Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

সৃষ্টি সাহিত্য যাপন ।সুমিতা ভট্টাচার্যসংশয়১৯/৫/২১/
অনেক যুদ্ধ করে ও আমার আর এই সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে বর্তে থাকা হলোনা। ছেলে মেয়ে দের বুকফাটা কান্না র আওয়াজে বুঝতে পারলাম আমি আর বেঁচে নেই। কিন্তু হতচ্ছাড়া স্বামী  দেবতা  টির কোন…

 


সৃষ্টি সাহিত্য যাপন ।

সুমিতা ভট্টাচার্য

সংশয়

১৯/৫/২১/


অনেক যুদ্ধ করে ও আমার আর এই সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে বর্তে থাকা হলোনা। ছেলে মেয়ে দের বুকফাটা কান্না র আওয়াজে বুঝতে পারলাম 

আমি আর বেঁচে নেই। কিন্তু হতচ্ছাড়া স্বামী  দেবতা  টির কোন সাড়াশব্দ তো পাওয়া যাচ্ছে না!? সত্যি

মরেছি তো নাকি স্বপ্ন দেখছি!? চিমটি কেটে দেখতে গিয়ে বুঝলাম সত্যিই মরেছি। শরীরটা 

পুরো হালকা হয়ে গেছে, ইচ্ছে করলেই ভেসে বেড়াতে পারবো। হঠাৎ অনেক গুলো গলা শুনতে

পেলাম ""হায়রে খুব ভালো মানুষ ছিল গো, সতী সাবিত্রী,সতী লক্ষী গো ,কি সুন্দর শাঁখা সিঁদুর নিয়ে

চলে গেলো ।"'বুঝতে পারলাম পাড়া, প্রতিবেশী দের দুঃখ উথলে উঠছে ।

না মিথ্যা কথা নয় সবাই ই প্রায় নিজগুণে আমায় 

একটু হলেও ভালো বাসতো।

একটু পরে ই দেখলাম স্বামী দেবতা টি র চোখে র

জল বাঁধ মানছে না,আহারে খুব কষ্টের ব্যাপার ,

কার উপর আর চোটপাট নেবেন, সময়ে অসময়ে কাকে অর্ডার দিয়ে ভালো ভালো রান্না করিয়ে নেবেন। বাড়িতে ঢুকেই চা করার জন্য বলবেন।

মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে,, ছেলে বিদেশে পড়াশোনা করে, ওখানে ই হয়তো চাকরি পেয়ে

স্থায়ী হয়ে যাবে।

সুতরাং স্ত্রী হারানোর ব্যাথা র সঙ্গে রয়েছে, আপনজন কে হারানোর ব্যাথা, সুখে দুঃখের দিনে 

পাশে থেকে দুঃখ ভাগ করে নিতে পারার বন্ধুকে হারানোর ব্যাথা।


সুতপা বুঝতে পারলো তার এই না থাকাটা, আবীরের জীবনে কতোটা শুন্যতা বয়ে আনবে।

কিন্তু হায় তার তো কিছুই করার নেই, মানুষ তো

ভাগ্যের কাছে বড়ই অসহায়।


মেয়েদের ঘরসংসার আছে দুই একদিনেই শোক ভুলে শশুর বাড়ী চলে যাবে ।

ছেলে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য আবার পাড়ি

দেবে বিদেশে।

শুধু এই বয়সে খুব একা হয়ে পড়বে আবীর।


দাহকার্য শেষ করে ফিরে এসেছে সবাই।

যে যার মতো ব্যাস্ত, ভীষন একটা মনখারাপ এর

দেশে পৌঁছে গেছে আবীর।

অল্প কিছু মুখে দিয়েছে সে সবার অনুরোধে,


সোফাটায় হেলাল দিয়ে ক্লান্ত শরীর টাকে এলিয়ে

দিল আবীর , ধীরে ধীরে ক্লান্ত চোখ দুটো তে

ঘুম নেমে এলো। ছেলে মেয়ে রা যাওয়ার আগে

 সারা দিনের জন্য একজন রান্না বান্না করার জন্য বিশ্বস্ত দিদি কে ঠিক করে দিয়ে গেছে।

কোনো অসুবিধা হলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিতে বলে

ছলো ছলো চোখে  যে যার জায়গায় রওনা হয়ে গেছে।

এখন শুধু সে একা খুব একা

কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আবীর বুঝতে পারলো ও কোনো সময়ের জন্য ই যেন একা বোধ করছেনা। মনে হচ্ছে যেন সময় কেউ তার সঙ্গে ই

থাকে।

আবীর অনেক কিছুই  ঠিক ঠাক  সময়ে হাতের কাছে খুঁজে পায় না

কিন্তু সে আশ্চর্য হয়ে দেখছে কিছু খুঁজে না পেলে কিছু মুহূর্ত পরেই তার হাতে র সামনে চলে আসছে।

সে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে আসার পর কেন যেন তার মানে হচ্ছে একটা মমতার হাত তার সমস্ত 

ক্লান্তি কে নিমেষেই দূর করে দিচ্ছে।


আবীর বুঝতে পারে সুতপা তাকে ছেড়ে কোথাও 

যায়নি, তার কায়াহীন অস্তিত্ব প্রতি পদক্ষেপে তাকে

মনে করিয়ে দেয় সে একা নেই

একদিন দিদি এসে দেখে আবীর আপনমনে সুতপার বাঁধানো ছবি র দিকে তাকিয়ে অনর্গল কথা বলে চলেছে।

দিদির মনে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি,সে মনে

করেছে হয়তো খুব কষ্ট হচ্ছে তাই স্মৃতি রোমন্থন করে চলেছেন


বেশ কিছুদিন পর 

"""'আবীর তোমার কি হয়েছে আবীর , এই রকম কেন করছো গো !?

আমার খুব কষ্ট হচ্ছে সুতপা বুকের মধ্যে খুব কষ্ট হচ্ছে গো।


ছেলে মেয়ে দের খবর দিয়েছো?দিদি তো আমার কথা বুঝতে পারে না! তুমি দিদিকে বলো , ওদের

খবর দাও।একা একা ডাক্তার দেখাচ্ছো! না সুতপা

ওরা নিজের নিজের জায়গায় বরো ব্যাস্ত ।


আমায় আর একা করে রেখোনা, আমার খুব কষ্ট

আমি বুঝতে পারছি আমার সময় হয়ে গেছে তোমার কাছে যাওয়ার, তুমি আমায় এবার তোমার কাছে ডেকে নাও।

সময় কখনোই থেমে থাকে না, তারপর ও কিছু দিন কেটে যায়।মেয়েরা এসে বাবার কাছে কিছু দিন থেকে যে যার মতো চলে ও যায়।

ছেলে বিদেশ থেকে খবর নেয়।

আবীর কিছু টা সুস্থ ও বোধ করতে থাকে।

হঠাৎ সেদিন রাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়

মেঘের গর্জন আর ঝড়ের দাপটে চারিদিকে ভয়ানক এক আবহে র সৃষ্টি হয়

একাঘরে আবার তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় আবীরের,

**

"""সুতপা তুমি কোথায়? তুমি কি শুনতে পারছো আমার কথা, সুতপা অনুভব করতে পারছো আমার কষ্ট, আমি আর পারছি না আর পারছিনা!

একজোড়া মমতার হাত গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরলো আবীরের শরীর,পাকে পাকে বেঁধে ফেললো

তাকে পরম স্নেহে র সুরে বলল""আমি আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না আবীর

আজ থেকে নতুন লোকে শুরু হলো আমাদের দুজনের পথচলা

পরের দিন সকালে ঝড় থেমে গেল, দিদিভাই এসে

অবাক বিস্ময়ে দেখলো বিছানায় আবীরের নিথর দেহ পরে রয়েছে তার বুকের মাঝে জড়িয়ে আছে 

সুতপা র বাঁধানো ছবি টা

ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো দিদিভাই, সবাই ছূটে এলো

অনেকেই বলে উঠলো আবীর যাতে বেশি কষ্ট না

পায় তাই তার কাছে আবীর কে ডেকে নিয়ে গেল

সুতপা


আসলে সুতপা একটা দিনের জন্যেও আবীরের থেকে আলাদা হয়ে থাকতে পারে নি ,ওর মুক্তি হয় নি , এবার হয়তো আবীরকে কাছে পেয়ে সত্যি কারের মুক্তি পেতে ও পারে।

জানিনা এই পৃথিবীতে কিইন্না ঘটে।।।


!

্ জল