Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

ছোট গল্প:- অসীম ভালোবাসা 🖋ইন্দ্রনীল কর তারিখ:- ২৭\০৬\২১চুচুঁড়া 
💜💛❤💚৹৹অসীম ভালোবাসা৹৹💚❤💛💜       💞🌿💞🌿💞ইন্দ্রনীল💞🌿💞🌿💞   
               বিয়ের তিনদিন হয়ে যাওয়ার পরেও আমার সাথে আমার স্বামীর সম্পর্ক খুব স্বাভাবিক। রাতে…

 


ছোট গল্প:- অসীম ভালোবাসা 

🖋ইন্দ্রনীল কর 

তারিখ:- ২৭\০৬\২১

চুচুঁড়া 


💜💛❤💚৹৹অসীম ভালোবাসা৹৹💚❤💛💜

       💞🌿💞🌿💞ইন্দ্রনীল💞🌿💞🌿💞   


               বিয়ের তিনদিন হয়ে যাওয়ার পরেও আমার সাথে আমার স্বামীর সম্পর্ক খুব স্বাভাবিক। রাতে খাওয়া দাওয়া দেওর ননদদের সাথে হাসি ঠাট্টা শেষে রাত বারোটার দিকে ঘুমোতে আসি। আমার স্বামী আমাকে দেখে দ্রুত বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায় যেন আমি তার অফিসের বস। এক্ষুনি তাকে এক রাম ধমক দেবো। আমি বিছানায় বসে থাকি কিছুক্ষণ। তারপর হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে ঘুমোতে আসি। উনি ততক্ষণে মশারি টানিয়ে ফেলেন। মশারি গুঁজতে গুঁজতে লাজুক স্বরে বলেন। 

-- বহুদিনের অভ্যেস বুঝলে? আর আমি মশারি না ঝেড়ে টানাই না। বিশ্বাস করো ভেতরে একটাও মশা থাকবে না। তুমি পুরো রাত আরামে ঘুমোতে পারবে। 

আমার ইচ্ছে করে ফিক করে হেসে ফেলি। কিন্তু কিছুটা ইচ্ছে করেই মুখ গোমড়া বানিয়ে রাখি। টানটান বিছানায় চমৎকার পরিস্কার মশারি। ঘর জুড়ে হালকা এয়ার ফ্রেসনারের গন্ধ। আমার মন্দ লাগে না। তবে আমার স্বামী এখনো স্বামী সুলভ আচরণ কেন করছে না, সেটাও ভেবে পাচ্ছি না।


আমার মোবাইল টেপাটেপির অভ্যেস কম। তবুও কিছুক্ষণ অনলাইনে থাকি। তারপর লজ্জায় পড়ে যাই, এই মাঝরাতে আমার নামের পাশে সবুজ আলো দেখলে সবাই কি ভাববে? উনি অপেক্ষা করেন।

উনি মানে আমার স্বামী ‘রোহিত ‘। একসময় কথা বলা শুরু করেন ইউনিভার্সিটির মজার মজার গল্প।

কোন স্যারকে কি নামে ডাকা হতো, কার প্রেমিকাকে ভুল প্রেমপত্র সাপ্লাই করা হয়েছিল এইসব।

আমিও টুকটাক জবাব দিই। কাল বিকেলে আমরা ধানবাদ চলে যাবো। ওখানেই ওর পোষ্টিং।


বাবা আমাকে ফার্নিচার দিতে চাইলে উনি একটু বিরক্ত হলেন সম্ভবত। মাথা নিচু করে বললেন।

-- বাড়িতে আপাতত কিছু লাগবে না। লাগলে আমি অবশ্যই জানাবো।


পরদিন আমাদের চলে যাওয়া উপলক্ষে আমাদের বাড়ি থেকে সবাই এলো। বড়দি তীক্ষ্ণ চোখে খানিকক্ষণ আমার দিকে চেয়ে কি দেখলেন ভগবান জানে। তারপর ফিসফিস করে বললেন

-- ‘এই তোদের মধ্যে ওই সব হয়নি? ‘

-- ‘ওইসব, আবার কোনসব?

-- ‘ আহ, বোঝে না ন্যাকা। স্বামী স্ত্রীদের মধ্যে যা হয় আর কি! ‘

আমি চুপ করে রইলাম। আমার বড়দি ঝড়ের বেগে ড্রয়িংরুমে চলে গেলেন। সম্ভবত সবাইকে এসব জানাতে। আমি লজ্জায় একশেষ।


ও আমাদের বাড়ির সবাই আসা উপলক্ষে প্রচুর আয়োজন করেছে। নিজে গিয়ে টাটকা মাছ কিনে এনেছে। খুঁজে খুঁজে ভালো দই ও পায়েসের জন্য খাঁটি দুধ নিয়ে এসেছে। আমার ননদেরা আমাকে দামি একটা শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। আমি শাড়ি ভালো পরতে পারি না। সেই মনে হয় বোনেদের বলেছে। তার বোনেরা এখানে কোনো অতিথি কেউ বেড়াতে এলেই দৌড়ে আমার ঘরে আসে । আমাকে শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে দাদার দিকে তাকায়। ওর দাদা লাজুক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলে, 

-- অতিথি এসেছে। তুমি অস্বস্তি বোধ করলে বেশিক্ষণ থেকো না। আমি ম্যানেজ করবো। ও হ্যাঁ শাড়িটায় তোমায় অদ্ভুত মায়াবিনী লাগছে। এই রঙের আরো একটা শাড়ি কিনে নিও। যা কিছু সুন্দর সেটা দুটো হওয়া উচিৎ। যেন একটা শেষ হলেও আরেকটা থাকে।


জামাইবাবু ওকে আমার ঘরে ডেকে এনে রীতিমতো জেরা শুরু করলেন।

-- ‘ তোমাদের প্রবলেম কি? আসলে প্রবলেমটা কার? ‘ হেনতেন নানান প্রশ্ন। 

আমি লজ্জায় লাল হচ্ছি। ও দেখলাম বেশ সাবলীল ভাবেই সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জামাইবাবু কে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলল 

-- ‘ আমারই তো স্ত্রী, এতো তাড়াহুড়োর কি আছে? 


দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ হবার পরপরই গাড়ি চলে এলো। আমার শ্বাশুড়ি খাবার দিতে চাইলেন সাথে। ও খুব আস্তে না করলো। তারপরেও টুকটাক জিনিস প্রচুর হয়ে গেল। ও শুধু আমার আর ওর জামা কাপড়ের লাগেজ গাড়িতে ওঠালো। আমাদের বাড়ি থেকে আনা জিনিস ওদের বাড়িতে আর ওদের বাড়ির সব জিনিস যা আমাদের জন্য রেডি করা হয়েছিল সব আমাদের বাড়িতেপাঠিয়ে আমার পাশে গাড়িতে উঠে বসলো। আমার কেন জানি খুব কান্না পাচ্ছিল। এই অদ্ভুত মানুষের সাথে একটা বাড়িতে একা থাকবো কি করে কে জানে?


ধানবাদের বাড়িটা চমৎকার। খুব গোছানো। মানুষটা খুব গোছানো সেটা বোঝা যায়। বিয়ের প্রস্ততি স্বরূপ ও শুধু বাড়িই নেয়নি। টু বেডরুমের বাড়িতে ডাইনিং, ড্রয়িং সহ যেখানে যে আসবাব থাকা দরকার সবই আছে। সবচেয়ে আশ্চর্য রান্নাঘরে বেলুন চাকি থেকে শুরু করে ব্লেন্ডার পর্যন্ত আছে। সব জিনিস ঝকঝক করছে। আমার হঠাৎ মনটা ভালো হয়ে গেল। ও নিজেই আমাকে চা বানিয়ে খাওয়ালো। সাথে কেক আর গরম শিঙাড়া। এগুলো আসার পথে কেনা। সে শিঙাড়ার কোণা দেখতে দেখতে বললো

-- ‘ পাকা হাত না, পাকা হাতের শিঙাড়ার কোণা এতো ভোঁতা হয় না। 

আমি ফিক করে হেসে ফেললাম। ও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কেকের ডেট দেখে তারপর আমায় খেতে দিল। যেন আমি তার বাড়ির বিশিষ্ট অতিথি, ত্রুটি দেখলে এক্ষুনি রাগ করে চলে যাবো।


 রাতে ও আমায় স্নানে পাঠিয়ে রান্নাঘরে খুটখাট শুরু করলো। আমিও কিছু বললাম না। কাপড় আলমারিতে গুছিয়ে আমি স্নানে চলে গেলাম। এসে দেখি ‘ ভাত, আলু ভাজা, ডিম ভাজা আর ডাল ভাতে। ও টেবিলে খাবার রেডি করছে।

আমায় দেখেই হেসে বললো

-- ‘ তুমি কি একটু অপেক্ষা করবে, আমি স্নান করে আসি?

আমি হেসে বললাম

-- ‘ যাও...। 

মানুষটাকে প্রথম তুমি ডাকলাম ভালোই লাগলো। রাতে আবার গল্প।


আজ তার একটু উন্নতি হয়েছে। আমার ঘুম আসছিল না। সে খুব যত্ন করে আমার চুলে বিলি কেটে দিল। কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। সকালে দেখি খিচুড়ি আর ডিম ভাজা, বেগুন ভাজা সহযোগে খাবার রেডি।

গ্লাসের নিচে একটা চিরকুট

 ‘ নন্দিতা, তুমি খেয়ে নিও। আমি বিকেলে আসার সময় বাজার করে নিয়ে আসবো। তুমি গ্যাস জ্বালিও না। এর মধ্যে খিদে পেলে। কৌটোয় বিস্কুট আছে। কালকের বাসি কেক খেও না ওটায় ভেজাল তেল দেওয়া খেয়েই বুঝেছি । '

স্ত্রীর কাছে স্বামীর কি অদ্ভুত চিঠি। তাও আবার প্রথম চিঠি। আমি হাসবো না কাঁদবো। 


এরপরের তিনদিনে বুঝে গেলাম, আমার স্বামী ভোজন প্রিয় না তবে খাদ্য রসিক। সে শুধু খেতে না রাঁধতেও খুব পছন্দ করে। অফিস থেকে ফিরেই মাছ কাটে। আমি সব্জী কেটে দিলে সে হাসে। তবে হাসির ধরণ দেখে বোঝা যায়। সে আমার চেয়ে অনেক ভালো সব্জী কাটতে পারে। না চেখেও সে তরকারিতে ঠিকঠাক লবণ দেয়। রান্নার রঙ কেমন হয়েছে আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করে। এই তিনদিনে লাউ চিংড়ি, পুঁটি মাছ ভাজা, মুরগির কোরমা এসব কঠিন রান্নাগুলোই সে করছে। সপ্তম দিনে আমি হঠাৎ সকালে বললাম 

-- ‘ আজ পিৎজা খেলে কেমন হয়? ‘ 

ও হেসে বললো 

-- খুব ভালো হয়। আমারো কেন জানি আজ পিৎজা খেতে মন চাইছে। আচ্ছা আমি বিকেলে ফিরে আসি।


 প্রায় সন্ধ্যা শেষ করে মানুষটা ঘরে ফিরলো। রাগে দুঃখে আমার চোখে জল চলে এলো। তিনবার টোকা দেওয়ার পরেও যখন দরজা খুললাম না। তখন দেখি ও ওপাশ থেকে বলছে 

-- ‘ ভগবান, মাপ করো। ভগবান মাপ করো কোনো অঘটন যেন না হয়। ‘ 

আমি দ্রুত দরজা খুলে দিলাম। তার দু হাত ভর্তি নানান ধরনে বাজার। এ আর নতুন কি!

ও প্রথমে স্নানে গেল। তারপর আমি ওভেনে খাবার গরম করলাম। ও উপদেশ দিতে থাকলো 


"আমি বাড়িতে না থাকলে তুমি, গ্যাস ধরাবে না। টুকটাক কিছু খাবার মাইক্রোওভেনে গরম করলেই চলবে।"

আমি কিছু বললাম না। ও ডাইনিং টেবিলে মনোযোগ দিয়ে কি সব করছে। আমি ঘরে এসে বই পড়া শুরু করলাম। মানিক বন্দোপধ্যায় এর ‘ অতসী মামি ‘ গল্পটা যতোবার পড়ি চোখে জল আসে। এমনও প্রেম হয়! তাও আবার স্বামী স্ত্রীর!


 একটু পরেই ও ডাকতে লাগলো 

-- ‘ নন্দিতা এসো দেখে যাও, কি বানিয়েছি। ‘ লোকটার কপালে ঘাম। আমি গিয়ে দেখি মস্ত একটা পিৎজা। শুধুমাত্র শুনে বা ইউটিউব দেখেও যে এতো সুন্দর পিৎজা বানানো যায় প্রথম দেখলাম। কারণ আমি জানি ধানবাদে ভালো পিৎজার দোকান নেই। আমার বর তাই আমাকে খুশি করতে সরাসরি পিৎজা বানিয়েই খাওয়াচ্ছেন। আমি পিৎজাটি সুন্দর করে কাটলাম। আজ সন্ধ্যায় কিছু রান্না করা হয়নি। তাই পিৎজাই আমাদের রাতের খাবার। ও যখন তোয়ালে কাঁধে চাপিয়ে আমায় খেয়ে নিতে বলে আবারো স্নানে গেল। তখনই আমার একটু খটকা লাগলো। আমি শোবার ঘরে এসে দেখি ও শুয়ে আছে। মুখ টকটকে লাল। 


অপরাধির মতো আমায় বলল

-- ‘ কিছু মনে করো না। পিৎজা খুব ভালো খাবার, তুমি খাও। আমার শরীরটা একটু ম্যাজম্যাজ করছে। পরে উঠে ভাত রান্না করবো। লোকটার মায়ামাখা কথা শুনে বুকের কোথায় একটা ধাক্কা লাগলো। 

আমি আস্তে উঠে রান্নাঘরে গেলাম। ঝকঝক করছে চারদিকে। সহজেই চালের কৌটো খুঁজে পেলাম। ফ্রিজ খুলে দেখি ছোট ছোট বক্সে হলুদ লবণ মাখানো ইলিশ মাছ পিস করে রাখা আছে। একটা বড় রুই মাছের মাথা কেটে ধুয়ে পরিস্কার করে রাখা আছে। আমি ভাত রান্না করে কয়েক পিস ইলিশ মাছ ভেজে নিলাম। মুগডাল দিয়ে মাছের মাথার মুড়িঘণ্ট করলাম। একটা বেগুন পোড়াল । ফ্রিজ থেকে শশা বের করে কুঁচিয়ে রাখলাম। সব টেবিলে দিয়ে তাকে ডাকতে গেলাম। দেখি মানুষটা জ্বরের ঘোরে শুধু কাঁপছে।


 তাড়াতাড়ি জ্বর মেপে আমার মাথায় হাত ১০২ :৫। সিদ্ধান্ত নিলাম। বালতি করে জল না এনে বড় মগে করে জল এনে ঘরেই বালতি ভর্তি করলাম। তারপর পুরো শরীর স্পঞ্জ করে দিতে থাকলাম । সাথে প্রায় দু ঘণ্টা অনবরত মাথায় জল ঢাললাম। একসময় মনে হলো শরীর ঘাম দিচ্ছে। জ্বর মেপে দেখি ১০০:৫। ও এবার চোখ মেলল লজ্জিত স্বরে বলল

-- ‘ তোমায় খুব খাটালাম। ‘ 

-- চুপ করে শুয়ে থাকো বলে আরেকবার গা মুছিয়ে দিলাম। 

লোকটা আশ্চর্যরকম ফর্সা। কি নিটোল পিঠ।

অদ্ভুত মায়া জাগানো হালকা লোমশ বুক। আমার খুব লজ্জা লাগছিল। আমি চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বললাম। একটু উঠে এসো। অল্প কিছু রান্না করেছি। আমি তো তোমার মতো পাকা রাঁধুনি না। একটু খেয়ে ওষুধ খাও। 


সে অবাক চোখে আমার দিকে চেয়ে রইলো। তারপর আমার হাত ধরেই খাবার টেবিলে এলো। একটু অস্বস্তি লাগলেও আমি হাত সরিয়ে নিলাম না। টেবিলে এসে তার চোখ কপালে উঠলো 

-- ‘ জুঁই তুমি রাঁধতে পারো? ‘ 

কার স্বামী ভালোবেসে তার স্ত্রীকে কি নামে ডাকে আমি জানি না। উনি আমায় প্রথম থেকেই জুঁই বলে ডাকেন । জুঁইফুল নাকি ওর খুব প্রিয়। ও টেবিলে বসে খাচ্ছে। এই প্রথম আমি ওকে পরিবেশন করছি। ও খুব মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছে। ইলিশ মাছ আর মুড়িঘণ্ট যেভাবে তৃপ্তি নিয়ে খেলো, আমার মনটা ভরে গেলো। বেগুন পোড়া মাঝে মাঝে নিচ্ছেন আচারের মতো। আমি অবাক হয়ে দেখছি। খুব আস্তে আস্তে তার চোখে জল জমছে। 


-- ‘ বুঝলে জুঁই , গত ২২ বছরে আমায় কেউ এতো যত্ন করে খাওয়ায়নি। আমি তোমায় রাঁধতে দিই না কেন জানো? আমি যখন খুব ছোট। তখন আমার মা রাঁধতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা যান। আমি মানুষ হয়েছি ঠাকুমার কাছে ওনার মৃত্যুর পরে বাবা বিয়ে করেন। আমি স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে ভাত চাওয়ার সাহস পেতাম না। রান্নাঘরে কোনো শব্দ হয় কি না তার জন্য কান পেতে থাকতাম। দয়া করে কেউ খেতে দিলে খেতাম, না হলে না। আমি যখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি সকালে জলখাবারের টাকা থাকতো না। বন্ধুরা সকালে খাবার সময় কেউ আমায় ডাকলে খাওয়া হতো না হলে না। টিউশনি করাতাম। তারা কিছু খেতে দিলে কি যে ভালো লাগতো। মানুষটা বলেই চলেছে।


আর আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়ছে। হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে সে ভীষণ বিব্রত হলো।

-- নাহ, তুমি তো দেখছি খুবই নরম মনের মেয়ে। ইশ সব কথা একদিনে বলে তোমায় কি কষ্টই না দিলাম।

খাওয়া শেষে ও বাসনগুলো বেসিনে নিয়ে যাচ্ছিল। আমি হাত থেকে বাসন কেড়ে নিয়ে বললাম,

-- ফের যদি রান্নাঘরে খাওয়া ছাড়া ঘুরঘুর করতে দেখি, খবর আছে। তাড়াতাড়ি বাসনগুলো পরিস্কার করে ঘরে এলাম।


ও কাত হয়ে একটা চাদর জড়িয়ে শুয়ে আছে। আমি আস্তে করে তার চাদরের নিচে ঢুকে গেলাম। আলগোছে সে আমায় বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিলো।

-- এই এই তুমি তো আমায় বুকের মধ্যে পিষে ফেলছো। কে শোনে কার কথা!

এক সময় আমি শুয়ে আছি। সে আমার চুলগুলো হাতে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে রোল বানাচ্ছে।


আমি ওর দিকে তাকাতেই ও মৃদু হাসলো। আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম

-- এই তুমিই না একদিন বলেছিলে ‘ যা কিছু সুন্দর সেটা দুটো হওয়া উচিৎ। যেন একটা শেষ হয়ে গেলেও আরেকটা থাকে। ‘

ও ভীষণ উৎসাহে আমাকে বুকে টেনে নিতে নিতে বললো

-- ‘ ভুল বলেছিলাম, যা কিছু সুন্দর তা অফুরান হওয়া উচিৎ। ‘

‘ভালোবেসে যদি সুখ নাহি , তবে কেন, তবে কেন মিছে এ ভালোবাসা।


                                             🍁ইন্দ্রনীল🍁


💚❤💛💜💙🧡💚❤💛💜💙🧡💚❤💛 

       ❣☘❣☘❣ইন্দ্রনীল❣☘❣☘❣