Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বাবুল ডাল খালি করে তৃনমূলের ঘাসফুলে

কাল ছিল ডাল খালি আজ গেছে ডাল ভরে।ভোটের আগে তৃনমূল দল ছেড়ে একদল নেতা নেত্রীর বিজেপি আগমন ছিল দেখার মতোই।বাজার কাঁপিয়ে একদল সুবিধাবাদী তৃনমূলের ঘাস ফুল ছেড়ে বিজেপির পদ্ম পাতার দিকে এগিয়ে যে ছিলেন তা নিয়ে নতূন করে কিছু লেখার নেই।কিন…

 


তরুন চট্টোপাধ্যায়
কাল ছিল ডাল খালি আজ গেছে ডাল ভরে।ভোটের আগে তৃনমূল দল ছেড়ে একদল নেতা নেত্রীর বিজেপি আগমন ছিল দেখার মতোই।বাজার কাঁপিয়ে একদল সুবিধাবাদী তৃনমূলের ঘাস ফুল ছেড়ে বিজেপির পদ্ম পাতার দিকে এগিয়ে যে ছিলেন তা নিয়ে নতূন করে কিছু লেখার নেই।কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা কাছে পরাজিত হয়ে আবার তাঁদের অনেকেই মাথা নামিয়ে দিদির দরজায় টোকা দিয়ে ছেন।সরাসরি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে জায়গা না পেয়ে শেষমেশ অভিষেকের দুয়ারে কড়া নেড়েছেন।বলা যেতে পারে নিজেদের ভুল স্বীকার করেই মুচলেকা দিয়ে দলে ফিরতে মরীয়া।যদিও বিধানসভা ভোটের আগেই তৃনমূল সগর্বে ঘোষনা করেছিলেন এরা গদ্দার।আর এই সব রাজনৈতিক সুবিধা ভোগী দের তৃনমূলের দরজায় ঠাঁই নেই।


প্রমাণ করেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃনমূল ।ভাঙা পায়ে খেলতে নেমে রেকর্ড সিট জিতে মমতা বন্দোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন যে এই বাংলায় মমতার বিকল্প নেতা আর কেউ নেই।দলে তিনি শেষ কথা বলে যারা তার বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতেন,আজ তাঁদের ও অভিমত মমতা ম্যাজিক আজও বাংলার দুয়ারে দুয়ারে সমান উপযোগী ।দুয়ারে সরকার প্রকল্প গুলি যে কতটা উপযোগী তা নিয়ে আজ আর কেউ সংশয় প্রকাশ করেন না।উপচে পড়া ভিড় দেখেই বোঝা যায় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিকল্প তিনি নিজেই,অন্য কেউ নয়।


কদিন বাদেই ভবানীপুরে উপ নির্বাচন ।নন্দীগ্রামে একদা মমতার কাছের মানুষ শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হন মমতা।যদিও সে নির্বচন নিয়ে নানা অভিযোগ করেন মমতা স্বয়ং ।কিন্তু তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ধরে রাখতে হলে ভবানীপুরের নির্বচনে জিতে আসতে হবে।তবে জয় নিয়ে সংশয়ের সিকি ও নেই ঘাস ফুল শিবিরে।আর এরি মধ্যে আবার ঘর ভাঙলো পদ্ম শিবিরের।বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রীর আসন থেকে সরে গেলেও সাংসদ তো ছিলেন বিজেপি দলের।কিন্তু সেই বিজেপির আদরের বাবুল যে এ ভাবে ভবানীপুরের নির্বচনের আগে মাস্টার স্টোক দেবেন তা কল্পনাও করেন নি বিজেপি দল।কিন্তু বাস্তব হলো বাবুল সুপ্রিয় বিজেপির দড়ি কেটে আজ সশরীরে দিদির উঠানে।এখন তিনি দমবন্ধ অবস্থা কে টাটা বাই বাই করে ঘাসফুল শিবিরে ।


যদিও বিজেপির দিলীপ ঘোষ বলছেন,বাবুল রা পলিটিক্যাল ট্যুরিস্ট ।তাহলে তো বলতে হয় একদিন যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি দলে ভিড় করেছিলেন,তাঁরা কি ছিলেন।


বাবুল অবশ্য দিলীপের কথার জবাবে উওর দিয়েছেন।দিলীপ ঘোষ কে বর্ন পরিচয় পাঠাবেন বলেছেন।যাতে করে দিলীপ ঘোষ বাংলা টা একটু ভালো করে বলতে পারেন।


রাজনীতি তে এসব থাকেই।বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যে সরগরম হয় বাজার ।কিন্তু দুয়ারে ভবানীপুরের ইলেকশন।আর সেই সময় বাবুলের দল বদল বিজেপি দলকে আরো বেশি যে অস্বস্তিতে ফেলেছে তা নিয়ে সংশয় নেই।


একদা এই বাবুল কে পাশে নিয়ে বিজেপির নব নেতা শুভেন্দু অধিকারী অনেক সভা করেছিলেন।মমতার টালির বাড়িকে কটাক্ষ করে বাবুলের সেই সব গান আজ স্মৃতি ।আর বাবুল ও নাক কান মলে সে সব ভুলে এখন দিদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ।দিদির হয়েই তিনি গান লেখার জন্য কলম যে খুব শীঘ্রই ধরবেন তাতো বলাই যায় ।


বাবুল না এলেও ভবানীপুরের নির্বচনে মমতার বিজয় রথ আটকাতো না।আজ ও আটকাবে না।অবশ্য বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে বাবুলের সখ্যতা আজও আছে।তাই দুজনের কেউ চাইছেন না একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই এ নামতে।তবে তৃনমূলের হয়ে বাবুল কে তৃনমূল প্রচারে নামাবেন কিনা তা তৃনমূল দল ই ঠিক করবেন।বাবুল নয়।যদিও বাবুল নিজে চাইছেন না ভবানীপুরে সভা করতে।ভাই বোনের সম্পর্ক তো।তা উভয়েই স্বীকার করছেন।


মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র একপ্রস্থ কথাবার্তা শেষ হয়েছে।বাবুল খুশি।কাজের ছেলে তৃনমূল দলে এসে যে কাজ করবেন ,তা তিনি নিজেও জানেন।আর ইতিমধ্যেই মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি সে কথা বলেছেন।


যদিও বাবুল জানান মমতার নবান্নের ছাদ থেকে বাবুলের হাওড়ার বাড়ির ছাদ দেখা যায় ।সেই ছাদে সে ঘুড়ি ওড়ালে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চোখে পড়বেন।তবে দিদি যেন না ভাবেন বাবুল শুধুই ঘুড়ি ওড়ায় ।বাবুল কে যে কাজ মমতা বন্দোপাধ্যায় দেবেন,তিনি তা নিষ্ঠার সঙ্গেই করবেন।


ভাঙা বিজেপি দলের একটা ছাদ ছিল বাবুল সুপ্রিয় ।সেই ছাদ ও ভেঙে পড়লো।আর তাতে ফাটলতো আগেই ছিল।পর পর দুবার আসানসোলের সাংসদ বাবুল কে দলে টেনে মমতা বন্দোপাধ্যায় আবার ও প্রমান করলেন বাংলা ঘরের মেয়ে কেই চায়।বাবুলের দলে আসা সেই ঘরের মেয়ের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে থেকেই।


যতই ঝালমুড়ি গল্প চলুক বাজারে,এতদিনে বাবুল সুপ্রিয়র মতো সঙ্গীতশিল্পী বুঝলেন মুড়ি খেতে গেলে ইউরিয়া ছাড়া মুড়িই স্বাস্থ্যকর ।রামদেবের হাত ধরে বিজেপি দলে আসা সেই বাবুল আজ অভিষেকের হাত ধরে দিদির দলে।


বাবুল সুপ্রিয়র তৃনমূল দলে পা রাখাতে তৃনমূলের লাভ ক্ষতির অঙ্কে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না।কিন্তু আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি দলের ভোট বাক্সে যে টান পড়বে তা  তো সত্যি ।


মমতা বন্দোপাধ্যায় যে ভাবে 2024 লোকসভা ভোটের ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তাতে দাবার চালে বাবুল রাজা মন্ত্রী হবেন না।আর তা তিনি চান না।তবে বোরে হলেও তো পদ্ম শিবিরে টান পড়বে।আর সেই টান বিজেপি দলকে ভাবাবে।পলিটিক্যাল ট্যুরিস্ট বলে যতই ছোট করা হোক।


আর শুধু বাবুল কেন, লোকসভা ভোটের আগে লাইন যে লম্বা ।বাবুল এখন শুধুমাত্র একটি সংখ্যা যে নয় সে ছবি পরিস্কার হবে কিছুদিনের মধ্যেই ।অনেক নেতা নেত্রী ই গোপনে যোগাযোগ রাখছেন।বিজেপি ছেড়ে আসতে চাইছেন বিজেপির অনেক হেভিওয়েট ই।


কথায় বলে না ওস্তাদের খেল।সেই খেলা শুরু হয়ে গেছে।


চব্বিশের আগে বিজেপির ডাল খালি হয়ে ঘাসফুল যে ভরে যাবে সে সম্ভাবনা উজ্জ্বল ।আর সেই আলোর রেখা স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে ।


রাজনীতি তে অবশ্য শেষ কথা বলে কিছু নেই।কিন্তু জয় পরাজয় তো আছেই।


সমগ্র দিল্লি বিগ্রেড উড়ে এসেও বঙ্গ বিজেপির পালে হাওয়া তুলেও সেই পাল ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি।মমতা ঝড় বহে গেছে বঙ্গ জুড়ে ই।আর ফলশ্রুতি বিজেপি দলের ভরাডুবি ।


বাবুল সুপ্রিয়র তৃনমূল যোগ অতি তুচ্ছ ঘটনা বলে যতই ঝালমুড়িতে গল্প চলুক বিজেপির সদর দপ্তরে ।যতই বিজেপি নেতারা পলিটিক্যাল ট্যুরিস্ট বলে তাঁকে হেলা ছেদ্দা করুক না কেন।মোদ্দা কথা হলো একে একে নিভিছে দেউটী।


বাবুলের আগমন তৃনমূল দলে সে কথাটিকে ই মান্যতা দিয়ে গেল।


বাবুলের গানের খাতায় আজ শুধুই মমতা।ঘরের মেয়ে মমতা।