নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: করোণা আবহে যশ এর বিপর্যয় মোকাবিলায় দুয়ারে ত্রাণ কর্মসূচির মধ্যেই এল জেলার চাষীদের জন্য সুখবর। কৃষক বন্ধুর দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থের টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকতে না ঢুকতেই ফের নতুন করে কৃষকদের উন্নত আধুনিক প্…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: করোণা আবহে যশ এর বিপর্যয় মোকাবিলায় দুয়ারে ত্রাণ কর্মসূচির মধ্যেই এল জেলার চাষীদের জন্য সুখবর। কৃষক বন্ধুর দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থের টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকতে না ঢুকতেই ফের নতুন করে কৃষকদের উন্নত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সুসংহত পদ্ধতিতে চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আতমা প্রকল্পে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আরো ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার।
মূলত নিত্যনতুন চাষে উৎসাহ দিতে প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে এই বিপুল পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। স্থানীয় ও কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষিনির্ভর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এর আগেও আতমা প্রকল্পে চাষীদের সহায়তায় পর্যায়ক্রমে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে গত অর্থ বর্ষে কৃষি ও প্রাণী পালনে আঁতুড়ঘর সাজিয়ে তুলতে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার।
এরপর সেই প্রক্রিয়া শেষ হতে না হতেই বিপর্যয় এর মধ্যেই প্রান্তিক অসহায় চাষীদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। ২০২১- ২২ আর্থিক বর্ষে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে আতমা প্রকল্পে জেলা জুড়ে প্রায় সমস্ত ব্লকের স্বনির্ভর কৃষক গোষ্ঠীর মধ্যে বিলি-বন্টনে প্রথম কিস্তিতেই ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকের মাঠে প্রদর্শনী ক্ষেত্র গড়ে তুলে একেবারে হাতে-কলমে সুফল কৃষকদের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই অর্থ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধুুু তাই নয়, প্রদর্শনীশনী ক্ষেত্র গড়ে তোলার পাশাপাশি সুসংহত উপায়ে ধান চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্র গড়ে তুলতে সুগন্ধি ধান চাষের পাশাপাশি প্রায় সর্বত্রই এক অভিনবত্বের ছোঁয়া তুলে ধরার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে তাই সুসংহত উপায় ধান চাষে সার প্রয়োগ থেকে শুরু করে কিট শত্রু নিয়ন্ত্রণে প্রদর্শনী ক্ষেত্র গড়ে তোলা হবে। অন্যদিকে ঘরোয়া পুষ্টি বাগান ও উন্নত প্রযুক্তিতে মরসুমি সবজি উৎপাদনে প্রদর্শনী ক্ষেত্রও গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও কৃষির পাশাপাশি প্রাণী পালনে উৎসাহ দিতে জেলার প্রান্তিক চাষীদের নিয়ে বনরাজ মুরগি পালন জোর দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে থাকছে মৎস্য চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্রও। এই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় অর্থ ব্লক স্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সহ কৃষি অধিকর্তা(শস্য সুরক্ষা) মৃণাল কান্তি বেরা বলেন, চলতি আর্থিক বরসে আতমা প্রকল্পে কৃষকদের সহায়তা এই প্রথম পর্যায়ের কিস্তির প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই জেলা থেকে ব্লক স্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় খরিপ মরসুম শুরু হওয়ার আগেই কৃষকরা আতমা প্রকল্পের সুফল হাতেনাতে পেয়ে আরো লাভবান হতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, পর্যটন কিংবা শিল্পের ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এখনো অবধি কৃষি নির্ভরশীল জেলা হিসেবে পরিচিত। যেখানে এই জেলার প্রত্যন্ত ময়না ব্লকের হাত ধরে রাজ্যজুড়ে ইতিমধ্যেই মৎস্য বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। তবে কৃষির ক্ষেত্রে সম্প্রতি যশের মত একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বেশ কিছুটা তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে কাটছে চাষী ভাইদের।
এমন পরিস্থিতি দুয়ারে ত্রাণ কর্মসূচির মধ্যেই নতুন করে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়েছে জেলা প্রশাসন।ইতিমধ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ২৫টি ব্লকের স্বনির্ভর দলের কৃষক গোষ্ঠীদের মাধ্যমে এই অর্থবন্টনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের স্বনির্ভর কৃষক গোষ্ঠীর মানোন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে ব্লক ভিত্তিক নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।