প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল নামটি আজ মানুষের মুখে মুখে।যদিও কদিন আগেও এই নামটির সঙ্গে মানুষের তেমন কোন যোগাযোগ ছিল কিনা তা নিয়ে পদ্মশিবিরেও সংশয় রয়েছে।আর সাধারণ মানুষের কাছে নামটি যে একেবারেই নতূন তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।কেন আজ মুখে ম…
তরুণ চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।
প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল নামটি আজ মানুষের মুখে মুখে।যদিও কদিন আগেও এই নামটির সঙ্গে মানুষের তেমন কোন যোগাযোগ ছিল কিনা তা নিয়ে পদ্মশিবিরেও সংশয় রয়েছে।আর সাধারণ মানুষের কাছে নামটি যে একেবারেই নতূন তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।
কেন আজ মুখে মুখে ।এর একমাত্র জবাব হলো তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যের উপনির্বাচনে সন্মুখ সমরে।হ্যাঁ, তিনিই এবার ভবানীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ।হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রী কে ভোটে পরাজিত করতে তিনি এখন বিজেপির তুরুপের তাস।তিনি জয়ী হলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা কে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে হবে।জয় পরাজয় অনেক কিছুই হতে পারে।তবুও যেখানে স্বয়ং মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রার্থী ঠিক সেই সিটে লড়াই করতে নেমে প্রিয়ঙ্কা এখন হট সিটে।আর তা তো হবেই।তাঁর প্রতিপক্ষ তো রাজ্যের বর্তমান ও বিগত দশ বছর রাজ্য পাট চালানো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ।
একটু পিছনে ফেরা যাক।নন্দীগ্রামে মিটিং করতে এসে মমতা স্বয়ং নিজেই ঘোষনা করেছিলেন তিনি এখানে প্রার্থী হবেন।হয়েছিলেন ও তাই।তাঁর বিরুদ্ধে সদ্য বিজেপি দলে আসা শুভেন্দু অধিকারী লড়াই করতে নামেন।কিছুদিন আগেও তিনি মমতার ঘাস ফুলের একনিষ্ঠ সৈনিক ছিলেন।
শুভেন্দু আগেও নন্দীগ্রাম থেকে জয়ী হয়েছিলেন ।এবারের নির্বাচনে তৃনমূলের ঝড়ের মধ্যে ও শুভেন্দু কথা রাখলেন।সারা রাজ্য জুড়ে ঘাস ফুল ফুটলেও নন্দীগ্রামে সে ফুল ফুটলো না।পদ্মফুল ফোটালো শুভেন্দু অধিকারী ।পরাজিত হলেন মমতা বন্দোপাধ্যায় ।
তাই মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হলে তাঁকে ভোটে জিততে হবে।তাই আবার পুরানো কেন্দ্র তে তিনি এলেন।তৃনমূলের জয়ী আসনটি ছেড়ে আবার ভোট।মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে পদ্মশিবির গোড়া থেকেই চিন্তিত ছিল।অনেকগুলো নাম ও এসেছিল ।তবে শেষমেষ প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল।
এই প্রিয়ঙ্কার পরিচিতি জানাতে গিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন,তিনি যুব মোর্চর সহ সভাপতি ।একজন সফল আইনজীবী ও বটে।আর ভবানীপুর কেন্দ্র ছেড়ে মমতা সরে গিয়ে ও হেরেছেন,এবার ও হারবেন।কারন ভোট পরবর্তী হিংসার জবাব দেবেন জনগন ।মমতা সন্ত্রাসের মুখ,আর প্রিয়ঙ্কা প্রতিবাদের মুখ।ভবানীপুরের মানুষ সন্ত্রাস কে সরিয়ে প্রতিবাদ কেই জয়ী করবেন।কারন প্রিয়ঙ্কা আইনজীবী হয়ে হাইকোর্টে এই হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিলেন।তাই দল তাঁকে যোগ্য ভেবেই এখানে লড়াই এ নামিয়েছে।
অবশ্য ইতিহাস বলছে 2015 সালের কলকাতা পুরসভার নির্বচনে কাউন্সিলর ভোটে এই প্রিয়ঙ্কা কেই পরাজিত করেছিলেন ঘাস ফুলের স্বর্ণ কমল সাহা।আজ সেই প্রিয়ঙ্কা মমতার মুখোমুখি ।
বিজেপি দল যাই বলুক,তৃনমূল দল মমতার বিরুদ্ধে এই প্রিয়ঙ্কা কে নম্বর দিতে নারাজ ।তাঁদের বক্তব্য যিনি পুরসভার ভোট জিততে পারেন না,তিনি হারাবেন মুখ্যমন্ত্রী কে।এতো স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়।আসলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই এ বিজেপির কেউ দাঁড়াতে নারাজ।তাই এই প্রিয়ঙ্কা ।
বিজেপি অবশ্য দাবি করছেন তৃনমূলের সুদিনে এই মমতা পরাজিত হয়েছেন।আর এখন ভোট পরবর্তী হিংসার কথা সবাই জানেন।তাই প্রতিবাদী প্রিয়ঙ্কা ই জয়ী হবেন।
ভবানীপুরের ভোটে কাটি তো পড়েই গেছে।ইতিমধ্যেই মমতা কর্মী বৈঠক সেরে নিয়েছেন।দলের হেভিওয়েটরা এখন মাঠ চষছেন।
বিজেপি প্রার্থী নির্বচন শেষ করলেও এখনো মাঠে সে ভাবে নামতে দেখা যাচ্ছে না।দিল্লি থেকে হেভিওয়েট কেউ যে আসবেন তাও অনিশ্চিত ।কারন করোনা পরিস্থিতিতে মিছিল মিটিং এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
যাইহোক অঙ্কের হিসাব বলছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে আশাবাদী তৃনমূল দল।কিন্তু অঙ্ক তো সব সময় মেলে না।
ভবানীপুরের জনগন ই জানেন আসল সত্য
তবে মমতা বনাম প্রিয়ঙ্কার লড়াই যত দিন যাবে তত দানা বাঁধবে।
আসলে লড়াই তো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপি দলের।
মুখ্যমন্ত্রী জিতলে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী ।তৃনমূল সরকার তো থাকছেই আগামী পাঁচ বছর।আর সেই দলের সুপ্রিমো তো মমতা ই।
মমতার জয় নিয়ে সংশয় নেই ঘাসফুল শিবিরে।আর বিজেপি শিবির প্রিয়ঙ্কা কে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন।