Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

খেলা চলছে-- সরগরম ভবানীপুর

✍️সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 'এ খেলা চলছে নিরন্তর' একবার খেলেছে জনগণ। বিপুল ভাবে ভোট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জনগণ আবার খেলবে ৩০শে সেপ্টে…

✍️সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 

'এ খেলা চলছে নিরন্তর' 

একবার খেলেছে জনগণ। বিপুল ভাবে ভোট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জনগণ আবার খেলবে ৩০শে সেপ্টেম্বর। উপলক্ষ দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। এই কেন্দ্রে প্রধান লড়াই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের। লড়াইয়ে রয়েছেন সিপিআইএম প্রার্থী তরুণ আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাস। কংগ্রেসের টিকিটে কোনো প্রার্থী এই নির্বাচনে দাঁড়াননি। মূল লড়াই মমতা ব্যানার্জি ও প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের মধ্যে। কিন্তু গণতন্ত্রের খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জিতবেন তার ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী কয়েকটি দিন। 


খেলা হবে, এই স্লোগানে হুইল চেয়ারে বসে রাজ্যে ঝড় তুলেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দুয়ারে সরকার শিবির করেছেন। স্বাস্থ্যসাথীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রকল্প এনেছেন। আর এতেই ভর করে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার হয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। অন্তত রাজনৈতিক পর্যবক্ষেকদের মত তেমনটাই। কয়েক দফায় অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে খেলেছে জনগণ। রায় দিয়েছে জোড়া ফুলের পক্ষে। রেকর্ড সংখ্যক ২১৩টি আসনে জিতেছে তৃণমূল। ৭৭টি আসন পেয়ে বিরোধী আসনে বিজেপি। কিন্তু সেই সময় পাখির চোখ করা বহু আলোচিত নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে তাঁর একসময়ের বহু আন্দোলনের একনিষ্ঠ সৈনিক শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হতে হয় মমতাকে। যদিও তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সাংবিধানিক নিয়মে ছয় মাসের মধ্যে তাঁকে জিতে আসতে হবে। নচেৎ মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে। মমতা বেছে নিয়েছেন তাঁর ঘরের কেন্দ্র ভবানীপুরকেই। এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন বর্তমান বিদ্যুতমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ছেড়ে দেওয়া আসনেই লড়বেন মমতা। রাজনৈতিক মহলের মত, এবারে জনপ্রিয়তার নিরিখে শীর্ষ স্থান অধিকার করা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প মমতার পালে যথেষ্ট হাওয়া যোগাবে। করোনা অতিমারিতে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে মানুষের হাতে নগদ টাকার যোগানে দৃশ্যত খুশি বড়ো অংশের মানুষ। নির্বাচনে  এটি যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে বিজেপি যুবমোর্চার নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল রাজনীতির ময়দানে আনকোরা নন। পুর নির্বাচনে লড়ার অভিজ্ঞতা তাঁর আছে। তাঁকে সামনে রেখে তাল ঠুকছে বিজেপি। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার চালাচ্ছে পদ্ম শিবির। পাশাপাশি মমতার হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন পরিবহণ মন্ত্রী তথা কলকাতা কর্পোরেশনের প্রশাসক মন্ডলির প্রধান ফিরহাদ হাকিম। জোড়াফুল শিবির অবশ্য প্রিয়াঙ্কাকে একেবারেই পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁদের দাবি, ভবানীপুরের মানুষ ঘরের মেয়ে মমতা ব্যানার্জিকেই বিপুল ভোটে জেতাবেন। 

প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল

গেরুয়া শিবির এখনো পর্যন্ত হেভিওয়েট কারোকে প্রচারে নামাতে পারেনি। সাম্প্রতিক সরষের তেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ক্রমশ বেড়ে চলেছে রান্নার গ্যাস, পেট্রল, ডিজেল। এই ইস্যুতে কিছুটা ব্যাকফুটে বিজেপি। যদিও প্রিয়াঙ্কা বা বিজেপির দলীয় নেতৃত্বের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে 'বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী'। গোটা ভবানীপুর চষে ফেলছেন প্রিয়াঙ্কা। পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসার ইস্যু, অন্যদিকে করোনা আবহে নির্বাচন, এই জোড়া ইস্যুতে মমতাকে বিঁধে চলেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে ভবানীপুরের অবাঙালি মহল্লার ভোটে কিছুটা ভাগ বসাবেন প্রিয়াঙ্কা বলে সূত্রের খবর। যদিও ভবানীপুরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, বঙ্গ বিজেপি এই কেন্দ্রে শেষ পর্যন্ত বাঙালি প্রার্থী জোটাতে অপারগ। তাই খেলা চলছে। বাঙালি অবাঙালি মেরুকরণের খেলা।


৩০ তারিখ খেলা হবে।ভবানীপুরে পদ্মফুল ফুটবে না জোড়া ফুল তার সাজানো বাগান ধরে রাখতে পারবে, উত্তর দেবে জনগণ। খেলবে তো আসলে তারাই। গণতন্ত্রের খেলায় শেষ কথা বলে সাধারণ মানুষ।