

- তাহলেও নয়। আমার কেরিয়ার নিয়ে এখন আমি ব্যস্ত। তাছাড়া তোমার সাথে আবার নতুন করে শুরু করলে আমার নিজেকে খুব ছোটো মনে হবে। আত্মসম্মানে লাগবে। নিজের আত্মমর্যাদা খোয়াতে আর আমি পারব না। আসি।

অমিতকে নিজের ভুলটা চোখে আঙুল বুঝিয়ে দিয়ে ধীর পায়ে ক্যাফে থেকে বেরিয়ে যায় সীমন্তিণী। টেবিলে পরে থাকে আধখাওয়া ফিসফ্রাই। আধভরতি কফির কাপ থেকে তখনও ধোঁয়া উড়ছে। কিছু কিছু গল্প অসম্পূর্ণ ভাবেই সম্পূর্ণ হয়। এটাও তেমনি একটা...


- দেবাশ্রিতা মজুমদার


চিত্রঋণ: সুশ্রীতা দি