#দৈনিক সেরা কলম সম্মাননা ,#বিভাগ--অণুগল্প, শিরোনাম— স্মৃতি মেদুর ,কলমে—করবী খাসনবিশগল্পটির শব্দ সংখ্যা(৩৫০)29/6/2021*********************** দিন শেষ হয়ে আসছে আকাশ কেমন ঘোলাটে হয়ে গেছে, ঝড় উঠেছে, বাগানের গাছগুলো জোরে জোরে দুলছে…
#দৈনিক সেরা কলম সম্মাননা ,
#বিভাগ--অণুগল্প,
শিরোনাম— স্মৃতি মেদুর ,
কলমে—করবী খাসনবিশ
গল্পটির শব্দ সংখ্যা(৩৫০)
29/6/2021
***********************
দিন শেষ হয়ে আসছে আকাশ কেমন ঘোলাটে হয়ে গেছে, ঝড় উঠেছে, বাগানের গাছগুলো জোরে জোরে দুলছে,
হঠাৎ ভেসে এলো—
“পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে পাগল আমার মন জেগে উঠে”
রুদ্র স্টাডিরুমে কাজের একটা পরিকল্পনা করছিল,হঠাৎ বাবার গলায় গান শুনে ছুটে বেরিয়ে আসে,দেখে মা আর বড়দা ওর মতোই হত-চকিত হয়ে বাগানের দিকে যাচ্ছে।
রুদ্র ইশারা করে ওদের থামায়। ওরা দেখতে থাকে রজনীকান্ত সারা বাগান জুড়ে হাঁটছে আর শিশুর মতো গলা ছেড়ে গান গাইছে। এদিকে ঝড় বইছে।
“ছোটো খোকা তবে কি তোর বাবা------”
“হ্যাঁ মা আর চিন্তা নেই এবার বাবা ভালো হয়ে যাবে”
“সত্যিই বলছিস ভাই?”
“হ্যাঁ রে বড়দা, এক্সিডেন্টের পরে বাবা শারীরিক সুস্থ হলেও বাবার মানসিক প্রবলেম দেখা দিয়েছিল, অতীতের স্মৃতি ফিকে হয়ে গিয়েছিল,আর তার থেকেই বাবার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এটা অনেকের ক্ষেত্রে হয়,
তাই তো ডাক্তার বলেছিলেন যে বাবাকে এমন জায়গায় নিয়ে রাখতে হবে যেখানে বাবা তাঁর অতীতটাকে খুঁজে পায়, আর আপনজনেদের সাথে থাকতে পারে”
রেলকোম্পানীর উচ্চ পদস্থ কর্মী ছিলেন রজনীকান্ত মজুমদার,অফিসের কাজে ভোপালে গিয়েছিলেন সেখানেই ঘটে যায় বিরাট অঘটন, চোখের সামনে অনেক লোকের মৃত্যু হয়,যদিও রজনীকান্ত প্রাণে বেঁচে যায়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও বাকশক্তি হারিয়ে যায়। ডাক্তার পরামর্শ দেয় যে এমন পরিবেশে ওকে রাখতে হবে যা ওনার সব থেকে প্রিয়।
রজনীকান্ত সব সময় গাছপালা ভালোবাসে যে কারনে পাহাড় বা সমুদ্র নয় ছুটি পেলেই চলেযেত জঙ্গলে।
এই ঘটনারপরে,শহরের ব্যাস্ত জীবন থেকে দূরে গাছপালা ঘেরা গ্রামে এসে থাকে ওরা, স্মৃতি আর বাকশক্তি ফেরাবার চেষ্টাকরতে থাকে। রজনীকান্ত সব ভুলেগেলেও গাছেদের ভোলেনি, অব্যক্ত স্বরে কিছু বলতেচায়।
আজ বন্ধুর মতো গাছেদের কাছেই নিজের মনের ভাব বেরিয়ে এসেছে।
ঝড় থেমে গেছে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে,রজনীকান্ত কে ঘিরে আছে তাঁর স্ত্রী আর ছেলেরা রজনীকান্ত করুণ স্বরে বলে “তোরা এই বাড়িটা বিক্রিকরে দিবি না তো? এখানে আমার ছোটোবেলার বন্ধুরা আছে,ঐ গাছগুলোই আমার বন্ধুরে, ওদের অনেককে আমি নিজের হাতে এই বাগানে বসিয়েছি”
“ না না বাবা এই বাড়ি বিক্রি করতে চেয়ে আমরা ভুল করেছিলাম,এই বাড়িতেই তুমি থাকবে, তোমাকে তোমার বন্ধুদের থেকে আর দূরে সরিয়ে রাখবনা”
ওরা অনুভব করে যে এই বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্তটা ও বাবাকে আঘাত দিয়েছিল। রজনীকান্ত তাঁর বাকী জীবনটা মুক্ত বাতাসপূর্ণ গাছ-গাছালির মধ্যেই ভালো থাকবে, সবাই লক্ষ্যকরে রজনীকান্তের মুখে একটা প্রশান্তির ছায়া বিরাজকরছে।
****************