Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মহিলা প্রার্থী সংরক্ষণ , নামে মাত্র

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।মেয়েদের জন্য নানা প্রকল্প ।কিন্তু তিন দলের মোট মুসলিম মহিলা প্রার্থী বারোজন ।এ যে লজ্জার । সংখ্যালঘু তোষন।গালভারি কথা।বাতাসে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ভোটের মোকা নিতে সংখ্যালঘু তোষন ও মহিলা দের তোষন চলছে এ…



 তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।

মেয়েদের জন্য নানা প্রকল্প ।কিন্তু তিন দলের মোট মুসলিম মহিলা প্রার্থী বারোজন ।এ যে লজ্জার । 

সংখ্যালঘু তোষন।গালভারি কথা।বাতাসে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ভোটের মোকা নিতে সংখ্যালঘু তোষন ও মহিলা দের তোষন চলছে এবার বঙ্গ ভোটে।সব দলই তাঁদের ইস্তাহার তৈরি করেছেন মহিলাদের দিকে নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে ।কিন্তু মহিলা সুরক্ষার বিন্দুমাত্র নেই।নেই মহিলাদের কোন দিশা।কিন্তু সকলেই চাইছেন মহিলা ভোটের সিংহভাগ ।কারন মহিলা ভোটে ভর করেই নির্বাচনী রনতরী পার করতে চাইছেন সব দল।এটাই এবার কেন বেশ কয়েকবারের নতূন স্টাইল ।বাংলার ভোটেও সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে।এ যেন এক নতুন খেলা।খেলা তো শুরু হয়ে গেছে।ইস্তাহার রেডি।

কিন্তু যদি একটু বাস্তবের মাটিতে চোখ রাখি।সিংহভাগ মহিলা ঠিক করেন ভোট কাকে দেবেন তা পরিবারের পুরুষ সদস্যরাই ঠিক করে দেন।পুরুষ সদস্যদের কথা মতোই এই সব মহিলারা ঠিক করেন দলের প্রতীক।আর সেখানেই ভোট দেন।সকলে হয়তো নয়,কিন্তু বেশিরভাগ তো বলা যেতেই পারে।তর্ক থাকতে পারে কিন্তু এই বাস্তব ঘটনাটিকে তো উড়িয়ে দেওয়া যায় না।বিশেষ করে যে সব মহিলারা পুরুষ নির্ভর হয়ে আজও জীবন কাটান।

মুসলিম নেতৃত্ব বলতে দল এখনো বোঝে পুরুষ কেই।অথচ মেয়ে দের জন্য ইস্তাহারে প্রকল্পের ঝুরি।কিন্তু নজর নেই মেয়েদের মূল সমস্যার দিকে।আর সে নজর না দেওয়ার পিছনে থাকে সেই পুরুষদের নেতৃত্ব ।

তৃনমূল দলে মুসলিম মহিলা প্রার্থী মোট ছয় জন।আর এরা সকলেই আগে বিধায়ক হয়েছেন।নতূন কোন মহিলা মুসলিম মুখ খুঁজতে চাননি তৃনমূল দল।

বিজেপি দলের মহিলা মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা তিনজন।এঁদের একজন আগে অন্য দলের বিধায়ক ছিলেন।বাকি দুই অবশ্যই নতূন মুখ।

সংযুক্ত মোর্চার তালিকায় মহিলা মুসলিম প্রার্থী র সংখ্যা ও তিন।আর এঁরা সকলেই কংগ্রেস দলের।

এদিকে যাঁরা তোষনের কথা বলে চলেছেন তাঁদের জন্য এই পরিসংখ্যান ই যথেষ্ট ।আজও মুসলিম মহিলারা সেই তিমিরেই ।রাজনিতীর ধ্বজা আজও পুরুষের কাঁধেই।

অথচ নির্বাচনর আগে মহিলা দের জন্য গালভরা প্রতিশ্রুতির পাহাড় ।কত কি দেওয়ার কথা মহিলা দের জন্য ।

সন্ধ্যার পর রাস্তায় আলো, বাজারে বাজারে মহিলা শৌচাগার,সরকারী বাসে বিনা খরচে মহিলা দের জন্য যাতায়াতের সুবিধা, কারিগরী শিক্ষার বস্তা বস্তা সুযোগ ।আরো কত কি।সব মহিলা দের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ।অথচ বাস্তবতা বলছে আজও মহিলারা কত বিপদে।

মুসলিম মহিলা ভোট যারা পেতে চান, অমুসলিম মহিলা ভোট যারা পেতে চান তাঁদের ইস্তাহার শুনেই খুশি থাকতে হচ্ছে মহিলা দের।কাজের কাজ কোথায় ।

মহিলা দের ভোট তো চাই ভোট বৈতরনী পার হতে।কিন্তু মহিলারা কি পেলেন সে হিসাব তো করতে হবে।মহিলাদের মধ্যেই আজও অনেকেই দ্বিধাবিভক্ত ।ভোট মিটে গেলে এসব কথা রাখবে তো।

আজও যখন চোখে দেখি এক ঝাঁক ইস্কুল কলেজের মেয়ে দের মধ্যে বেশ কিছু মুসলিম মহিলাদের তখন বিশ্বাস করুন মনটি ভরে ওঠে।কারন মেয়ে দের স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে গেলে শিরদাঁড়া সোজা করে বাঁচতে শেখায় এই শিক্ষা ।ধর্মের গন্ডী ছেড়ে বেরিয়ে আসতে গেলে কুসংস্কার মুক্ত তো হতেই হবে।কারন শিক্ষা চেতনা বাড়ায়, চেতনা বিপ্লব ঘটায় ।সেই নারী শিক্ষার জন্য বিদ্যাসাগর থেকে শুরু করে আরো অনেক মহিষী লড়াই করেছেন।

এবারের ভোটে হয়তো মহিলা প্রার্থী আছেন বেশ কিছু।কিন্তু সংখ্যার নিরিখে তা পুরুষদের তুলনায় অনেকেই কম।আর মুসলিম মহিলা তো সত্যিই সামান্য ।আর তা তিন দল মিলে বারো।এদের মধ্যে আবার সিংহভাগই পুরানো মুখ।

বামপন্থী দলে অনেকগুলো ঝকঝকে শিক্ষিতা তরুনী থাকলেও একটিও মহিলা মুখ দেখা যায় নি।আব্বাস সিদ্দিকীর দলে তো দেখাই যায় নি।কেন এমন হবে।এ প্রশ্ন মুসলিম মহিলারাই করছেন।তৃনমূল দলের ছয়জন ই মুসলিম মহিলা পুরানো ।যাঁরা আগে ভোটে জিতেছেন।বিজেপি দলে তিনজনের মধ্যে দুজন অবশ্য নতূন ।

মুসলিম অমুসলিম সকল মহিলারাই চাইছেন বেশি বেশি করে মহিলা মুখ উঠে আসুক নির্বাচনর ময়দানে ।যত মহিলা উঠে আসবেন ,সে বিধানসভায় হোক কিংবা সংসদে ততই মঙ্গল মহিলা দের।মহিলাদের হয়ে কথা বলতে গেলে মহিলা মুখ তো সত্যিই জরুরি ।

সব দলের ইস্তাহারে রয়েছে মহিলা দের মঙ্গলের জন্য হাজারো বার্তা ।কিন্তু প্রার্থী তালিকায় সে ছবি তো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।ফলে এই সব ইস্তাহার শুধুমাত্র যে কথার কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।বিশ্বাস করতে পারছেন না মহিলারা।অথচ একথা সত্য যে মহিলারা উঠে আসতে না পারলে সে দেশ বা সে রাজ্য পিছিয়ে পড়তে থাকবে ক্রমাগত ই।

পুরুষ শাসিত সমাজে মহিলারা সত্যি সত্যিই অবহেলিত ।বিশেষ করে আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারা।সংখ্যা লঘু ও আদিবাসীদের জন্য আব্বাস সিদ্দিকী দল গড়লেও সেই দলেও একটিও মুখ তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।এতো বেদনার ।

ভারতবর্ষের মতো বৃহত এই দেশে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা ।আর তিনি দশ বছর ধরে বাংলাকে পরিচালনা করে আসছেন।সেই রাজ্যে আরো বেশি বেশি করে উঠে আসুক মহিলা মুখ।সংখ্যা লঘু ,আদিবাসী মহিলা ও সাধারণ মহিলা দলে দলে অংশগ্রহণ করুক নির্বাচনে।

মহিলাদের এগিয়ে আনতে না পারলে সমূহ বিপদ।

একথা ভাবার সময় এসেছে।

দেশ জুড়ে একটা বড় অংশ মহিলারা।সেই মহিলা প্রতিনিধিদের বেশি বেশি করে অংশগ্রহণ জরুরি ।পিছিয়ে পড়া মহিলা দের এগিয়ে না আনতে পারলে দেশের উন্নয়ন এগিয়ে চলতে পারবে না।

চাই মহিলা প্রতিনিধিত্ব ।