সৃষ্টি সাহিত্য যাপনশিরোনাম : শুভবুদ্ধির হোক উদয়কলমে : কেয়া চক্রবর্তীতারিখ : ০৫.০৬.২১
পরিবেশের ওপর আমাদের অত্যাচারের নেই কো শেষকংক্রিটের শহর গড়ে, সভ্যতার পদমূলে কুঠারাঘাত থেকে শুরু করেআবাদী জমিকে করেছি গ্রাস,চারিপাশে ছড়িয়ে দিয়েছি ন…
সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
শিরোনাম : শুভবুদ্ধির হোক উদয়
কলমে : কেয়া চক্রবর্তী
তারিখ : ০৫.০৬.২১
পরিবেশের ওপর আমাদের অত্যাচারের নেই কো শেষ
কংক্রিটের শহর গড়ে, সভ্যতার পদমূলে কুঠারাঘাত থেকে শুরু করে
আবাদী জমিকে করেছি গ্রাস,
চারিপাশে ছড়িয়ে দিয়েছি নগর, শহর উন্নয়নের সোপান,
উজাড় হয়েছে বনভূমি আজ
মানুষের লোভের কাছে হয়ে পদানত,
নিজেদের বোনা জালেই তাই তো আজ আমাদের প্রাণ হয়েছে ওষ্ঠাগত,
একদা ছিল শস্যশ্যামলা, সুফলা, সুজলা ভূমি,
সভ্যতার উন্নয়ন ও নগরায়নে হুমকির মুখে আজ সমগ্র বিশ্বের বনভূমি,
পৃথিবীর ফুসফুস দাউদাউ করে জ্বলছে অহর্নিশি,
প্রাণদায়ী অক্সিজেনের অভাবে মানুষ আজ ঘুরে মরছে চারিপাশে,
ধুঁকছে তারা হচ্ছে পরিণত লাশে,
চারিপাশে সবুজের দেখা আজ আর নাই রে,
আবাদী জমিকে অনাবাদী বানিয়ে ফেলেছি নিমেষে,
চারিপাশে একটু অক্সিজেনর জন্য তীব্র হাহাকার, শুনতে কি পাচ্ছো না কেউ
অহংকারের পতন নিশ্চিত, এসেছে মহামারীর ঢেউ,
গাছপালার অভাবে বৃষ্টি গেছে এখন কমে,
খরা, বন্যা, মহামারীতে জীবন দুর্বিষহ আকার ধারণ করেছে,
নির্বিচারে বনভূমি কেটে ধ্বংসের দিকেই দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে মানবসভ্যতা,
একদা যেই প্রকৃতির কোলেই তার বেড়ে ওঠা,
প্রকৃতির ওপর আধিপত্য বিস্তারের ঘৃণ্য নেশায় উঠেছি মেতে,
প্রকৃতি ও তার ওপর হওয়া অত্যাচারের মধুর প্রতিশোধ নিচ্ছে,
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবকুল আজ অণুজীবের দাপটে বাধ্য হয়ে রয়েছে গৃহবন্দী,
প্রকৃতি ওই বিষাক্ত ধোঁয়ার কবল থেকে পাচ্ছে মুক্তি,
প্রকৃতিতে প্লাস্টিক ছুঁড়ে যত্রতত্র পরিবেশকে করেছি মোরা দূষিত,
আজ প্রকৃতিও তাই ধ্বংসের লীলাখেলায় হয়েছে উন্মত্ত
পাখিকে উড়তে দেখে আকাশে সাধ হয়েছিল আমাদের ওড়ার,
নদীর উচ্ছ্বলতাকে রুদ্ধ করে বানালাম বাঁধ,
তার গতিপথকেবল চেষ্টা করলাম নিয়ন্ত্রণে রাখবার,
ফি বছরে ফণী,আমফন, ইয়শের সমূহ ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রূকুটি
এদের তান্ডবে পরিবেশের হচ্ছে নিদারুণ ক্ষতি,
নদীবাঁধ ভেঙে বন্যার কবলে পড়ে লক্ষাধিক মানুষের বেড়েছে যেমন দুর্গতি,
বৃক্ষরোপণ করেই পারি একমাত্র সেই অবস্থার উন্নতি,
আশু সময়ে ভুগতে হবে না জানি আরো কত বিপত্তি,
না থাকলে গাছপালা, ভেবে দেখেছো কি হবে?
জীববৈচিত্র্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে তাদের অস্তিত্বের সংকটে পড়বে,
পরিবেশ তার ভারসাম্য হারিয়ে হচ্ছে রিক্ত মলিন,
নাহলে সেদিন হয়তো নয়কো দূরে খুব বেশি,
সবার জন্য একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন মজুত করতে হিমশিম খাবে দেশবাসী,
পিঠে বেঁধে ঘুরতে হবে অক্সিজেনের সিলিন্ডার,
অর্থের বিনিময়ে রিফিল করতে হবে, এতদিন যাতে ছিল সবার জন্মগত অধিকার
গঙ্গা দিয়ে বইছে কত শব যেন ভেসে চলেছে লখিন্দরের ভেলা,
প্রকৃতি এবার শান্ত হও থামাও এবার তোমার এই ধ্বংসলীলা,
নতুন এক সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন আমাদের চোখে,
পরিবেশ দিবসে সবুজ বনানীর সোপান তারই করুক সূচনা,
বৃক্ষচ্ছেদনের বদলে গাছ লাগিয়ে করি সবুজের সমাবেশ,
বাঁচুক পরিবেশ, জীবপ্রজাতি, বাঁচুক আমাদের দেশ,
গাছ আমাদের দিয়েই গেছে চিরকাল দুহাত ভরে,
ফল, ফুল, ঔষধ, অক্সিজেন মানব কল্যাণের তরে।
গাছের মতো বন্ধু খুঁজে পাবে না মানবজাতি আর,
গাছ লাগিয়ে পণ নি পরিবেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করবার,
আমাদের সবুজ বন্ধুদের সঙ্গে এসো করি সখ্যতার সূচনা
আগামী প্রজন্মের জন্য এসো সুস্থ পরিবেশ করি রচনা।।
এই পৃথিবীকে করি নবজাতকের জন্য যোগ্য আবাসভূমি,
দিকে দিকে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলি তুমি, আমি
আমরা সবাই,
বিন্দু বিন্দু জলকণায় যেমন হয় সিন্ধুর নির্মাণ,
বৃক্ষরোপণের কর্মসূচির করি তেমনি সফল বাস্তবায়ন,
চিরাচরিত শক্তিকে করি ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ,
অচিরাচরিত শক্তি ব্যবহারের পক্ষে করি জনমত গঠন,
প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহারকে করতে হবে সীমিতকরণ,
সীমিত সম্পদের করতে হবে পুনঃব্যবহারকরণ,
চক্রাকারে সম্পদের করতে পারি যেন পুনরায় নবীকরণ,
তবেই সম্ভব হবে আমাদের পরিবেশের উন্নয়ন।
কেরালায় "সাইলেন্ট ভ্যালি" র আন্দোলনই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ,
সুন্দরলাল বহুগুণা, মেধা পাঠকর, অজিত কুমার ব্যানার্জীর অবদান ভুলতে কি পারি কখনো
বনভূমি বাঁচাতে গিয়ে বিশনয় জাতি দিয়েছে তাদের প্রাণের বলিদান
শিখিয়ে গেছে গাছকে রক্ষা করতে কিভাবে তুচ্ছ করে দিতে পারে নিজেদের জীবন,
কবি তাই বলেন" দাও ফিরে সে অরণ্য লহ এ নগর"
দিকে দিকে ধ্বনিত হোক এই মন্ত্রই নিরন্তর।।
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এসো সবে অঙ্গীকারই করি
গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে দলে দলে যোগদান করি,
তবেই আগামী প্রজন্ম আবার ছুটবে, খেলবে, হাসবে,
আবার প্রকৃতির স্নিগ্ধ ছায়ায় নেবো প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস,
সুস্থ যোগ্য আবাসভূমি রচনা করার নি দৃঢ় প্রত্যয়,
গাছের মতো সবুজ বন্ধুর প্রতি করবো না আর অন্যায়।।
©কেয়া চক্রবর্তী®
কবিস্বত্ব সংরক্ষিত