নিজস্ব সংবাদদাতা তমলুক: দীর্ঘ করনা আবহের মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কেউবা হারিয়েছে হাত কেউবা হারিয়েছে পা। যন্ত্রণাময় এই জীবন থেকে নিষ্কৃতি পেতে তাই এবার এগিয়ে এলো কোলাঘাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অসহায়দের পুনরায় পুনর্জ…
নিজস্ব সংবাদদাতা তমলুক: দীর্ঘ করনা আবহের মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কেউবা হারিয়েছে হাত কেউবা হারিয়েছে পা। যন্ত্রণাময় এই জীবন থেকে নিষ্কৃতি পেতে তাই এবার এগিয়ে এলো কোলাঘাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অসহায়দের পুনরায় পুনর্জীবনের লক্ষ্যে রূপনারায়ণের পাড়ে এবার কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন করা হল কৃত্রিম অঙ্গ প্রতস্থাপন এর কর্মশালা। বৃহস্পতিবার কোলাঘাট নতুন বাজার হাটে বড়মাপের এই কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক বিপ্লব রায় চৌধুরী, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় সহ অন্যান্যরা। যেখানে দুই মেদিনীপুরের পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, বর্ধমান, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, বাঁকুড়া সহ প্রায় এগারোটি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত হতে প্রায় দেড়শতাধিক মানুষ এই শিবিরে যোগ দেন। বিভিন্ন দুর্ঘটনায় যাদের মধ্যে কেউ একটি পা, কারোর দুটি পা' বা হাতের অংশ চিরতরে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
এদিন শিবিরে চিকিৎসক ও কারিগর দ্বারা কৃত্রিম অঙ্গের মেজারমেন্ট করা হয়। সেইমতো পরিমাপ অনুযায়ী আগামী মাসখানেকের মধ্যে সম্পূর্ণ বিনাব্যায়ে তা তুলে দেওয়া হবে গ্রহীতাদের হাতে। বর্ধমানের নাপালা থেকে এসেছিলেন বাপন গোড়াই। যিনি পথ দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছেন। হগলির আরামবাগ থেকে জয়ন্ত সাঁতরা পায়ে লোহার পেরেকের ক্ষত থেকে ডান পাটাই বাদ দিতে হয়। পটাশপুরের যুবক সুজয় মেটিয়া বিয়ের চারমাসের মাথায় ট্রেন দুর্ঘটনায় বাঁ পা হারিয়েছেন চিরতরে। হাওড়া শ্যামপুরের রীতা দাস বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে ডানহাত হারিয়েছেন।
ময়নার যুবক খোকন মান্না মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়েছেন। আমফান ঝড়ে গাছ পড়ে একটা পা হারিয়েছে দাসপুরের তাপস দোলুই। এইভাবে দুর্ভাগ্যের শিকার প্রায় দেড়শতাধিক অঙ্গহীন মানুষ এদিন শিবিরে হাজির হয়েছিলেন। যাদের প্রত্যেকের কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হবে সম্পূর্ণ বিনা ব্যায়ে বলে আয়োজকদের পক্ষে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এদিন ছয়জন প্রতিবন্ধীর হাতে ট্রাইসাইকেল ও হুইল চেয়ার তুলে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই বিপুল খরচের বিষয়ে ইতিমধ্যেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কলকাতার সোতি চ্যারেটিবল ট্রাস্ট এবং মহাবীর সেবা সদন নামে আরো দই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।
কোলাঘাটে আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে শুভঙ্কর বোস বলেছেন, -" ওনারা দুর্ভাগ্যের শিকার। আমরা মনে করি ওরা আমাদেরই লোক। ওনাদের জীবন প্রবাহের স্বাভাবিক ছন্দ ও মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতেই আমাদের এই উদ্যোগ গ্রহন।" শিবিরের উদ্বোধন করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকরিক ডাঃ বিভাস রায় এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রংসশা করেন। শিবিরে উপস্থিত হয়ে বিধায়ক বিপ্লব রায় চৌধুরী বলেন, প্রতিবন্ধতাকে জয় করেই এই সব মানুষদের জীবনের লড়াইয়ে ফিরে আসতে হবে।