নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: দীর্ঘ সময় ধরে করণা আতঙ্কের জেরে বন্ধ স্কুলের স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের কাজ। কিন্তু তাতেও দমতে নারাজ। মানসিক অবসাদ কাটানোর পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির মাঝেও পরিবেশ রক্ষার ভাবনায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণে…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: দীর্ঘ সময় ধরে করণা আতঙ্কের জেরে বন্ধ স্কুলের স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের কাজ। কিন্তু তাতেও দমতে নারাজ। মানসিক অবসাদ কাটানোর পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির মাঝেও পরিবেশ রক্ষার ভাবনায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণে উৎসাহ দানে এগিয়ে এলেন তমলুকের এক স্কুল শিক্ষক। ছোট্ট পরিসরে হলেও কতিপয় ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে তমলুকের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধাপে ধাপে ঝাউ, দেবদারু সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ রোপন করে নজির গড়ে চলেছেন তিনি।
তমলুকের নিলকণ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বৃক্ষপ্রেমী শিক্ষক হিসেবে ইতিমধ্যেই বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন বিভাসবাবু মন্ডল।মেছেদার হাকল্লা এলাকার বাসিন্দা হলেও তমলুকের হরশংকর গড়কিল্লা শান্তময়ী হাই স্কুলের বাংলা বিষয়ের সহ শিক্ষক তিনি। পাঠ দানের পাশাপাশি কেবলমাত্র বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহ পালন নয়, নিজের মনের খোরাক ই সারা বছরই বিভিন্ন স্থানে গাছ লাগিয়ে গাছের উপকারিতার কথা জানিয়ে সর্বত্রই মানুষজনকে সচেতন করে তোলেন। সেই উদ্দেশ্যে ফি বছর বেশ কয়েক হাজার চারাগাছ ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বিলিবণ্টনও করে থাকেন তিনি। এবছরও যার ব্যতিক্রম হল না। ছাত্রদের নিয়ে এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশে, পরিত্যক্ত স্থানে, খেলার মাঠের চারিদিক এমনকি বিভিন্ন স্কুল প্রাঙ্গণে নিজ খরচায় চারাগাছ লাগিয়ে সবুজায়ন ও সৌন্দর্যায়নের মধ্য দিয়ে পরিবেশকে সুস্থ ও নির্মল রাখার বার্তা দিয়ে চলেছেন তিনি। শুক্রবারও হরশংকর এলাকায় স্কুল প্রাঙ্গণ এবং পথপ্রান্তে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণর কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভাস বাবু। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষকের এহেন প্রয়াসে জেলা বন দপ্তরের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে তাঁকে " বৃক্ষ প্রেমী" রূপে সম্বর্ধনাও করা হয়। এলাকার বাসিন্দা এবং নীলকুণ্ঠ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক কুমার পাইকও বিভাসবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করে এলাকার ছাত্র যুব সমাজের কাছে সবুজায়নের অনুপ্রেরণা বলেও দাবি করেছেন। তিনি বলেন, শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি একজন প্রকৃত মানবদরদী সমাজ মনস্ক ও প্রকৃতি প্রেমীও বটে। বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের পাশাপাশি যেভাবে করণা আবহের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের মানবিক নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশের শিক্ষা দিয়ে চলেছেন বিভাস বাবু তা অতি প্রশংসনীয়। যদিও এ বিষয়ে বিভাস বাবুর দাবি, গাছ লাগাতে আমার বেশ ভালো লাগে। তাছাড়া দীর্ঘ করণা পরিস্থিতির ধরুন ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে একা বসে থেকেও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। তাই এই গাছ লাগানোর মাধ্যমে একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষার ভাবনায় সবুজায়ন সম্ভব তেমনি অন্যদিকে সামাজিক ও সুস্থ মানসিক চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রেও এই কাজ অত্যন্ত সহায়ক হবে তরুণ প্রজন্মের কাছে।