Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বেআইনি বালি লুট রুখতে প্রশাসনিক তৎপড়তা

‌নিজস্ব সংবাদদাতা,‌ তমলুক:‌ বেআইনিভাবে বালি লুট রুখতে এবার আরো কঠোর হচ্ছে জেলা প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান নিশ্চিত করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে…

 


‌নিজস্ব সংবাদদাতা,‌ তমলুক:‌ বেআইনিভাবে বালি লুট রুখতে এবার আরো কঠোর হচ্ছে জেলা প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান নিশ্চিত করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিগত কয়েকদিনের মত এদিনও প্রশাসনিক নির্দেশ মতো জেলার একের পর এক অবৈধ বালি খাদান গুলিতে হানা দিয়ে আস্ত একটি ট্রাক সহ জেসিবি মেশিন আটক করে পুলিশ। 

স্থানীয় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত নদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা হিসেবে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। তবে পাশেই পশ্চিম মেদিনীপুর হলেও সেই অর্থে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় লাল বালি অমিল। সে ক্ষেত্রে অবশ্য বর্তমানে স্থানীয় বালি হিসেবে সিলভার সেন্ড এর বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে। 

মূলত নতুন ঘরবাড়ি কিংবা রাস্তাঘাটের ঢালাই এর আগে এই বালির বিপুল ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। অভিযোগ, চাহিদা এতটাই যে জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলাতেও লরি কিংবা ডাম্পারের করে এই বালি সাপ্লাই করা হচ্ছে। যার বেশির ভাগটাই অবৈধ বালি খাদান থেকেই এই বালি লুঠ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কারণ এত বড় জেলাতে হাতে গোনা মাত্র ৯ টি বৈধ বালি খাদান রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আবার অবৈধ বালি খাদান এর সংখ্যা যত্রতত্র। যার নজরদারি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের। দাপিয়ে বাড়ছে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। 

নন্দকুমার থানার নরঘাট এ ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ওপর অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ সংলগ্ন হলদি নদীর চর থেকে বেআইনিভাবে বালি তোলাকে ঘিরে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের। এর জেরে যেকোনো মুহূর্তে নদীর উপর থাকা ব্রিজটি ভেঙে বড়সরো কোন বিপত্তি ঘটতে পারে বলেও অভিযোগ জানিয়ে রীতিমতো সরব হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ গনতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (‌সিপিডিআর)এর মত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এমন পরিস্থিতিতে বিগত কয়েকদিন ধরে লাগাতার ধরপাকড় অভিযানে নামে পুলিশ প্রশাসন।

 পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক (এল আর) সুদীপ্ত পোড়েল এর নেতৃত্বে নন্দকুমার থানার টেংরাখালী থেকে শুরু করে সৈকত নগরী দীঘা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অবৈধ বালি খাদানে অভিযান শুরু হয়। শুক্রবারও ঠিক একইভাবে তমলুকের শ্রীরামপুর এলাকায় একটি বালি খাদানে অতর্কিতে হানা দিয়ে পুলিশ একটি লরি আটক করে। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে জরিমানা দিয়ে ছাড় পান ওই লরির মালিক। একইসঙ্গে এদিন দীঘা এবং মান্দারমনি এলাকায় একাধিক অভিযানে একটি ট্রাক ও একটি জেসিবি মেশিন আটক করে মান্দারমনি কোস্টাল থানার পুলিশ। বেআইনিভাবে বালি লুটের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআরও করা হয়। সেই সঙ্গে একেবারে নদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এই বালি লুটের কাজে ব্যবহার করা বড় বড় আকারের লোহার পাইপের চ্যানেল গুলি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরোপুরি ভাবে সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে ট্যাংরাখালি এলাকায় অভিযানে গিয়ে একটি বালি তোলার মেশিন বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘসময় পরে হলেও একের পর এক জেলা জুড়ে এই অবৈধ বালি লুটের কারবারে প্রশাসনিক নজরদারি চালানোয় কিছুটা হলেও খুশি জেলার বাসিন্দারা।

অতিরিক্ত জেলা শাসক (এল আর) সুদীপ্ত পোড়েল জানিয়েছেন, অবৈধ বালির কারবার রুখতে জেলাজুড়ে এমন অভিযান লাগাতার চলবে। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযানে আরো বেশি করে উৎসাহ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই অতর্কিতে অভিযান চালিয়ে একাধিক মেশিন লরি সহ বিভিন্ন সামগ্রী আটক করা হয়েছে। সীল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অবৈধ বালি খাদান গুলির লোহার পাইপ।