Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

# বিভাগ=অণুগল্প# শিরোনাম=অভিশপ্ত সেই পয়লা বৈশাখ# কলমে=প্রশান্ত কুমার শীল# তারিখ=১৭/০৪/২০২১**********************************************মলয় ভালোবাসত নীপাকে। প্রায় সাত বছর ধরে ওদের প্রেম। মলয় সব কথাই শেয়ার করত আমাদের সাথে। আম…

 


# বিভাগ=অণুগল্প

# শিরোনাম=অভিশপ্ত সেই পয়লা বৈশাখ

# কলমে=প্রশান্ত কুমার শীল

# তারিখ=১৭/০৪/২০২১

***********************

***********************

মলয় ভালোবাসত নীপাকে। প্রায় সাত বছর ধরে ওদের প্রেম। মলয় সব কথাই শেয়ার করত আমাদের সাথে। আমরা চার বন্ধু ছিলাম হরিহর আত্মার মতো। 

           একদিন মলয় এসে আমাদের বলল, জানিস আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী পয়লা বৈশাখ আমরা বিয়ে করবো। অবনী তো আনন্দে চিৎকার করে উঠল। আমরাও স্বাগত জানালাম। তবে শিবু একটু আপত্তি করেছিল। শিবু বলেছিল,"দ্যাখ, যা করবি ভেবে চিন্তে করিস। বিয়েটা কিন্তু ছেলেখেলা নয়। আমার মনে হয় দুই পক্ষের গার্জেনের মতামত নিয়ে এগোনো ভালো।" আমরা শিবুর কথায় একটু ভারাক্রান্ত হয়ে গেলাম। তবে আন্তরিক ভাবে শিবুর মতামতকে অগ্রাহ্য করতে পারলাম না। মলয় বলল,"নারে, এটা মনেহয় কোনমতেই সম্ভব নয়। কারণ, নীপার বাবা ভীষণ একগুঁয়ে মানুষ। ভীষণ সেকেলে মনোভাবাপন্ন। আমাদের এই সম্পর্ক কিছুতেই উনি মেনে নেবেন না। তাইতো বাধ্য হয়ে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোরা সবাই থাকিস আমার সাথে।"  নিমরাজি থাকা শিবুও শেষ পর্যন্ত রাজি হলো। কথা ফাইনাল, পয়লা বৈশাখ আমাদের বন্ধু মলয় বিয়ে করতে চলেছে নীপাকে।

          অবশেষে এলো সেই প্রতিক্ষিত পয়লা বৈশাখ। কথা হয়েছে সন্ধ্যা বেলায় নীপা আসবে শিব মন্দির তলায়। ওখানেই বিয়ে হবে মলয় ও নীপার। আমরা সন্ধ্যা বেলায় পৌঁছে গেলাম শিব মন্দিরে। অবনী তখনও আসেনি। রতন বলল, অবনীটা চিরদিন এরকম লেট। যাইহোক এসে যাবে নিশ্চয়ই। এদিকে সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হতে চললো। নীপা আসছে না কেন?সবাই টেনশন করছি। হঠাৎ দেখি অবনী হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছে। কিরে অবনী,তুই এতো লেট? অবনী হাঁপাতে হাঁপাতে বল্ল,"বলছি,বলছি,শোন। ওদিকে সর্বনাশ হয়ে গেছে। নীপার বাবা কিভাবে যেন আজকের পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে গেছে। নীপাকে খুব মারধর করেছে। নীপা ঘর বন্ধ করে স্যুইসাইড করার চেষ্টা করেছে। পাড়ার লোক দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করে নীপাকে। সোজা হসপিটালে নিয়ে গেছে। সমস্ত ঘটনা শুনে আমি ছুটতে ছুটতে এলাম। মলয় অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল মাটিতে। আমরা সবাই মিলে ধরাধরি করে মলয়কে হসপিটালে নিয়ে গেলাম। একই হসপিটালে নীপাও ভর্তি। 

         ওরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এলো দুজনেই। পরে নীপার বাবা রাজি হয়েছিলেন। ওই বছর ফাল্গুন মাসেই বিয়ে হয় ওদের। আজ প্রায় বাইশ বছর হয়ে গেল। বেশ সুখেই আছে ওরা। আগামী মাসে মলয়ের মেয়ের বিয়ে। নিমন্ত্রণ করে গেছে বাড়ি এসে। আজও কিন্তু আমরা চার বন্ধু ভুলতে পারিনি অভিশপ্ত সেই পয়লা বৈশাখ।

***********************

***********************